গোপালগঞ্জে প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে দুজন ঋণগ্রহীতা আইরিন খানম ও ফয়জুল ইসলাম গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে প্রতিকার চেয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্রের গোপালগঞ্জ শাখা হতে যথাযথ নিয়ম-কানুন মেনে সদস্য হন এবং গত ২৭ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে আইরিন খানম ও ১২ মে ২০১৩ তারিখে ফয়জুল ইসলাম দুইটি পাস বইয়ের মাধ্যমে ২ লক্ষ করে মোট ৪ লাখ টাকার লোন গ্ৰহন করেন। যা পরবর্তী মাস হতে কিস্তি হারে নিয়মিত ভাবে ১৩ হাজার ৯ শত টাকা পরিমানে জমা করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে প্রশিকার ম্যানেজার নিলামা হালদার ও ফিল্ড অফিসার অঞ্জলি চৌধুরী অডিটের কথা বলে কিস্তির বই অফিসে রেখে দেন। উক্ত বই অফিসে থাকা অবস্থায় আইরিন খানম ও ফয়জুল ইসলাম প্রতি মাসে প্রশিকা পাচুড়িয়া গোপালগঞ্জ অফিসে গিয়ে কিস্তির টাকা জমা করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে আয়রিন ও ফয়জুল কিস্তির বই ফেরত চাইলে তারা বিভিন্ন তাল বাহানা করতে থাকে এবং তারা বলে যে, আপনারা কিস্তির টাকা অফিসে দিয়ে যান, আমরা আপনার বইতে তুলে দিব। তাদের কথা মত অন্ধবিশ্বাসে আইরিন ও ফয়জুল নিয়মিত কিস্তির টাকা জমা করে আসছিলেন। কয়েক মাস পরে তারি বই ফেরত চাইলে এনজিও কর্মকর্তারা বই হারিয়ে যাওয়া কথা বলেন।
সম্প্রতি আইরিন খানম ও ফয়জুল ইসলামের নামে দুইটি নুতন বই ইসু করেন। যেখানে আইরিন খানমের বইতে ৮টি ও ফয়জুল ইসলামের বইয়ে ৪ টি কিস্তি পরিশোধ দেখানো হয়েছে। তাদের কাছে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে কৌশলে অফিস থেকে পুরনো বই দুটি উদ্ধার করেন তারা। এবং সে বই দুটিতে পর্যায়ক্রমে ১০টি ও ৬টি কিস্তি পরিশোধ দেখা যায়।
আইরিন খানম সাংবাদিকদের জানান, বাস্তবে তিনি ১২টি কিস্তি এবং তার স্বামী ফয়জুল ইসলাম ৮ কিস্তি পরিশোধ করেছেন। তিনি আরো বলেন, প্রশিকার তিন কর্মকর্তা বিভাগীয় ম্যানজার সুজিত কুণ্ডু, শাখা ব্যবস্থাপক নিলিমা হালদার ও অঞ্জলি চৌধুরী তাদের অপকর্ম, জালিয়াতি ও প্রতারণা হালাল করতে আমার দেয়া ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংকের গ্রান্টি চেক ডিজঅনার করিয়ে আমার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। ইতোমধ্যে আমাকে একটি লিগাল নোটিশ দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঋণগ্রহীতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে প্রশিকা এনজিওর ঐ তিন কর্মকর্তা দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করে ভয়-ভীতি দেখিয়ে বাড়তি টাকা আদায় করে আসছে। ফাঁকা চেক, স্টাম্প ও অন্যান্য ডকুমেন্টস তাদের কাছে জমা থাকায় সাহস করে প্রকাশ্যে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। তবে তারা এই প্রতারণা কারি প্রতিষ্ঠানের দিকে নজর দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ অভিযোগের বিষয়ে প্রশিকার বিভাগীয় ম্যানজার সুজিত কুন্ডুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি টাকাও আত্মসাৎ করার সুযোগ নেই। কোন গ্রাহকের অভিযোগ থাকলে বই নিয়ে আমাদের কাছে আসুক, আমরা দেখে ব্যবস্থা নিব। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অভিযোগ হয়েছে হোক, আমাদের ডাকলে আমরা জবাব দিব।
শাখা ব্যবস্থাপক নিলিমা হালদার গ্ৰহকের কিস্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পাস বই দুটি না দেখে কোন মন্তব্য করবো না।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha