আর মাত্র কয়েক দিন পর মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ। এই কুরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে গরু পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ভেড়ামারার গরু খামারিরা।
অনলাইন ও স্থানীয় বাজারে কুরবানির পশুর দাম যাচাই করছেন ক্রেতারা। খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে গরুর দাম বেড়েছে এমনটাই জানিয়েছেন ভেড়ামারার গরু খামারিরা।
ভেড়ামারায় এ বছর কুরবানির জন্য সেরা গরু ১৫ মণের ওজনের ‘পাগলা’। তিন বছর যাবত বাড়ির পৌষা ভালো জাতের ফিজিয়ান গরু লালন পালন করছেন কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চর দামুকদিয়া গ্রামের গরু খামারি সেলিম প্রমানিক। পিতা মৃত, এলাহী বক্স (সাবেক মেম্বার)।
সেলিমের গরুটি সাদা-কালো রঙের। দেখতে অনেক সুন্দর। দৈর্ঘ্য ১১ফুট, উচ্চতা প্রায় সোয়া ৫ ফুট। ওজন ১৫মণ। গোশত হবে ৬শ’ কেজি প্রায়। আকর্ষণীয় এই ”পাগলা”ষাঁড় টি দেখতে প্রতিদিন দর্শনার্থী ও ক্রেতারা সেলিমের বাড়িতে ভীড় করছে।
একটু বেশি মুনাফার আশায় সারা বছর পরিশ্রম করে অতি যত্নে পশু লালন-পালন করছেন প্রান্তিক খামারি সেলিম। তার গরুটি সর্বোচ্চ দামে বিক্রি করতে শেষ বেলায় ব্যস্ত দিন কাটাচ্ছেন তিনি।
ভেড়ামারা চর দামুকদিয়া গ্রামের গরুর মালিক সেলিম প্রমানিক।কিন্তু বেশীর ভাগ গরুটি দেখা শোনা করেন তার স্ত্রী বিনা খাতুন। বিনা বলেন, শখ করে নাম রেখেছি ‘পাগলা’। মাত্র ২৭দিনের ’পাগলা’বাচ্চা রেখে তার মা আমার বাড়িতেই মারা যায়।তার মাও ছিলো অনেক বড়। ২৭দিনের শিশু সন্তানকে অনেক কষ্ট করে বড় করেছি। সব সময় সন্তানের মতো দেখি। ৩ বছর ধরে প্রতিপালন করে আজ সে হাতির মত দেহের অধীকারি। ভাবতে অবাক হয় এতো লম্ব,এতো উচো এখন ১৫ মণ ওজন হবে পাগলার।
কৃষক সেলিম বলেন, আমিসহ আমার এলাকার প্রান্তিক চাষিরা একটা কুরবানির ঈদের পর আরেকটা কুরবানির ঈদ আসা পর্যন্ত গবাদি পশুগুলোকে পরম মমতায় লালন পালন করে বিক্রি যোগ্য করে তুলি। পশুটি সন্তানের মতো লালন-পালন করে থাকি। প্রতিদিন দুই বেলা শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করানো হয়। শুধু কাচাঘাস, খুদ, ভুট্টার ভুসি আটা,খৈল,বিছিলি ’পাগলার’ প্রিয় খাদ্য। ভলেও কখন ও ফিড খাওযানো হয়নি। তাই দেশী খাবার খেয়ে অনেক ভালো এবং গরমে টিকে আছে তার সুন্দর চেহারা। সে পানি ছাড়াই প্রতিদিন প্রায় ৫০/৬০ কেজি খাবার খায় পাগলা। বর্তমানে তার প্রতিদিন খাওয়া খরচ ৫শ’টাকা। এছাড়াও রাতের বেলা ফ্যানের নিচে রাজকীয় ভাবে থাকে পাগলা।
বিনা খাতুন জানায়, সন্তান যেমন দূরে চলে গেলে কষ্ট হয়, তেমনি পালিত পশুটি বিক্রি করতে তাদের বুকের কোণে ব্যথা হয়। তারপরও সংসারের সচ্ছলতার জন্য বিক্রি করতে হয়। এবারে কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে তার ”পাগলা” দাম হাকিয়েছেন ৪লাখ টাকা। ইতোমধ্যে পাইকাররা এসে ৩ লাখ টাকা দামও করছেন। তবে এই দামে এখনি বিক্রি করতে নারাজ। তাই অপেক্ষায় আছেন আরো ভালো দামে পাগলাকে বিক্রির আশায় ধরে রেখেছেন। মস্ত বড় গরুটি হাটে নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টকর। কারোর সামর্থ্য ও দয়াবানদের আহবান জানিয়েছেন তার ০১৭৯১০৫৯৩১৯ নন্বরে যোগাযোগ করে পাগলা নামের ষাঁড়টি তার বাড়ি থেকে ক্রয় করে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
ইউপি সাবেক মেম্বর ইউসুব আলী বলেন, এবার গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে। যেমন ভুসি, খুদ, চাল ও ভুট্টার দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি। যে কারণে কৃষকরা গবাদিপশু পালনে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ভেড়ামারা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো: আব্দুর রউফ সরকার বলেন, কৃষক সেলিম প্রমানিকের এই বড় ষাঁড় গরুটি উপজেলার মধ্যে অন্যতম। তার পরিশ্রমকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তাকে অনুসরণ করে যারা পশু পালনে আগ্রহী হচ্ছে তাদেরকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।এবছর উপজেলায় সর্বমোট কোরবানির জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার ৯৮২ টি পশু।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম
মুরসিদ (লিটু সিকদার)। মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর। মোবাইলঃ ০১৭১১ ৯৩৯৪৪৫