এক সময় হাজার হাজার শ্রমিকের পদচারণায় মুখরিত ছিল ইউনাইটেড জুট মিল, মেঘনা জুট মিল ও চাঁদপুর জুট মিল নিয়ে গঠিত ইউএমসি জুট মিল। প্রায় ৫২ একর জমির উপর গড়ে ওঠা নরসিংদীর এই জুট মিলটি বন্ধ হয়ে আছে ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে। বর্তমানে এখানে কাজ করছেন প্রায় ৭০ জন সরকারি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা রক্ষী। বিশাল এই জায়গায় পতিত জমি রয়েছে প্রচুর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও উৎসাহে সম্প্রতি এখানকার পতিত জমিতে শুরু হয়েছে নানা ধরনের চাষাবাদ। কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নিরাপত্তা রক্ষীরা নিজ উদ্যোগে এসব চাষাবাদে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই নির্দেশনার আলোকেই ইউএমসি জুট মিলের প্রায় আট বিঘা জায়গার উপরে চাষাবাদ করা হয়েছে। খুব শিগগিরই আরও দুই-তিন বিঘা পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনা হবে। এসব জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে গরুর খামার, আম বাগান। সঙ্গে রয়েছে ভুট্টা, টমেটো, সূর্যমুখী ও নানা ধরনের শাকসবজি।
ইউএমসি জুট মিলের জিএম মতিউর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায়ই তার বক্তব্যে পতিত জমিগুলোতে আবাদ করার নির্দেশনা দিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। আমাদের এখানে অনেক জমি পতিত রয়েছে। সম্প্রতি দেখেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনেও বিশাল আকারে কৃষি খামার গড়ে তুলেছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যক্রম দেখে উৎসাহিত হয়েছি। এরই আলোকে এখানে পতিত জমিগুলোতে নানা ধরনের চাষাবাদ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। পাশাপাশি আরও পতিত জমি বের করার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, এখানে আবাদ হওয়া ফসল, শাকসবজি নিজেদের মধ্যেই সুলভমূল্যে বিক্রি করা হয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের উদ্যোগে গতকাল ইউএমসি জুট মিলে পতিত জমিতে চাষাবাদের বিষয়টি সরজমিন দেখাতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি আমের গাছ, শাক-সবজির ক্ষেত, গরুর খামার, ভুট্টা, টমেটো, সূর্যমুখীর ব্যাপক উৎপাদন।
এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মতো আমরা সবাইকে এ ব্যাপারে উৎসাহিত করতে চাই। আবাদযোগ্য জমি অযথা ফেলে না রেখে প্রত্যেকেরই উচিত কোনো না কোনো কিছু চাষাবাদ করা। এতে আমাদের নিজেদের খাদ্য চাহিদার অনেকটাই মিটবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পাটকলগুলোর মধ্যে ইউএমসি’র নাম তালিকার উপরের দিকেই। ৫২.২৯ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত মিলটি স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জাতীয়করণের আগে মূলত তিনটি আলাদা আলাদা পাটকল হিসেবে যথাক্রমে ইউনাইটেড জুট মিল (১৯৬২ সালে), মেঘনা জুট মিল (১৯৬৬ সালে) ও চাঁদপুর জুট মিল (১৯৬৭ সালে) স্থাপিত হয়। পাটকলগুলো এখন সময়ের ক্ষত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার সুবর্ণ অতীতের স্মৃতি-বিস্মৃতির ভর কাঁধে নিয়ে।
নরসিংদীর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. বিন সাদিক জানান, জেলায় ৮০ হেক্টর জমি পতিত অবস্থায় ছিল। এরইমধ্যে ৫০ হেক্টর জমি চাষাবাদের আওতায় আনা হয়েছে। পতিত জমি আবাদের চিত্র পাওয়া গেল নরসিংদী পুলিশ লাইন্সেও। সরজমিন দেখা যায়, পতিত জমি ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে গরু, ছাগল ও হাঁসের খামার। পাশাপাশি বেশ কয়েক ধরনের কৃষিজাত পণ্যের চাষাবাদ করা হয়েছে। নরসিংদী পুলিশ প্রশাসন জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুলিশ লাইন্সের ফাঁকা জায়গাগুলোতে চাষাবাদ করা হয়েছে। এতে আমাদের নিজেদের চাহিদার কিছুটা হলেও মেটানো সম্ভব হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম
মুরসিদ, মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।