টাকা পরিশোধ করার পরও জমি লিখে দিচ্ছে না। আজ কাল করে ১৯ বছর ধরে ঘোরাচ্ছে। এখন প্রায়ই নানা রকম ভয়ভীতিসহ উচ্ছেদের হুমকি দিচ্ছে।’ এমন অভিযোগ করেছেন মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের পূর্বনারায়ণপুর গ্রামের মৃত: বীরমুক্তিযোদ্ধা আজগর কাজীর স্ত্রী রুপবানি বেগম। এ বিষয়ে তিনি প্রতিকার চেয়ে মাগুরা জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
অভিযোগ মতে, ১৯ বছর আগে উপজেলা সদরের ৭৫ নং পূর্বনারায়ণপুর মৌজার অন্তর্গত ১৮১ নং খতিয়ানভূক্ত ৫৪৮ নং দাগের ৬ শতাংস জমি ক্রয়ের জন্য পার্শ্ববর্তী মহম্মদপুর গ্রামের রুহোল আমীনকে নগদ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। এরপর জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে বললে রুহোল আমীন বলেন নামজারি করতে হবে। নামজারির জন্য আরও ৫ হাজার টাকা নেন তিনি। এরপর থেকে আজ কাল করে জমি রেজিস্ট্রি করে দেয় নি। সম্প্রতি তার ২ ছেলে শামীম ও আনোয়ার হোসেন শাহীন নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং উচ্ছেদের হুমকিও দিচ্ছে। এ অবস্থায় পরিবারটি নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন অভিযোগপত্রে দাবি করেছেন।
আজ বুধবার সকালে সরজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে জানাগেছে, বীরমুক্তিযোদ্ধা আজগর কাজীর দ্বিতীয় স্ত্রী রুপবানি বেগম ২ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে জরাজীর্ণ ঘরে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করেন। বাড়ি থেকে বেরোনোর রাস্তা পর্যন্ত নেই। ক্ষেতের আইল দিয়ে মাঠের ভেতর দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। দরিদ্র পরিবারটি জমি রেজিস্ট্রি করে নেওয়ার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ফল না পেয়ে মাগুরা জেলা প্রশাসক, মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার ভূমি বরাবর সহায়তার জন্য দরখাস্ত করেছেন।
রুপবানি বেগমের প্রতিবেশি ধলা মিয়ার স্ত্রী ছবেদা বেগম জানান, ‘১৯ বছর আগে জমি কিনার জন্য আমি নিজি সাতে থায়ে রুহোলরে টাহা দিছি।’ একই এলাকার মনির উদ্দিন মোল্যার ছেলে হাবিবুর রহমান জানান, ‘গরু বিক্রি করে রুহোলকে টাকা দেওয়ার ঘটনা সত্যি। তবে এখন জমি রেজিস্ট্রি করে দিচ্ছে না।’
রুপবানি বেগম বলেন, ‘এই ৬ শতক জমির কেনার জন্য ১৯ বছর আগে আমার শেষ সম্বল ৮টি গরু বিক্রি করে রুহোলকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত রুহোল আমীন বলেন, আমি রুপবানির কাছে কখনো জমি বিক্রি করিনি এবং জমি বিক্রয় বাবদ কখনো কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। তবে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে খবর পেয়েছি। আমাকে ডাকলে আমি গিয়ে আমার কথা বলে আসবো। আনোয়ার হোসেন শাহীন জমি বিক্রি ও টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, যে জমিটিা বিক্রি করা হয়েছিল সেটা আমার মায়ের নামের। তখন মা রুপবানি বেগমের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু টাকার পরিমানটা আমার জানা নেই। তবে জমির বর্তমান বাজার মুল্য দিলে মা হয়ত জমিটা তাদের রেজিট্রি করে দেবেন।
|
তিনি আরো বলেন, জ্জ দিনের মধ্যে এর একটা সমাধান করা হবে। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই মিয়া বলেন, মরহুম বীরমুক্তিযোদ্ধা আজগর আলীর স্ত্রী গতকাল আমার বাসায় এসেছিলেন। তার সব কথা আমি শুনেছি। ৭ মার্চ নির্বাহী অফিসার দুইপক্ষকে সমাধানের জন্য ডেকেছেন। সমাধান হলে ভাল। নইলে আমরা বিষয়টি নিয়ে সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত নেব।
সহকারি কমিশনার ভূমি বাসুদেব কুমার মালো বলেন, অভিযোগ পেয়ে দুই পক্ষকে নোটিশ করেছি। উভয়পক্ষ এবং সাক্ষিদের কথা শুনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল বলেন, কিছুদিন আগে অভিযোগ পেয়ে দুইপক্ষকে ডেকে সমাধানের চেষ্টা করেছি সম্ভব হয়নি। ডিসি স্যারের নির্দেশে নতুন করে সমাধানের জন্য দুইপক্ষকে আবারও নোটিশ করেছি। মাগুরা জেলা প্রশাসক আবু নাসের বেগ বলেন, অভিযোগ পেয়ে সহকারি কমিশনার ভূমি ও ইউএনও কে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha