অবিলম্বে সার ও জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করা এবং চাল-ডাল, তেল-আটাসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে গণকমিটি মাগুরা জেলার উদ্যোগে আজ ৭ আগস্ট ২০২২ রবিবার সকাল ১১টায় চৌরঙ্গী মোড়ে মাগুরা জেলা প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণকমিটির আহ্বায়ক এটিএম মহব্বত আলী এবং সমাবেশ পরিচালনা করেন সদস্য সচিব প্রকৌশলী শম্পা বসু। বক্তব্য প্রদান করেন, গণকমিটি মাগুরা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, বিশ্ববাজারে যখন তেলের দাম নিম্নমুখী সে সময়ে সরকারের এই সিদ্ধান্ত জনগণের উপর মূল্যবৃদ্ধির বোঝা আরও বাড়াবে। শিল্প, কৃষি, পরিবহন থেকে শুরু করে সকল ক্ষেত্রেই জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পড়বে। এতে জনজীবনে চরম দুর্দশা নেমে আসবে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গত ছয় মাসে বিপিসি জ্বালানি তেল বিক্রি করে ৮ হাজার কোটি টাকা লোকসান করেছে। কিন্তু বিগত সময়ে বিশ্ববাজারে যখন তেলের দাম কম ছিল সে সময়ে তেল বিক্রি করে সরকার ৪৭ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছিল। তা দিয়েই এই ঘাটতি পূরণ করা যেত। অথচ সরকার সে পথে না হেটে জনগণের উপরে মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপিয়ে দিল।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ইউরিয়া সারের দামও অস্বাভাবিক হারে বাড়ানো হয়েছে। কেজি প্রতি ৬ টাকা বা বস্তা প্রতি ৩০০ টাকা। পুরো করোনাকালে অন্যান্য সবকিছু স্থবির হয়ে পড়লেও কৃষক তার উৎপাদনের চাকা সচল রেখেছে এবং গোটা দেশের মানুষের মুখের আহার যুগিয়েছে। এমনিতেই কৃষি উপকরণের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি, ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়া ইত্যাদির ফলে গোটা কৃষিব্যবস্থা চরম সংকটের মধ্যে আছে। তার উপর এখন আবার জ্বালানি তেলের সংকট, লোড শেডিং এর ফলে গোটা সেচ ব্যবস্থা ব্যাহত হবে। শ্রাবণ মাসের ৩ সপ্তাহ পার হতে চলেছে কিন্তু পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কৃষক রোপা আমন বপন করা নিয়েও অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। এর উপরে সারের এই মূল্যবৃদ্ধি মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়াবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী বলছেন এক ইঞ্চি জমিও খালি রাখা যাবে না, উৎপাদন বাড়াতে হবে আবার তার সাথে এই মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত সাংঘর্ষিক। যেখানে কৃষিতে ভর্তুকি বাড়ানো উচিত তা না করে এই মূল্য বৃদ্ধির ঘটনা গোটা কৃষি উৎপাদনকে ব্যাহত করবে, খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলবে। নেতৃবৃন্দ বলেন চলমান বৈশ্বিক এই সংকটকালে কৃষি ও কৃষি উৎপাদনই হতে পারে রক্ষাকবচ।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে সারের এই অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে স্বল্পমূল্যে ভেজালমুক্ত সার প্রকৃত কৃষকের কাছে পৌঁছানোর দাবি করেন।এছাড়াও সমাবেশ থেকে অবিলম্বে চাল-ডাল, তেল-আটাসহ নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবি জানান হয়।