ফরিদপুরে এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ এনে ভাঙ্গা উপজেলা সদরের এক নারী (৩৩) নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতে অভিযোগ দিয়েছেন।
সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে নির্দেশ দিয়েছেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার নাম মো. সজল মাহমুদ (৪০)। তিনি ভাঙ্গা থানায় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবী মানিক মজুমদার বলেন, আদালত অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহণের জন্য ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)কে নির্দেশ দিয়েছেন।
ফরিদপুর ব্লাস্টের সমন্বয়কারী শিপ্রা গোস্বামী বলেন, এ মামলাটি ব্লাস্ট পরিচালনা করবে।
লিখিত অভিযোগে ওই নারী জানান, তিনি অবিবাহিত। তারা দুই বোন ও এক ভাই। মা ও বাবা মারা গেছেন। ২০০৬ সালে তারা দুই বোন জীবিকার তাগিদে সৌদি আরব যান। ওই সময় তার ছোট ভাই কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরে তিনি দেশে এসে স্থায়ীভাবে বাড়িতে বসবাস করে আসছি। গত ২০ অক্টোবর বাড়িতে চুরি হলে থানায় জানাই। গত ২৪ অক্টোবর এএসআই মো. সজল রাতে বাড়িতে ঢুকে বিভিন্ন কথাবার্তা বলার ছলে তার সাথে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করে। এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে খুন ও গুম করার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে তাকে বিয়ে করার লোভ দেখিয়ে তাকে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্ক করে এক পর্যায়ে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। পরে তাকে বিয়ের লোভ দেখিয়ে ৩০ জানুয়ারি ভাঙ্গা বাজারে নিয়ে একটি মেডিকেল সেন্টারে রেখে পালিয়ে যান।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ৩১ জানুয়ারি তিনি এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানায় গিয়ে ওসিকে সব খুলে বলেন। ওসি মুঠোফোনের সজলকে ডেকে আনেন। তখন সজল তাকে পুলিশ কোয়াটারে নিয়ে গিয়ে কিছু কাগজপত্র ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। তিনি স্বাক্ষর করার পর সজল বলে ‘তুমি আমাকে বিয়ে করেছ এবং তালাক দিয়েছ’। গত ১ ফেব্রুয়ারি তাকে মারপিট করে থানা থেকে বের করে দেয়।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম করে জানতে পারেন তিনি তিন মাসের অন্তসত্ত্বা। তিনি বাড়ি এসে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভাঙ্গা মামলা করতে গেলে থানা মামলাটি গ্রহণ না করে আদালতে করার পরামর্শ দেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে এএসআই সজল মাহমুদ বলেন, ওই নারীর সাথে তার বিয়ে হয়েছে, তার কাছে কাবিননামাও আছে। তিনি বলেন, তার আগের স্ত্রী আছে। বড় স্ত্রীর সম্মতিতে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন।
তিনি বলেন, ওই নারীকে তিনি তালাক দেননি। তিনি এখন আমার স্ত্রী।
বিস্ময় প্রকাশ করে সজল মাহমুদ বলেন, এ ব্যাপারে ওই নারী আদালতে ধর্ষণের অভিযোগে কেন মামলা দিলেন- তা তিনি ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না।
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) মো. হেলালউদ্দিন ভুইয়া এই প্রসঙ্গে বলেন, প্রশাসনিক কারণে এএসআই সজলকে গত ১০ দিন আগে ফরিদপুর পুলিশ লাইনস এ বদলি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা তারা এখনও পাননি। তবে শুনেছেন এই জাতীয় একটি মামলা হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha