রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কশবামাজাইল ইউপি অশান্ত হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক সময়ে সুবর্ণকোলা গ্রামের রিয়াজ মন্ডল ও রথীন্দ্রনাথ মন্ডল পৃথক ঘটনায় পরস্পর প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হওয়ার পর এবারে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়েছেন কশবামাজাইল ইউপির ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার মিন্টু মন্ডল (৪৫)। মিন্টু মেম্বার শলুয়া গ্রামের মৃত তক্কেল মন্ডলের পুত্র।
জানা যায়, শনিবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় গড়াই নদীর নাদুরিয়া ঘাট বাজারে মিন্টু মন্ডলকে প্রতিপক্ষের লোকজন হাতুড়ি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। তার হাত ও পা সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা ফাটা ভাঙ্গা ও রক্তাক্ত জখম হয়েছে। ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা তাকে পাংশা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে ভর্তি করে। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় জরুরী বিভাগ থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, এর আগে গত ১৮ জুলাই সকালে গড়াই নদীর কেওয়াগ্রাম ঘাটে প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলায় গুরুতর আহত হয় রিয়াজ মন্ডল। রিয়াজ মন্ডল সুবর্ণকোলা গ্রামের মৃত আতাহার মন্ডলের পুত্র। গত ৪ আগস্ট সকালে সুবর্ণকোলা গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয় রথীন্দ্রনাথ মন্ডল। রথীন্দ্রনাথ মন্ডল সুবর্ণকোলা গ্রামের পল্লী চিকিৎসক রবীন্দ্রনাথ মন্ডলের পুত্র।
এছাড়া চলতি বছরের ২১ মে রাত আনুমানিক ১টার দিকে নাদুরিয়া গ্রামে বাদশা মন্ডলের বাড়ী সংলগ্ন খালী জায়গার উপর রক্ষিত জামান পরিবহনের বাস ভাংচুর ও বাদশা মন্ডলের বাড়ী লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা হাত বোমা নিক্ষেপ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। ৪ জুলাই শলুয়া গ্রামে মৃত আলীমুদ্দিন মন্ডলের পুত্র মোক্তার মন্ডল প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়। সর্বশেষ শনিবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ইউপি মেম্বার মিন্টু মন্ডল প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হয়। ঘটনার সময় মিন্টু মেম্বারের সাথে থাকা তার ভাতিজা আরিফ মন্ডলকেও মারধর করা হয়। আরিফ তার চাচা মিন্টু মেম্বারকে মোটর সাইকেলে নিয়ে নাদুরিয়া বাজার থেকে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হলে গতিরোধ করে তাদের উপর হামলা চালানো হয়।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে কশবামাজাইল ইউপিতে হামলা-ভাংচুর, হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ গোলযোগে সুবর্ণকোলা গ্রামের আসাদুল বারী খান (৪৫) নামের এক শিক্ষক নিহত এবং ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারী দুই পক্ষের সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর-লুটতরাজ ও শান্তিখোলা গ্রামের আমোদ আলী বিশ্বাসের ছেলে কলেজ ছাত্র ইলিয়াস হোসেন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা এছাড়া কশবামাজাইল ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সুবর্ণকোলা গ্রামের বাসিন্দা মশিউর রহমান পিল্টু জোয়ার্দ্দারসহ কয়েকজনের বাড়ীতে হামলা-ভাংচুর ও দীঘলহাট গ্রামের পল্লব দত্তের বাড়ীতে হামলা-অগ্নিসংযোগ উল্লেখযোগ্য।
স্থানীয়রা জানায়, কশবামাজাইল ইউপিতে সামাজিক দলাদলি আছে। পরস্পর নিজেদের দল ভারী করতে আধিপত্য বিস্তারে তারা তৎপর। আর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষ পরিস্থির শিকার হচ্ছে। ইউপি মেম্বার মিন্টুর উপর হামলার ঘটনায় স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা এলাকায় সংঘাত, হানাহানি পরিহার করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ সামাজিক নেতৃত্ব প্রদানকারী ব্যক্তিদের বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের গুরুত্বারোপ করেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha