আজকের তারিখ : জুলাই ১৩, ২০২৫, ৬:২২ পি.এম || প্রকাশকাল : জুলাই ২২, ২০২৩, ৭:৫২ পি.এম
মাগুরায় বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চের প্রকৌশলী শম্পা বসুর উদ্যোগে মাদাম কুরীর ৮৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

মাদাম কুরীর ৮৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ মাগুরা জেলা শাখার উদ্যোগে শনিবার ২২ জুলাই সকাল ১১টায় হাসপাতাল পাড়ায় অবস্থিত রেডিয়েন্ট স্কুল আলোচনা সভা ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চের কেন্দ্রীয় সদস্য প্রকৌশলী শম্পা বসুর সভাপতিত্বে আলোচনা করেন বালিদিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ভূপতি কুমার বিশ্বাস। সভা পরিচালনা করেন বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ মাগুরা জেলা শাখার সংগঠক গোলাম পারভেজ।
আলোচনাবৃন্দ বলেন, মাদাম কুরি ১৮৬৭ সালে পরাধীন পোল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তৎকলীন সময়ে পোল্যান্ডে একটি ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সেখানে মেয়েরা ভর্তি হতে পারতো না। মাদাম কুরী প্যারিসের সরবন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীতে বিজ্ঞান গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। তৎকলীন সময়ে নারীদের জন্য বিজ্ঞান চর্চা করাটা সহজ ছিল না। সেই যুগে মাদাম কুরী সকল সংস্কার ও বাধা অতিক্রম করে বিজ্ঞানের জগতে এগিয়ে গেছেন। আবিষ্কার করেছেন বেশ কয়েকটি তেজস্ক্রিয় মৌল। তেজস্ক্রিয়তা সম্পর্কে অনেক মৌলিক গবেষণা রয়েছে তাঁর।
তিনি পৃথিবীর একমাত্র বিজ্ঞানী যিনি বিজ্ঞানের দুটি শাখায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ১৯০৩ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে এবং ১৯১১ সালে রসায়নে। তিনি বিশ্ববিখ্যাত সরবন বিশ্ববিদ্যালয় তথা ফরাসি দেশের প্রথম মহিলা অধ্যাপক ছিলেন। কিন্তু এ সকল কিছু ছাপিয়ে তাঁর অসামান্য ব্যক্তিত্বই যেন সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়ে উঠে। বজ্রকঠিন ইচ্ছাশক্তি, কাজ সম্বন্ধে নিখুঁত অনুসন্ধানী মন আর ইস্পাত দৃঢ় বলিষ্ঠতা এই ছিল তাঁর বৈশিষ্ট্য। নিজের পথে এমনি করেই দ্বিধাহীন চিত্তে এগিয়ে গেছেন তিনি।
কেবলমাত্র নোবেল পুরস্কার পাওয়া বিজ্ঞানী হিসেবে নন, মানবকল্যাণে নিবেদিত প্রাণ, জ্ঞানের জন্য অপার তৃষ্ণা, গভীর দেশপ্রেম, উদারতা, সামাজিক দায়িত্ববোধ-এমন অনেক মানবিক গুণের অধিকারী ছিলেন তিনি। বিজ্ঞানী হয়ে, বড় মানুষ হয়ে কেউ জন্মায় না। একজন মানুষের সংগ্রামই তাকে বড় মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। মানবকল্যাণে উৎসর্গকৃত এক সাধকের জীবন ছিল যেন তাঁর। মানবসমাজের মঙ্গলের জন্য জীবনকে নিবেদন করার এই মনোভাব তাঁকে অন্যন্য সাধারণ একজন বিজ্ঞানীতে পরিণত করেছিল। তাই আর্থিক অসচ্ছলতা থাকলেও ‘রেডিয়াম’ কে পেটেন্ট করেননি। পেটেন্ট করলে কোটি কোটি টাকার মালিক হতে পারতেন। কিন্তু বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে কিছু মানুষের মুনাফা তৈরির হাতিয়ার করতে দিতে চাননি। বিজ্ঞান সবার জন্য--এই ছিল তাঁর মনোভাব। যত রেডিয়াম তিনি শোধন করেছিলেন বা উপহার পেয়েছিলেন তা সবই ল্যাবরেটরিতে দান করে গেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অনেক অসুস্থ অবস্থায় জীবনের পরোয়া না করে এক্স-রে মেশিন তৈরি করেছেন, মেশিন পরিচালনার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে সেবা পৌঁছে দিয়েছেন।
বাহুল্যকে সবসময় পরিহার করেছেন জীবনে। এমনকি খ্যাতির শিখরে উঠেও প্রচলিত প্রথাগত সম্মানকে গ্রহণ করেছেন ঔদাসিন্যের সঙ্গে আর সামাজিক দায়হীন ঐশ্বর্যের পথ তিনি সবসময় পরিহার করেছেন। এসবই খুব সহজ ছিল তাঁর কাছে কারণ মাদাম কুরীর প্রাণ ছিল অন্যন্য সুন্দর ঐশ্বর্যে ভরা। মাদাম কুরীর ৬৬ বছরের বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী জীবন এবং তাঁর গবেষণা এই ছোট্ট আলোচনা সভায় তুলে ধরা খুব কঠিন।
নারীদের সম্পর্কে সমাজের সংস্কার ভাঙ্গতে এবং মানবকল্যাণে নিবেদিত বড় মানুষ হওয়ার আকাক্ষা জাগাতে মাদাম কুরীর জীবন সংগ্রাম ও কাজ অনুপ্রেরণা তৈরি করবে বলে প্রত্যাশা করেন আলোচনা সভার আয়োজকরা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম
মুরসিদ (লিটু সিকদার)। মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর। মোবাইলঃ ০১৭১১ ৯৩৯৪৪৫
Copyright © August 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha