নড়াইলের কালিয়া উপজেলার খাশিয়াল ইউনিয়নের পাটনা গ্রামের যুবতী নিকাহ নামা চাওয়ায় নানা ধরনের তালবাহানা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে ওই ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, চলতি বছর ৭ মে পাটনা গ্রামের সালাম খানের যুবতী মেয়ে দিনা বেগমের সাথে ওই ইউনিয়নের চোরখালি গ্রামের মতিন খানের ছেলে সোহেল খানের সাথে মতিন খানের বাড়িতে নিকাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা আসাদুজ্জামান উপস্থিত থেকে নিকাহ রেজিষ্ট্রেশন করে। ওই নিকাহ রেজিস্ট্রার মওলানা আসাদুজ্জামানের নিকট ভুক্তভোগী যুবতী কয়েকবার নিকাহ নামার নকল বা রশিদ চেয়েছেন, কিন্তু নিকাহ রেজিস্ট্রার আজ পর্যন্ত ওই যুবতীকেনিকাহ নামার নকল বা রশিদ দেন নাই। তাছাড়া ওই যুবতীকে হুমকি ধামকি প্রদান করেন।
ভুক্তভোগি যুবতীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, চোরখালি গ্রামের সোহেল খানের সাথে আমার শরিয়া ও রাষ্ট্রীয় আইন মোতাবেক বিবাহ সম্পাদন হয়েছে এবং নিকাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা আসাদুজ্জামান উপস্থিত থেকে নিকাহের সকল কার্যক্রম সম্পাদন করে ছিলেন।
বিবাহের ২১দিন পর আমার স্বামীর বাড়ির লোকজন আমাকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। সে থেকে নিকাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা আসাদুজ্জামানের নিকট নিকাহ নামার নকল বা রশিদ চাইলে তিনি আমাকে নানাভাবে হয়রানি করেন এবং আমাকে নিকাহ নামার নকল বা রশিদ না দিয়ে উল্টো হুমকি ধামকি দেন। যুবতী আরো বলেন আমি বিশেষ সুত্রে জানতে পারলাম নিকাহ ভলিউম থেকে নাকি আমার নিকাহ নামাটি ছিড়ে ফেলেছেন মাওলানা আসাদুজ্জামান।
আমার কাবিননামা না থাকায় স্বামীর বাড়িতে উঠতে পারছিনা। নিকাহ নামা তো আমার বিবাহের দলিল। নিকাহ নামা না থাকায় আমি কোন আইনের আশ্রয় নিতে পারছিনা। কারন আমার স্বামীর পরিবার খুবই প্রভাবশালী। আর নিকাহ রেজিস্ট্রার আমাকে বলেন তুমি মিমাংসা করে নাও।
যুবতীর স্বামী সোহেল খানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন অভিযোগকারী যুবতী আমার বিবাহিত স্ত্রী তার সাথে আমার ধর্মীয় বিধান মোতাবেক বিবাহ হয়েছে। আর নিকাহ নামার কথা বলছেন এই নিকাহ নামা রেজিস্ট্রার মাওলানা আসাদুজ্জামান দুই নম্বরী করেছেন। তিনি কেন ওই যুবতীকে নিকাহ নামা দিচ্ছেন না তা আমি জানি না।
খাসিয়াল ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মাওলানা আসাদুজ্জামানের সাথে মোবাইল ফোনে নিকাহ নামা দেখতে চাওয়া হলে তিনি বলেন মিমাংসা হয়েছে কিন্ত নিকাহনামা দেখাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। আমি নিকাহ নামা জেলা রেজিস্ট্রারকে দেখিয়েছি। আপনারা দেখার কে?
এ ঘটনায় নড়াইল জেলার জেলা রেজিস্ট্রার মোঃ আব্দুর রহিমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে নোটিশ করে ছিলাম, কিন্ত আমি অফিসে না থাকায় আমি নিকাহ রেজিস্ট্রারের ভোলিউম বই দেখতে পারি নাই। তবে মিমাংসা
হয়েছে শুনেছি। নিকাহ নামা ভোলিউমে লিপিবদ্ধ থাকবে কিনা এবং ওই যুবতী নিকাহ নামার নকল বা রশিদ পাবেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি কোন উত্তর দেন নাই।
এ বিষয়ে জেলা রেজিষ্টার আব্দুল কাদের বলেন, শুনেছি টাকার বিনিময়ে আপোষ হয়েছে। তিনি আরো বলেন রবিবার অফিসে আসেন কথা বলবো; বলে ফোনটি কেটে দেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার কয়েকজন জানান ওই নিকাহ রেজিস্ট্রার ইতিপূর্বে এমন অনেক ঘটনা ঘটিয়েছেন, মোটা অংকের টাকা নিয়ে বাল্য বিবাহ সম্পাদন করে থাকেন বলে এলাকায় অভিযোগ আছে। তাছাড়া তার রয়েছে বিলাশ বহুল বাড়ি। এই বাড়ি তৈরির এসব অবৈধ উপায়ে অর্জিত বলে জানান এলাকাবাসী।