পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে ,গত ২৭ নভেম্বর সোমবার বিকেলে এক সাথে আছরের নামাজ পড়ে দুই বন্ধু অর্পন ও নিলয়। দুজনের বাড়ি মহারাজপুর গ্রামে এবং একই ক্লাসে নবম শ্রেণীতে পড়ে। বন্ধু ইবনে আরাফাত নিলয়ের কথা মতে ঐদিন বাদ আছর দুইবন্ধু বাই সাইকেল যোগে জ্যামিতি বক্স কিনতে যায় গোলাপ নগর বাজারে। কিনে বাড়ি ফিরার পথে দুই বন্ধু স্পীড খাই। পথেমধ্যে স্পীড খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পরে বন্ধু নিলয়।
অসুস্থ্যবোধ অবস্থায় দুইজনই নিলয়ের বাড়িতে পৌছায়। পরে বাই সাইকেল যোগে বন্ধু অর্পন বাড়ি ফিরে যাওয়ার পথে মধ্যে রুবেলের বাড়ির সামনে অর্পন পৌছালে পিছন থেকে একটি মটর সাইকেল যোগে এসে বন্ধু পরিচয় দিয়ে বলে প্রাইভেট শিক্ষক সুরুজ স্যার ডেকে পাঠিয়েছে চল। তার কথা মতে অর্পন যেতে থাকে। জি এম গেট পার হয়ে গেলে তখন বলে এই আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছি। স্যারের বাড়ি তো পার হয়ে গেলাম। তখন মুখবাধা বন্ধু সেজে সন্ত্রাসীরা বলে চুপ শালা কথা বলবি না শেষ করে ফেলবো ।
এ কথা বলার পর তারা আরো জোরে মোটর সাইকেল চালিয়ে তাকে নিয়ে যায়। পরে তাকে একটি ঘরের মধ্যে নিয়ে গিয়ে আটকিয়ে চরম মারধোর করে। অজ্ঞন করে পরে সন্ত্রাসীরা বাড়ি থেকে ৭/৮ কিলো মিটার দুরে ভেড়ামারা শহর মুখে রাতে ফারাকপুর গোরস্থানের সামনে নিয়ে গিয়ে রেল লাইনের মধ্যে হাত-পা বেধে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। তখন রাত আনুমানিক নয়টা সাড়ে নয়টা বাজে বলে অর্পন জানায়।
সালমান আহম্মেদ অর্পন রাতে বাড়ি ফিরতে দেরী হলে বন্ধু নিলয়ের বাড়িতে যায়। তারা বলে অর্পন চলে গেছে। তখন মা- বাবা হতভম্ব হয়ে পরে। তখন নানা ষড়যন্ত্রের বাসা বাধে। মায়ের বুক ফাটা কান্না দেখে তার আত্মিয় স্বজনরা সম্ভব জায়গায় অনেক খোঁজা খুজি শুরু করে কোথায় ও পায় না অর্পন কে।
রাতে চক ভেড়ামারা গ্রামের বাসিন্দা জনৈক এক ব্যক্তি ২৭ নভেম্বর রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার সময় ফোন করে বিস্তারিত জানায় অর্পনের মাকে।
সে বলে আমার বাড়ির সামনে প্রতিদিনের ন্যায় রেল লাইনের মধ্যে গিয়ে বসে আছি। হঠাৎ করে পাস থেকে এক জনের গুংরানো আওয়াজ কানে শুনতে পাই। প্রথমে আমি ভয় পেয়ে যায়। পরে শুনা যায় আমাকে বাঁচা ও। তার ভাষ্যমতে আমি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পরি এবং খুজতে থাকি এক পর্যায় দেখতে পাই। রেল লাইনের মধ্যে এক যুবক উপর হয়ে শুয়ে আছে। তার হাত পা বাধা । আমি না আসলে হয়তো বা ট্রেন আসলেই সে কেটে মারা যেতো ধারণা।
রেলের মধ্যে পরে থাকা ব্যক্তিকে উল্টায়ে দেখি আমার অপরিচিত। বাড়ি কোথায় বলতে পারে না। পানি পানি বলে তার নাকে কথা। তখন তাকে ধরে পাশেই ফারাকপুর গোরস্থানের মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। সেখানে হুজুররা তাকে নানা সেবা যত্ন শুরু করে দেয়। একটু সুস্থ্য হলে তার দেওয়া মায়ের নন্বরে ফোন করে সংবাদ দেওয়া হয়। পরে তার আত্মিয়স্বজনরা এসে বাড়িতে নিয়ে যায়।
অর্পনের মা চন্দনা খাতুন জানায়, রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার সময় একটি মোবাইল নন্বর থেকে একটি ফোন আসে। সেই নন্বর থেকে বলা হয় আপনার ছেলে অসুস্থ্য অবস্থায় ভেড়ামারা ফারাকপুর গোরস্থানের মাদ্রাসায় আছে। সে পানি খেতে চেয়ে অসুস্থ্য হয়ে যায়। আপনারা এসে নিয়ে যান। এই খবর পেয়ে অর্পনের বাবা মিলন,সাঈদ দ্রুত গিয়ে ছেলে কে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসে।
অর্পনের বাবা মিলন জানায়,অর্পনের দুই পায়ের দাপনাতে ও বুকে পিঠে একাধীক মারের চিহ্ন এবং সে অসুস্থ্য হয়ে পরলে পরে তাকে রাত আনুমানিক সাড়ে দশটার সময় ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করা হয়। এব্যাপারে ভেড়ামারা থানা পুলিশ কে জানানো হয়েছে। ছেলে সুস্থ্য হলে থানায় মামলা করা হবে।