কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ধরমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য রহিদুল ইসলাম বুদুসহ ২জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার (২ জুন) সন্ধ্যার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাতবাড়িয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে।
আহতরা হলেন, ধরমপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও সাতবাড়িয়া গ্রামের মৃত রহমত প্রামানিকের ছেলে রহিদুল ইসলাম বুদু (৫২)এবং একই এলাকার কামাল আলীর ছেলে সুলতান আলী (৩৯)।আহতরা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঘটনার পর থেকে অত্র এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছি।
এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতা শরিফুজ্জামান নবাব বলেন, ধরমপুর ইউনিয়নের স্থানীয় আওয়ামী লীগের অপর একটি গ্রুপ এই হামলা চালায়।তিনি বলেন বহুবছর আগে থেকে সাতবাড়িয়া আঞ্চলিক আওয়ামী লীগের অফিসে স্থানীয় নেতাকর্মীরা বসেন।
যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও ভেড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিউল ইসলাম কুব্বাতের হাতে গড়া সেই অফিসে ১৯৯১ সালে শেখ হাসিনা এসেছিলেন। সেই অফিস ভাংচুর করা হয়েছে। এ সময় অফিসে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিও ছিঁড়ে ফেলা হয়। এ নিয়ে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তিনি প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে একটি পারিবারিক গানের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বেশ কয়েকজন মাতলামি করে ।
এরপর তারা একটি মাইক্রো গাড়িও ভাংচুর করে। এ সময় স্থানীয়রা তাদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেন। এক পর্যায়ে তারা সেখান থেকে চলেও যায়। পরে শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আওয়ামীলীগের এক নেতার নেতৃত্বে জিদানসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগের অফিসে অতর্কিতভাবে হামলা করে। এতে অফিসে থাকা ধরমপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রহিদুল ইসলাম বুদু ও আওয়ামী লীগের কর্মী সুলতান আলী গুরুতর আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী চা বিক্রেতা খাকসার আলী বলেন, আমি চা বিক্রি করছিলাম। সন্ধ্যার দিকে ৮ থেকে ১০টি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়। নেতাকর্মীদের তারা মারপিট ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। তারপর পুনরায় তারা আওয়ামী লীগের অফিসে ঢুকে পুলিশের উপস্থিতিতে বোমা মারে, শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে ও অফিসের চেয়ার-টেবিলসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। এ সময় তারা আমার চা দোকানে হামলা করে কেটলি, গ্যাসের চুলা, চেয়ার, টেবিল রামদা দিয়ে কেটে ফেলেছে এবং ভাঙচুর করেছে।
এই ঘটনায় ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিজ বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে একটি গানের অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগের দুপক্ষের ঝামেলা হয়। এতে রাজু নামের এক যুবককে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইউপি সদস্য ও স্থানীয়দের ওপর হামলা করে আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর করা হয়। কে বা কারা তাদের উপর হামলা ও অফিস ভাংচুর করেছে তা আমি জানি না। এ ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বলেন, ধরমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাবুল আলম লালু ও তার লোকজন আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগের অফিস ভাংচুর ও হামলার ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। কাউকে আটক করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম
মুরসিদ, মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।