গত তিন বছর যাবত শিকল বন্ধী অবস্থায় জীবন পার করছেন ওমর ফারুক। বয়স তার ৫০। বাড়ির পাশে জরাজীর্ণ ও নোংরা পরিবেশে একটি টিনের খোলা ছাপড়ার নীচে শিকল বন্দী হয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। ফরিদপুরের নগরকান্দার তালমা ইউনিয়নের সদরবেড়া গ্রামে তার বাড়ী। পিতার নাম শেখ আমিন উদ্দিন। প্রায় এক যুগ আগে মারা গেছেন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে ২য় ওমর ফারুক। অভাবের কাছে হার মেনে ৬ষ্ঠ শ্রেণী পাশ করে বাবার সাথে সংসারের হাল ধরেন ওমর ফারুক। উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের কুঞ্জনগর গ্রামে বিয়ে করেন। সুখের সংসারে ১ টি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নেয় এই দম্পত্তির।
ওমর ফারুকের মা ফুলি বেগম বলেন, ২২/২৩ বছর আগে একদিন গভীর রাতে বাড়ির পাশের ফসলি মাঠে যায় ধান ক্ষেতের খড় কুড়িয়ে আনতে। খড় কুড়িয়ে বাড়িতে আসার পরই শুরু হয় ওমর ফারুকের পাগলামি। পরনের কাপড় ছিড়ে ফেলে, ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। অনেক ফকির দেখিয়ে তাবিজ- কবজ দিয়েছি। অনেক চিকিৎসা করানোর পরে ছেলে আমার সুস্থ হয়। পরে বিয়ে করিয়ে দেই, সুন্দর ভাবে সংসারও করতে থাকে।
গত ৩ বছর আগে ওমর ফারুক আবার পাগলামি শুরু করে। চিকিৎসার জন্য ২/৩ বার ওমর ফারুককে পাবনা পাগলা হাসপাতালে চিকিৎসা দিলেও সে ভালো হয়না। তারপর থেকে বাধ্য হয়েই তাকে শিকল বন্ধী করে রেখেছি। শিকল খুলে দিলে কারো ক্ষতি করবে, অথবা কোথাও চলে যাবে। তাই কোথাও যাতে যেতে না পারে তার কারণেই ওকে শিকল বন্ধী করে রেখেছি। এখন টাকা পয়সার অভাবে ওকে সঠিক চিকিৎসা করাতে পারছিনা।ফারুকের মা আরো বলেন, সংসারের অভাবের তাড়নায় গত দেড় মাস আগে ওর বউ রাশিদা বেগম সৌদি আরব গেছে। এখন ওর দেখা শুনা খাওয়া দাওয়া সবই আমার করাতে হয়।
আরও পড়ুনঃ নড়াইল ডিবি পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে ২০৫ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার-৪
ওমর ফারুকের ১৭ বছর বয়সী ছেলে ইলিয়াস শেখ ঢাকায় মামার দোকানে কাজ করে। মেয়ে ৬ বছর বয়সী রাবেয়া বেগম নানার বাড়ীতে একটি কওমী মাদ্রাসায় ভর্তি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার একটি ঘর তিনি পেয়েছেন। ওমর ফারুকের সু চিকিৎসার জন্য তার মা ফুলি বেগম স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম
মুরসিদ, মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।