মাগুরায় একটি স্কুলে ৪ জনকে নিয়োগ দিয়ে অর্ধকোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্যে করেছে প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও সভাপতি রসকান্ত বিশ্বাস।
ঘটনাটি ঘটেছে, মাগুরা মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের ধূলজোড়া চুড়ারগাতী প্রতাপ চন্দ্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও সভাপতি রসকান্ত বিশ্বাস ঘুষ নিয়ে তাদের মনোনীত প্রার্থী সৌরভ, সংঙ্কর, গোলক ও সবিতাকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য গত ২৭ আগষ্ট পরীক্ষার দিন ধার্য্য করা হয়। সেখানে তাদের পছন্দ মত লোককে ২ দিন পূর্বে দেওয়া হয় প্রবেশপত্র, বিষয়টি নিয়ে অন্য প্রার্থীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধ হয়ে যায় ঐ দিনের নিয়োগ পরীক্ষা।
বাড়া ভাতে জল ঢেলে বেচারা প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে রাগিয়ে তুলেন তারা। তাই আটঘাট বেঁধেই নতুন করে নামেন তারা এবং তাদের মনের বাসনা পূর্ণ করে ঘুষের টাকাকে বৈধ্য করে ফেলেন। এ বিষয়ে ঐ বিদ্যালয়ের কমিটির কয়েক জন জানান, নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি আমরা নিশ্চিত ভাবে জানতে পেরে ১৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবারের এই নিয়োগ যাতে বন্ধ করা হয়। সে জন্য আমরা কমিটির ৬ জন সদস্য গত ১৫ সেপ্টেম্বর মাননীয় জেলা প্রশাসক বরাবর একটি আবেদন করি এবং নিয়োগ বন্ধ করার জন্য প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে মৌখিক ভাবে বলি। জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন পেশ করার বিষয়টিও তাদের জানানো হয় কিন্তু তারা তাতে কোন কর্ণপাত না করে। কমিটির ১-২ জন সদস্যকে অর্থের বিনিময়ে পক্ষে নিয়ে ঘুষ নেওয়া ৪ জনকে পাতানো নিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে মনোনীত করা হয়। সদস্যরা আরো বলেন, আমরা কমিটির সদস্য হওয়ায় বিভিন্ন মাধ্যম ও সূত্র থেকে নিশ্চিত হয়েছি কম্পিউটার ল্যাবসহকারী পদে সৌরব বিশ্বাস, পিতা- মৃত পরিমল বিশ্বাসের (সাং- বহলবাড়িয়া) কাছে থেকে ১৮ লক্ষ টাকা, অফিস সহায়ক পদে সংঙ্কর বিশ্বাস, পিতা- গোপাল বিশ্বাসের (সাং- চুড়ারগাতি) কাছে থেকে ১২ লক্ষ টাকা ,পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে গোলক বিশ্বাস, পিতা- গোপাল বিশ্বাসের (সাং- বৃহসনগর) কাছ থেকে ১২লক্ষ টাকা, আয়াপদে সবিতা বিশ্বাস, স্বামী- ভবতোষের( কুলিপড়া) কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছে, যেটা আমরা আগে থেকেই বলে আসছি। যা জাতীয় দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলো, দৈনিক খবর বাংলাদেশ, দৈনিক সমাজের কথা পত্রিকার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও নিয়োগের আগেই প্রকাশিত হয়েছে। তার পরও প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত ও সভাপতি রসকান্ত যোগসাজশ করে এই নিয়োগ সম্পন্ন করেছে। এবিষয়ে বাবুখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ নাঈম বলেন, আমার ভাই মাসুদ পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে চাকুরীর জন্য আমি সভাপতির সাথে কথা বলি তিনি আমাকে ১০ লক্ষ টাকা প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাসকে দিতে বলেন। তার কথা মত আমি শোরুম, গরু ছাগল বিক্রি করে ও জমি বন্ধক রেখে ৭ লক্ষ টাকা কয়েকজনের উপস্থিতিতে শ্রীকান্তকে দেয়।
কিন্তু অন্য প্রার্থীর কাছে থেকে টাকা বেশি পেয়ে আমার ভাইয়ের দরখাস্ত বাতিল করে দেয়। বাতিল করার পেছনে কারণ হলো ২ টি বেশি টাকা নেওয়া আর আমরা মুসলমান এখানে আজ পর্যন্ত কমিটির মাধ্যমে কোন মুসলমান নিয়োগ দেওয়া হয়নি। ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়ে সভাপতি রসকান্তের কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যায়।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক শ্রীকান্ত বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবী করে বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসার আলমগীর স্যারের সাথে পরামর্শ করে তার উপস্থিতিতেই দরখাস্ত বাতিল করা হয়েছে। এ বিষয়ে মাগুরা জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আলমগীর কবির বলেন, দরখাস্ত বাদ দেওয়ার বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।