যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একজন সফল অর্থনৈতিক নেতা হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, ‘আপনি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা।’
সুনাক বলেন, ‘আমি আপনাকে অনেক বছর ধরে অনুসরণ করছি। আপনি একজন সফল অর্থনৈতিক নেতা।’
স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটের দ্বিপক্ষীয় সভাকক্ষে তাঁদের প্রথম দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সুনাককে উদ্ধৃত করে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম এ কথা বলেন।
তাসনিম বলেন, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাঁর দুই মেয়ে ও স্ত্রী তাঁর (শেখ হাসিনা) বড় ভক্ত। তিনি গত অক্টোবরে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তাঁর মেয়েরা শেখ হাসিনার মতো মহান নেতা হবেন—এই কামনা করেছেন।
সুনাক বলেন, ‘আপনি আমার দুই মেয়ের জন্য মহান অনুপ্রেরণা।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয়, ভূমিহীন ও গৃহহীন বাংলাদেশের জনগণকে সরকারি খরচে বাড়ি দেওয়া, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে তাঁর গৌরবময় ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
করোনাভাইরাস মহামারিপরবর্তী সময়ে ৬ শতাংশের বেশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার কথা উল্লেখ করে সুনাক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
৩৫ মিনিট স্থায়ী বৈঠকে দুই নেতা উভয় দেশের পারস্পরিক সুবিধাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
‘৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের চমৎকার সম্পর্ক বিদ্যমান’—এ কথা উল্লেখ করে সুনাক বলেন, যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্য দেয়।
বৈঠকের শুরুতে শেখ হাসিনা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় ঋষি সুনাককে অভিনন্দন জানান। শেখ হাসিনা বলেন, ‘এশীয় ঐতিহ্য থেকে আপনি এত অল্প বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন; এমন তরুণ নেতৃত্ব দেখে আমার ভালো লাগছে।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ইতিমধ্যে সাত লাখ পরিবারকে বাড়ি দিয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ব্রিটিশ কোম্পানিগুলোর কাছে আরও বড় বিনিয়োগ চেয়েছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নত করেছি।’ তিনি ঢাকা ও লন্ডনের মধ্যে একটি যৌথ ইশতেহার সই করায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুই নেতা রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়েও কথা বলেন।
সুনাক বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেছেন। সুনাক বলেন, যুক্তরাজ্য বুঝতে পেরেছে, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা।
শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন দেওয়ায় যুক্তরাজ্যকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গারা আমাদের জন্য বড় বোঝা এবং বড় নিরাপত্তা হুমকি।’
রোহিঙ্গাদের দুর্দশা দেখতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানালে সুনাক ইতিবাচক সাড়া দেন।
লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ১৩০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানেরা লন্ডনে পৌঁছেছেন।
দুই প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বাংলাদেশের হাইকমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ তাঁদের মধ্যে মাত্র সাতজনের সঙ্গে সুনাকের বৈঠক হয়েছে, যা প্রমাণ করে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধন কৌশলগত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
ব্রিফিংয়ের সময় প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার এম নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha