সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সবজি হিসেবে কচুর চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার চরাঞ্চলে। দুর্যোগ সহনীয় এবং অন্যান্য সবজির চেয়ে তুলনামূলক লাভজনক হওয়ায় মধুমতি ও গোপালপুর বাওড়ের পাড়ের কৃষকরা কচু চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। আলফাডাঙ্গার বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রতিদিনই সবজি হিসেবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ কচু, কচুর লতি ও ডাঁটাসহ পাতা বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের টিটা, নন্দ্রিগ্রাম, কুমুরতিয়া ও টিটা পানাইল গ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছিল মধুমতি নদী। নদীটি এখন বাওড়ে পরিণত হয়েছে।
গোপালপুর গ্রামের এক অংশের ওপর দিয়ে মধুমতি নদী ছিল সেখানেও বাওড়ে পরিণত হয়েছে। এসব বাওড়ের দুই পাশের চরাঞ্চলে পড়ে থাকা পতিত জমিতে হচ্ছে কচু চাষ। চরাঞ্চলের চাষ করা কৃষকদের কচুর চাহিদা বেশি। এখানে জমির পলিযুক্ত দোআঁশ মাটিতে কচুর আবাদ ভালো হয়ে থাকে। মাটির গুনাগুন ভালো থাকায় সার, কৃটনাশক কম ব্যবহার হয়। এ জন্য কৃষকদে লাভ বেশি হয়। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে কচুর চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাওড়ের পাড়ের কৃষকরা নিচু জমিতে সাদা কচুর আবাদ করছেন।
মধুমতী বাওড়ের পাশে নন্দ্রীগ্রামের কৃষক খোকন শেখ বলেন, এ বছর ৬০ শতাংশ জমিতে কচুর চাষ করেছি। সর্বমোট আমার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। প্রায় পাঁচ হাজার পিচ কচু ক্ষেতে বড় হয়েছে। ক্ষেত থেকে বেপারীরা প্রতি পিচ ৫০ টাকা করে নিয়ে যায়। রমজান মাস থেকে কচুর লতি বিক্রি করছি। অর্ধ লক্ষ টাকার বেশি কচুর লতি বিক্রি করেছি। আবহওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর ৬০ শতাংশ জমি থেকে কচু চাষ করে দেড় লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছি।
গোপালপুর গ্রামের কৃষক আশরাফ খান বলেন, ১১ শতাংশ জমি ১১ শত টাকা দিয়ে লিজ নিয়ে কচু চাষ করতে গিয়ে ১২ হাজাট টাকার খরচ হয়েছে। ক্ষেতে প্রায় এক হাজার কচু হয়েছে অধিকাংশ কচু বিক্রি করে দিয়েছি। প্রতি পিচ কচু ক্ষেত থেকে বেপারীরা ৩৫-৪০ টাকা করে কিনে নিয়েছে। এ বছর কচু ক্ষেত থেকে ২২-২৫ হাজার টাকা লাভ হবে।
আলফাডাঙ্গা সদর বাজারের সবজি বিক্রেতা সবজু মিয়া বলেন, সপ্তাহে দুই দিন আলফাডাঙ্গা হাট বসে। নন্দীগ্রাম ও গোপালপুর গ্রাম থেকে কচু ক্রয় করে হাটের দিনে বিক্রি করি। প্রতি পিচ কচু গড়ে ৩৫-৫০ টাকা দিয়ে ক্রয় করে ৫০-৮০ টাকা বিক্রি করছি।
আলফাডাঙ্গায় বাজার করতে এসে বড় সাইজের একটি কচু ৮০ টাকা দিয়ে ক্রয় করে মাহাতাব উদ্দিন বলেন, বাজারে অন্য সবজির তুলনায় কচুর দাম কম। পরিবারের সবাই কচু খেতে পছন্দ করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার সাহা বলেন, মধুমতি চরাঞ্চলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কচুর চাহিদার পাশাপাশি আবাদি জমির পরিমাণও বেড়েছে। কম পরিশ্রমেই চাষ করা যায় এই সজবি। তাই মধুমতি চরাঞ্চলের কৃষক কচু চাষে ঝুঁকছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha