নড়াইলে বিজয় টিভির সাংবাদিক জিয়াউর রহমান জামীর বিরুদ্ধে নড়াইলের সদও আমলী আদালতে খুন গুমের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন শহরের কুড়িগ্রামের স্বপ্না বেগম। আজ বেলা ১১টায় ধারাঃ ৩৬৪/৩৪/১০৯ পেনাল কোডে স্বপ্না বেগম এ মামলা আদালতে দায়ের করেছেন। আদালত নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতার উপর তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে আদেশ জারী করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের এ্যাডভোকেট উত্তম কুমার ঘোষ।

মামলার বাদী স্বপ্না বেগম জানান, নড়াইল পৌরসভার আলাদত গ্রামের সাংবাদিক মোঃ জিয়াউর রহমান জামী আমাদের পূর্ব পরিচিত এবং ভালো সম্পর্কের কারনে আমাদের বাড়িতে আসা যাওয়া করতো। এ কারনে জামী সাংবাদিক আমাকে প্রলোভন দেখায় আমার ছেলেকে ১৫০০ টাকা বেতনে তার বন্ধুর ঢাকা মিরপুরের বাসায় কাজ দিবে। আমার সংসারের আর্থিক স্বচ্ছলতার কথা বিবেচনা করে ছেলেকে ঢাকার মিরপুরে কাজ করাতে সম্মত হলে ২৮/০২/২০২২ ইং তারিখে বিকাল ৫ টার সময় জামী ও তার সাথে থাকা আরো ২জন মিলে নিয়ে যায়। পরবর্তিতে জামী তার মোবাইল দিয়ে আমার ছেলের সাথে কয়েকবার কথা বলিয়ে দেয় এবং বেতনের ১৫০০/-টাকা পৌছে দেয়।

তৎপরবর্তি মাসে আমার ছেলের বেতনের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। তখন আমার ছেলেকে এনে দিতে এবং ফোনে কথা বলিয়ে দিতে বললে আজ এনে দিচ্ছি কাল এনে দিচ্ছি বলে ঘুরাতে থাকে।

মামলার বাদী স্বপ্না বেগম আরো জানান, গত ৬/০১/২০২৩ ইং তারিখ সকাল ১০টার সময়ে জামি সাংবাদিককে তার বাড়িতে পেয়ে আমার ছেলেকে ফেরত চাইলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ মিথ্যা মামলার ভয় দেখিয়ে তাড়িয়া দেয়। সে অহংকার করে বলে আমি জিয়াউর রহমান জামী সাংবাদিক তোরা মাদকের ব্যাবসা করিস বলে পেপারে দিয়ে দিব। আমার বিশ্বাস জামি ও তার বন্ধুরা মিলে যোগ সাজসে আমার সন্তানকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে খুন করে গুম করেছে। আমি আজ আদালতে মামলা করেছি এর বিচার চাই।

বাদী স্বপ্না বেগমের স্বামী মোঃ আসাদ মোল্যা জানান, মামলা করার কারনে জামী আমাকে নানাবিধ গালিগালাজ করে ব্যাবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয়।

মোঃ আসাদ মোল্যা আরো জানান, সাংবাদিক জামী অত্যন্ত শাক্তিশালী দাঙ্গাবাজ সন্ত্রাসী,পরসম্পদলোভী,লাঠিয়াল,গুন্ডা,খুন জখমকারী ও অত্যাচারকারী। সমাজে অন্যায় অত্যাচার ও নানাবিধ অপরাধমুলক কার্য্যকলাপে সে জড়িত। অন্যের সম্পদ,জমি দখল তার নেশা ও পেশা। সাংবাদিকের সাইনবোর্ড নিয়ে সে বিভিন্ন অন্যায় কাজ করে বেড়ায়। যে কারনে বিভিন্ন লোকের কাছে মাইর ও খেয়েছে। কয়েক বছর আগে রেজিষ্ট্রি অফিসে চাদা দাবি কওে আনতে গেলে অফিসের লোকজন ধওে বেধে মারপিট কওে রক্তাক্ত করে। সে ঘটনায় মামলা ও হয়েছিল। জামী সাংবাদিকের

সরকারী টিআর ও এমপি মহোদয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন টিআর ও অন্যান্য অনুদান নিয়ে মেরে খাওয়া নিত্য দিনের অভ্যাস। সে সাংবাদিকের অফিস সরকারী জায়গায় রাস্তার পাশে নিয়ে অবৈধ বিদ্যুতের লাইন নিয়েছিল।

আরও পড়ুনঃ পাবনায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

গত ০৪.১২.২০২২ ইং তারিখ দুপুর ১২ টার সময় আমাদের ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান দখলের উদ্দেশ্যে হাতে রামদা, লোহার রড, বাশের লাঠি ইত্যাদি অস্ত্র সহকারে আমাদের ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ভীতর প্রবেশ করে সিমেন্টের পিলার,চুলা,স্লাব নেওয়ার জন্য ভ্যানে তুলতে থাকে আমি নিষেধ করলে আমাকে খুন করতে আসে। আমি দৌড়ে ঘরের ভীতর যেয়ে প্রানে বেচে যাই। আমার ঘরের দরজা ভাঙ্গার চেষ্টা করে গালিগালাজ করে।তার চিৎকারে স্থানীয়রা চলে আসলে আমাকে শাষিয়ে যায় যেখানে পাবে সেখানে খুন করবে, আমার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে ফেলবে জোর করে দখল করবে। এজন্য গুন্ডাবাহিনী ভাড়া করবে। ভয়ে আমি সাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে পারছিনা,দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে পারছিনা। আমি প্রানে বাচতে আদালতে মামলা করেছি। কিন্ত সে সাংবাদিক হওয়ায় পুলিশ মামলার প্রতিবেদন দিতে সময় ক্ষেপন করছে।

এসব বিষয়ে বিজয় টিভির সাংবাদিক মোঃ জিয়াউর রহমান জামী বলেন, আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেন, আইন সবার জন্য সমান। সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আমাদের থানায় যদি কোন অভিযোগ আসে তার সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।