গত সোমবার দুপুরে ভাঙচুর করা বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন আনোয়ারা খাতুন। সেখানে লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, ১১ বছর আগে সংসারে সচ্ছলতা ফেরাতে বিদেশে পাড়ি জমান আনোয়ারা খাতুন। সেখান থেকে বাবার নামে টাকা পাঠাতেন তিনি। সেই টাকা দিয়ে তার ফুপাতো ভাই একই গ্রামের সোহরাব শাহ’র ছেলে মহরম হোসেনের কাছ থেকে জমি কিনতে তাকে দেয়া হয় ৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। কিন্তু ওই সময় জমি রেজিষ্ট্রি করে দেননি মহরম। দেশে ফিরে টাকার হিসেব ও জমির কাগজপত্র চাইলে ক্ষিপ্ত হয় মহরম গং।
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিতে গেলে তৎকালীন ওসি সেখ নাসীর উদ্দিন মামলা না নিয়ে থানা থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ আনোয়ারার। পরবর্তীতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। মহরম গংয়ের হুমকী ধামকিতে প্রায় দেড় বছর ধরে নিজের বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছেন। এর মধ্যে মহরমের ছোট ভাই ঝন্টু শাহ মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আনোয়ারা খাতুনকে। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে যখন ন্যায় বিচার পাচ্ছিলেন না, তখন তিনি পাবনা পুলিশ সুপারকে জানান এবং ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন।
আনোয়ারা খাতুনকে অভিযোগ, এখনও মহরম গংয়ের কাছে তিনি সাড়ে ৪ শতক জমি পাবেন। এজন্য ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা দেয়া আছে মহরমকে। কিন্তু তিনি সে জমি রেজিষ্ট্রি করে দিবেনা মর্মে জানিয়ে নানাভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে চলেছেন। এছাড়া তার বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ক্ষতিপূরণ দাবি করেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, তাকে মেরে পঙ্গু করে দিয়েছে তারা। জানের নিরাপত্তা নাই। স্থানীয় ইউপি সদস্য ইয়াসিন আলী, চৌকিদার ইউনুস আলীর সাথে সখ্যতা রয়েছে মহরম গংয়ের। মামলা তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে। যেকারণে বাকি জমি লিখে না দিয়ে তালবাহানা করছে। এলাকার মানুষের সহযোগিতা চাইলে মহরম গংয়ের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসে না। মহরম নাকি আনোয়ারাকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলবে এমন কথা বলেছে ইউনুস চৌকিদার।
সংবাদ সম্মেলনের সময় উপস্থিত আনুকটিয়া গ্রামের সোবাহান আলী সহ কয়েকজনের কাছে জানতে চাইলে তারা আনোয়ারা বেগমের অভিযোগ সত্য বলে জানান। মহরম গং প্রভাবশালী হওয়ায় দাপট দেখাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আনোয়ারা খাতুনের মেয়ে রিতা খাতুন। এ সময় আনোয়ারা স্বামী আবু তালেব উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে এএসআই বাবুল আকতার বলেন, আমি আনোয়ারা খাতুনকে কোনো হয়রানী করিনি। বরং চেষ্টা তদবির করে মহরম গংকে চাপ দিয়ে জমি রেজিষ্ট্রি করিয়ে দিয়েছি। আমার কাছে সাড়ে ৭ শতক জমির অভিযোগ ছিল। সেটি নিষ্পত্তি করে দেয়া হয়েছে। এর বাইরে কোনো অভিযোগ আমার কাছে ছিল না।
মথুরাপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ইয়াসিন আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই ঘটনা আমরা চেয়ারম্যান ও এএসআই বাবুল আকতারের সাথে বসে শালিসের মাধ্যমে মিমাংসা করে দিয়েছি। তারপর এখন নতুন করে আনোয়ারা যে জমির কথা বলছে সেটার বিষয়ে আমরা কিছু জানা নাই।
অভিযুক্ত মহরম হোসেন বলেন, অভিযোগ মিথ্যা। পুলিশ প্রশাসন, চেয়ারম্যান, মেম্বার উপস্থিত থেকে তার জমি যেটা পেতো সেটা আমার খরচে তাকে রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছি। সে আমার কাছে আর কোনো জমি বা টাকা পাবে না। এখন যেসব অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে করছে, একটিও সঠিক নয়। তার মনগড়া কথা বলছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha