স্বল্পসুদে ঋণ বিতরণের প্রলোভন দেখিয়ে মিষ্টি কথার আড়ালে ফাঁদ পেতে হাতিয়ে নিয়েছে লাখ লাখ টাকা। যমুনা ফাউন্ডেশন নামের একটি এনজিওর কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিষ্ঠানটির কোন অফিস বা কর্মকর্তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না দাবি ভূক্তভোগীদের। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কয়েক শত গ্রাহকের কাছ থেকে জনপ্রতি পাঁচ হাজার থেকে শুরু করে ৪৪ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছেন। তাদের দেওয়া হয়নি কোন কাজগপত্র।
এ ঘটনায় ভূক্তভোগীদের পক্ষে উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নে জয়দেবপুর গ্রামের মো: চুন্নু ফকির শুক্রবারে ওহিদুল মোল্যা ও আবু সাঈদ মোল্যাসহ অজ্ঞাত ৭ জনের বিরুদ্ধে আলফাডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, অভিযুক্তরা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে অসহায় দরিদ্র পরিবার চিহিৃত করে যমুনা ফাউন্ডেশন এনজিও পরিচয় দিয়েস্বল্পসুদে ঋণ দেওয়া হবে। উপজেলার পাঁচুড়িয়া ইউনিয়নের ধুলজুড়ি গ্রামে ওহিদুল মোল্যার বাড়িতে একটি অফিস রয়েছে। ঋণ বিতরনের প্রলোভনে প্রলোভিত করতে থাকে। নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে সদস্য হলে এনজিও থেকে স্বল্পসুদে এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হবে।
ভূক্তভোগীরা গত ২৫ নভেম্বর ওহিদুল মোল্যার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে ১৮ জন মিলে পাঁচ হাজার থেকে শুরু করে ৪৪ হাজার টাকা পরিশোধ করে সদস্য হন। ওই দিন দুই লাখ ৩৭ হাজার টাকা প্রদান করেন। তাদের ৩০ নভেম্বর দুপুরে ঋণের টাকা দেওয়া হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়। ঋণ বিতরণের দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের পাওয়া যাইনি।
এ ঘটনায় তাদের পক্ষ থেকে চুন্নু ফকির থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। সরেজমিন গিয়ে যমুনা ফাউন্ডেশন নামের কোন এনজিও খুঁজে পাওয়া যাইনি। ওহিদুল মোল্যার ছেলে ওবাইদুর মোল্যা জানান, কয়েক দিন আগে চার জন যুবক যশোর জেলার দড়াটানা উপজেলায় বাসিন্দাপরিচয় দিয়ে এনজিও অফিস করবে বলে আমাদের বাড়ি ভাড়া নিতে চায়।
আমরা অগ্রীম পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেছি তারা সেই দাবি মেনে নিয়ে ৩০ নভেম্বর সে টাকা দিবে বলে আশস্ত করেন। তার আগেই ওরা কিছু মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে রাতের আধারে লাপাত্তা হয়ে যায়।আমাদের বাড়িতে যমুনা ফাউন্ডেশন নামের কোন এনজিওর সাইনবোর্ড ছিলনা। যাহারা এসব প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে তাদের নামে অভিযোগ না দিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে। টাকা প্রদান করার সময় আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি। আমরা এই ঋণ দেওয়ার কোন কাজের সাথে জড়িত না।
ধুলজুড়ি গ্রামের ফাতেমা বেগম জানান, যমুনা ফাউন্ডেশন নামে এনজিও কর্মকতা সেজে বাড়িতে এসে বলে এক লাখ টাকা লোন দিবে সেই টাকা দুই বছর ধরে পরিশোধ করতে হবে। তার বিনিময়ে ১০ হাজার টাকা দিয়ে সদস্য হতে হবে। ধুলজুড়ি গ্রামে ওহিদুল ফকিরের বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিস করা হয়েছে বলে জানান। আমি তাদের স্বরল বিশ্বাসে টাকা দিয়েছি। পরে জানতে পারলাম তারা আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে। সুনেছি আমাদের গ্রামসহ উপজেলার অনেকের সাথে এমন প্রতারণা করেছে।
বেড়িরহাট বাজারের ডেকোরেটর ব্যবসায়ী মাসুদ জানান, এনজিও কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দোকান থেকে চেয়ার ও টেবিল ২১ শত টাকা দিয়ে ভাড়া করে ১০০ টাকা পরিশোধ করে বাকি টাকা পরে দিবে বলে জানান। ভাড়া না দিয়ে চেয়ার, টেবিল রেখে পালিয়ে যায়। ধুলজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নান শেখ জানান, ভূক্তভোগীদের অনেকেই বারণ করেছি অগ্রীম টাকা না দিতে। এরা অধিক লাভের আশায় প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছে।
আলফাডাঙ্গা সমাজসেবা কর্মকর্তা বজলুর রশীদ জানান, যমুনা ফাউন্ডেশন নামের কোনো প্রতিষ্ঠান আলফাডাঙ্গা উপজেলায় সমাজসেবার তালিকাভূক্ত কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। ওসি মো: আবু তাহের জানান, ঘটনার সাথে জড়িত প্রতারকদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha