‘শাশুড়ির রেখে যাওয়া দুই শতাংশ বসতভিটা ছাড়া আর কোনো জমি নেই। পরের বাড়ি কাজ করে যা উপার্জন করি, তা দিয়ে কোনো রকমে চলছে সংসার। জিনিসপত্রের যে দাম, তাতে তিনবেলা ভাত খেয়ে প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর। পরের বাড়ির খাবার খেয়ে রোজা আছি। মসজিদ থেকে আসে ইফতারি।’ কথাগুলো বলেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের ধলাইয়ের চর গ্রামের মৃত ইকা তালুকদারের স্ত্রী সাজেদা বেগম।
প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে সাজেদা বেগমের সংসার। পাঁচ বছর আগে ভ্যান চালক স্বামী ইকা তালুকদার ক্যান্সারে আক্তান্ত হয়ে মারা যায়। বড় মেয়ে রহিমার বিবাহ হয়ে গেছে। মেঝ মেয়ে শিখা ছিল প্রতিবন্ধী, পানিতে তলিয়ে ১০ বছর বয়সে মারা গিয়েছে। সেঝ মেয়ে ঢাকায় পরের বাসায় কাজ করে। ১২ বছর বয়সী ছোট মেয়ে প্রতিবন্ধী নিলাকে নিয়ে থাকেন ভাঙা ঘরে।
সাজেদা বেগম বলেন, মেঝ মেয়েটি পানিতে পড়ে মারা যাওয়ার পর ছোট মেয়েটিকে নিয়ে অনেক ভয় হয় যদি পানিতে পড়ে মারা যায়। এজন্য তাকে বেধে রেখে কাজে যেতে হয়। অনেক কষ্টে কাঁচা ধরে থাকতে হচ্ছে। টিনের বেড়া নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টি আসলেই পানি পড়ে। একটি ঘর পাবার আশায় মেম্বারের কাছে কাগজ দিয়েছি। ঘর দিবে বলেছে এখন কোনো ঘর পাচ্ছি না। এখন ঝড়ের দিন যে কোনো সময় ঘর খানা ভেঙে যেতে পারে। গত চার মাস কোনো গোস্ত খেতে পারিনা মেয়েটা ভালো কিছু খেতে চায় টাকার অভাবে কিনতে পারিনা। পাশের বাড়ি থেকে আসা তরকারি দিয়ে সেহরী খেয়েছি। রোজার মাসে মসজিদ খেতে ইফতার দিয়ে যায় সেটা দিয়ে ইফতার করি।প্রতিবন্ধী মেয়েটি ভাতা পাচ্ছেন বলে জানান।
প্রবিবেশী কানন মোল্যা বলেন, সাজেদা বেগম খুব কষ্টে জীবন যাপন করছে। মাঝে মধ্যে আমাদের বাড়ি থেকে কিছু দিয়ে আসি। এখন ঝড়ের সময় যে কোনো সময় ঘর খানা ভেঙে যেতে পারে তাইনিরাপদে থাকার জন্য একটি ঘরের বিশেষ দরকার। আশা করি উপজেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে সমাজের বৃত্তবানেরা তার পাশে থাকবে।
|
স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক মোল্যা বলেন, সাজেদা বেগমকে একটি ঘর দেওয়ার জন্য কাজগপত্র নিয়ে তখন চেয়ারম্যানকে দিয়েছি। তখন কোনো ঘর পাইনি। গত ডিসেম্বরে নির্বাচনের পর নতুন চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে এখন অবগত করিনি। নতুন চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে তাকে ঘর দেওয়ার জন্য অনুরোধ করবো।
আলফাডাঙ্গা সদর ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন বুলবুল বলেন, সাজেদা বেগমকে ব্যক্তিগতও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে। একটি ঘর দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে কথা বলা হবে।
ইউএনও রফিকুল হক বলেন, সাজেদা বেগমকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে। সে যে ঘরের দাবি করছে এই মুহুত্বে সে ঘরের বরাদ্দ নেই। বরাদ্দ আসলেই তাকে ঘর দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম
মুরসিদ, মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।