প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিলে দেশের উন্নয়ন হয়। হাওরের মানুষও সব সময় নৌকায় ভোট দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় হাওরেরও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।’ এ সময় তিনি হাওরের বোরো ফসল সংরক্ষণে আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিলে দেশের উন্নয়ন হয়। হাওরের মানুষও সব সময় নৌকায় ভোট দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় হাওরেরও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।’ এ সময় তিনি হাওরের বোরো ফসল সংরক্ষণে আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন।
হাওরে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিবরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী মিঠামইন থেকে উড়ালসেতু নির্মাণের প্রস্তাবনা একনেকে পাস হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এখন থেকে হাওরে আমরা উড়ালসেতু করব এ জন্য যে ফসলি জমি এতে নষ্ট হবে না।’ তিনি শ্রমিক সংকটের সময়ে ছাত্রলীগসহ দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা কৃষকের ধান কেটে দিয়েছেন—এ কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘বর্গাচাষিরা আগে ঋণ পেতেন না। বিনা জামানতে এখন কৃষকরা ঋণ পান, ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। হাওরাঞ্চল বরাবরই অবহেলিত। আগে রাস্তাঘাট ছিল না। ছিল শুধু পানি আর পানি। এ অবস্থা থেকে গত ১৪ বছরে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। অবহেলিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে আমরা কাজ করে চলেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌকায় ভোট দিলে ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। বিএনপি-জামায়াত যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই মানুষের দুর্ভোগ হয়েছে। আপনারা নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের সেবা করার সুযোগ করে দিয়েছেন বলেই কিশোরগঞ্জ এত উন্নত হয়েছে।’
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তাঁর বক্তব্যে হাওরের অল ওয়েদার রোডকে ইউরোপের রাস্তার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘মানুষের মন ভালো হলে বিএনপির মন খারাপ হয়। কী জ্বালা বিএনপির! হাওরের এই আধুনিক রাস্তা যেন ইউরোপের রাস্তা। এ জ্বালায় ফখরুল জ্বলেন, বিএনপি জ্বলে। কী অন্তর্জ্বালা!’
[caption id="attachment_34429" align="alignnone" width="1200"] -কিশোরগঞ্জের হাওরবেষ্টিত উপজেলা মিঠামইন সদরের কামালপুরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পৈতৃক বাড়িতে পৌঁছলে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।[/caption]
বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ সেনানিবাস উদ্বোধন : গতকাল সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী হেলিকপ্টার সেনানিবাসে অবতরণ করে। এরপর সেনাবাহিনীর কুচকাওয়াজ হয়। সেখানে তিনি সালাম গ্রহণ করেন। এরপর সেনানিবাসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সেনানিবাস হাওরবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রশাসনের পাশে থেকে সহযোগিতা করবে।’ এ সময় তাঁর সঙ্গে আরো ছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রমুখ।
সুধী সমাবেশ রূপ নির্বাচনী জনসভায় : সুধী সমাবেশটি এক পর্যায়ে নির্বাচনী সমাবেশে রূপ নেয়। হাওরের তিন উপজেলা ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রামসহ কিশোরগঞ্জের সব উপজেলা থেকে লক্ষাধিক জনতা সড়কপথে ও ট্রলারে মিঠামইনের সমাবেশস্থলে আসে। এ সময় দলীয় নেতাকর্মীরা শুধু ‘বাইয়া দে নৌকা’—এ স্লোগানে মুখরিত করে তোলে। মিছিলে আগতদের হাতে হাতে শোভা পায় প্রধানমন্ত্রীর ছবি। এ ছাড়া বিভিন্ন জনপ্রতিনিধির নাম-ছবিসংবলিত টি-শার্ট, গেঞ্জি ও ক্যাপ পরে গতকাল সকাল থেকেই লোকজন মিঠামইন আসতে থাকে। কয়েক হাজার নারীও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। অল ওয়েদার রোড ধরে অষ্টগ্রাম থেকে প্রায় ১৭টি বাসে করে হাওরের দক্ষিণাঞ্চলের লোকজনকে সমাবেশে আনা হয়।
সমাবেশস্থলে ঠাঁই হয়নি দুই-তৃতীয়াংশ লোকের : সকাল ৯টা থেকেই হাওরের নানা প্রান্ত থেকে ট্রলার, সড়কযানসহ নানা বাহনে প্রধানমন্ত্রীকে একনজর দেখার জন্য লোকজন আসতে থাকে। দুপুর ১২টা নাগাদ মিঠামইন সদরে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। সমাবেশ শুরুর দেড়-দুই ঘণ্টা আগেই সমাবেশ মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়।
‘চটা পিঠা ছেড়ে পিত্জা খাচ্ছে হাওরের মানুষ : প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ছেলে, কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সরকারদলীয় এমপি প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক বলেন, ‘গত ১০ থেকে ১২ বছরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাওরের অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছেন। ইট-পাথর কথা বলতে পারলে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নাম জপত। হাওরে ফাস্টফুডের দোকান হওয়ায় মানুষ এখন চটা পিঠা ছেড়ে পিত্জা খাচ্ছে।’
আরো যাঁরা বক্তব্য দিলেন : অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, কিশোরগঞ্জ-১ (কিশোরগঞ্জ-হোসেনপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও প্রয়াত জননেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বোন ডা. জাকিয়া নূর লিপি, কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনের সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেন, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ, কিশোরগঞ্জের সংরক্ষিত আসনের এমপি জাকিয়া পারভীন মণি, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া, কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী মো. জিল্লুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম এ আফজল প্রমুখ।
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন হেলিপ্যাড মাঠে গতকাল আওয়ামী লীগ আয়োজিত সুধী সমাবেশে মানুষের ঢল।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha