চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের রহনপুর পৌর এলাকার প্রায় ১ কিলোমিটার অংশজুড়ে সড়কে ইদানীং অসহনীয় যানজটে নাকাল হচ্ছে পৌরবাসী। যানজটে মানুষের দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না। সীমাহীন যানজটে পৌর শহরের মানুষ এখন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সরু রাস্তায় ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান ও ইজিবাইকগুলোর নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাচল করছে। বিশেষ করে শহরের কলেজ মোড়, কলোনি মোড়, মুক্তাশা সিনামা হল মোড়, তেতুল মোড় ও খোয়াড় মোড় এলাকায় প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীকে।
ইজিবাইক ও অটো ভ্যানগাড়ীর নগরে পরিণত হয়েছে রহনপুর পৌর এলাকা। ছোট একটি শহরে ইজিবাইকের সংখ্যা এতটাই বেশি যে পথচারীদের চলাচল দায় হয়ে পড়েছে। এছাড়া ইজিবাইকগুলো যেখানে-সেখানে ইচ্ছামতো দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। তীব্র যানজটের কবলে প্রতিনিয়ত অসহনীয় দুর্ভোগে পড়ছে পৌরবাসী।
সোনামসজিদ স্থল বন্দর হয়ে আঞ্চলিক মহা সড়কটি রহনপুর পৌর এলাকার মধ্যে দিয়ে সাপাহার হয়ে বিভিন্ন রুটে সংযোগ হওয়ায় এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিনই সোনামসজিদ স্থল বন্দর থেকে বিভিন্ন পণ্য নিয়ে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক এই রুট দিয়ে যাতয়াত করে । যানজটের প্রধান আরেক কারণ হচ্ছে এই পন্যবাহী ট্রাক। ফলে সারাদিন যানজট লেগেই থাকে। কোনো বাইপাস সড়ক না থাকায় পৌর এলাকার মধ্যে দিয়ে যাওয়া একটিমাত্র সরু সড়ক তাতে চলছে ইজিবাইক, বাস, ট্রাকসহ হাজারো যানবাহন।
রহনপুর শিল্প ও বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি সৈয়দ ফারুক হোসেন জানান, আমাদের পৌর এলাকা থেকে ১০/১২ কিলোমিটার অদূরে বৃহত্তম সোনাচন্ডি গরুর হাট এই সড়ক দিয়ে বুধবার হাটবারে ২/৩ শ
গরুবাহী গাড়ী চলাচল করে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী শিবগঞ্জ উপজেলা থেকে ধান কাটা মৌসুমে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার ধানকাটা শ্রমিক গাড়ী যোগে পার্শ্ববর্তী উপজেলা নিয়ামতপুর, পোরষাসহ বিভিন্ন উপজেলায় ধান কাটতে যাওয়া আসা করে। এছাড়াও কলেজ মোড় ও খোয়ার মোড়ের সামনের সড়ক ইজিবাইকের অঘোষিত স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া এই সড়কের পথিমধ্যে রহনপুর তহশীল অফিসের সামনের কালভেট থেকে তেতুল মোড় পর্যন্ত প্রায় ১৫০ মিটার সড়কটি এক্কেবারেই সরু একটি গাড়ী গেলে দ্বিতীয় কোন গাড়ী চলাচল করতে পারে না এই সড়কের যানজটের প্রধান কারণ এটি। তাছাড়া রাস্তায় ইজিবাইক স্ট্যান্ড, গাড়ী পাকিং তো রয়েছেই। এই সড়কটি যানজট নিরসনে সড়কটি প্রশস্ত করণ ও বিকল্প কোন বাইপাস তৈরী করার দাবী জানান।
ট্রাক ড্রাইভার হাবিবুর রহমান হাবু বলেন, আমি ৩/৪ বছর ধরে এই সড়ক দিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে চলা ফেরা করি এই সড়কে প্রতিনিয়ত যানজটে পড়ি । কিন্তু উপায় নেই কারণ সোনামসজিদ থেকে পণ্য নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে রাজশাহী হয়ে বগুড়া যেতে আমার ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার সড়ক বেশী হয় এই রুট দিয়ে গেলে সড়ক কম হয় এবং সময়ও কম লাগে। ফলে যানজট হলেও এখান দিয়েই চলাচল করি। তিনি আরো বলেন রাস্তাটি প্রশস্ত হলে আমারদের যাতায়াতের সময় আর যানজটে আটকাতে হবে না।
এ বিষয়ে গোমস্তাপুর ফায়ার সার্ভিসের লিডার মোঃ রাকিব উদ্দিন জানান, এই সড়কটি আঞ্চলিক মহা সড়ক হওয়ায় এই সড়কে সড়ক দূর্ঘটনা সবচেয়ে বেশী হচ্ছে , আমরা ফায়ারে গেলে বা প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনায় আহত রোগী উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যাওয়ার সময় প্রতিনিয়ত যানজটে পরি। কিন্তু খোয়াড় মোড় হয়ে তেতুল মোড় অতিক্রম করে যেতে যানজটের কারণে আমাদের প্রতিনিয়ত বেগ পেতে হয়, যার কারণ রাস্তাটি সরু হওয়ায় যানজট লেগেই থাকে। তিনি আরো জানান, রাস্তাটি প্রশস্ত করা হলে আমরা নির্বিঘ্নে ফায়ারিং এ যেতে পারবো এবং দূর্ঘটনা জনিত আহত রোগী নিয়ে দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পৌছাতে পারবো।
রহনপুর পৌর মেয়র মোঃ মতিউর রহমান জানান, এই রাস্তাটি নিয়ে আমরা খুব আতংকিত, আমি চলাচল করতে গিয়ে নিজেও দেখি যে তীব্র যানজট। সড়কটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের এবং এটি প্রশস্ত করণে ব্যয়বহুল খরচ। তা না হলে পৌর সভার পক্ষ থেকে চেষ্টা করতাম। তবে এ নিয়ে সড়ক ও জনপদের সাথে আমার কয়েক দফায় কথা হয়েছে ।জাতীয় সংসদ সদস্যকেউ আমি অবহতি করেছি তিনি সড়ক ও জনপদ বিভাগকে সুপারিশ করেছেন , আমরা সকলেই চেষ্টা করছি কলোনি মোড় ব্রিজ থেকে খোয়াড় মোড় পর্যন্ত ২৪ ফিট আরসিসি রাস্তা করার জন্য। এখন যে কার্পেটিং রাস্তাটি আছে আপনারা দেখবেন এক দুই মাস গেলে আবার নষ্ট হয়ে যায়।
রাস্তা ভালো থাকলে হয়তো যানজট কম হয়, রাস্তা খারাপ থাকলে যানজট বেশি হয় কারন এমনিতেই সরু রাস্তা। ২৪ ফিট আরসিসি রাস্তার একটি প্রকল্প করেছে সড়ক জনপদ বিভগ। আমি গত কয়েকদিন আগেও খোজ নিয়েছি। সড়ক ও জনপদ বিভাগ সাড়ে ১৪ কোটি টাকার একটি প্রকল্প তারা অনুমোদনে পাঠিয়েছে এটি অনুমোদন পেলে টেন্ডার হতে পারে। আর রাস্তায় উপরেই গাড়ি পার্কিং করে অনেকেই দেখি ইজিবাইক, ভুটভুটি, ও সিএজি স্ট্যন্ড করে রেখেছে । আমি গত কয়েকদিন আগে কলেজ মোড়ে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম কিছুটাও হলেও পাকিং কমেছে। তবে পৌর এলাকার কয়েকটি স্থানে ইজিবাইক স্ট্যান্ড তৈরী পরিকল্পনা করেছি । আশা করি অল্প কিছু দিনের মধ্যে অন্যত্রে স্ট্যান্ডগুলো করতে সক্ষম হবো।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha