গোপালভোগ হিমসাগর দিয়ে শুরু। তারপর একে একে গুটি, লক্ষণভোগ,ল্যাংড়াসহ বাহারি জাতের আমের বিপুল সমাহার। আনুষ্ঠানিক ভাবে গত ২৮ মে বাজারে আম নামার কথা থাকলেও ২৫ মে থেকেই রহনপুর আমবাজারে আমের দেখা মিলে।
গোপালভোগ, হিমসাগর, লক্ষনভোগ আম বাজারে এখন নেই। গোপালভোগ আম বাজারে উঠার সময় ২ হাজার থেকে শুরু সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছিল। বর্তমান আম বাজারে হিমসাগর আম দেশীয় ভাষায় যাকে বলে খিরসাপাত তার বাজার মূল্য ৩ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত চলছিল। এছাড়াও বাজারে গুঠি জাতের আম ১৫শ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে, লক্ষণভোগ ১৫'শ-১৮'শ টাকার মধ্যে, কালিভোগ ২২শ-২৫'শ টাকার মধ্যে, ল্যাংড়া ২২শ-২৫শ টাকার মধ্যে, আম্রপালি ২২শ-২৫'শ টাকার মধ্যে, হাঁড়িভাঙ্গা ২৫'শ-২৮'শ টাকার মধ্যে বাজারে বিক্রি হয়েছিলো ।
এছাড়া বাজারে এখন ফজলী, আম্রপালি, হাড়িভাঙ্গা ও বারি-৪ আম বাজার দখল নিয়ে আছে। দাম ধরা ফজলী ১৮ 'শ থেকে ২২ 'শ, আম্রপালি ২৪ 'শ থেকে ৩ হাজার, হাড়ি ভাঙ্গা ২৬ 'শ ৩২ 'শ, বারি-৪ ২৮'শ থেকে ৩৬ 'শ টাকার মধ্যে। বিভিন্ন জাতের আমের ডালি, আম বোঝায় ক্যারেট দূর দূরান্ত থেকে ব্যাটারি চালিত ভ্যানযোগে খুব ভোরে এসে আম বাজারে সারিসারি করে রাখা হয়েছে । সকাল ১০ টায় আম বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে প্রচুর লোকজনের ভীড়, বিভিন্ন ধরণের ক্রেতা-বিক্রেতায় বাজার ভর্তি। কেউ এসেছেন বাড়ির জন্য, কেউবা আত্নীয়কে পাঠানোর জন্য, কেউবা কাওকে উপহার দেয়ার জন্য আম কিনতে এসেছে।
এছাড়া ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আম ব্যবসায়ীরা আম সিজন অব্দী রহনপুরে আস্তানা গেড়েছেন। তারা প্রতিদিন বিভিন্ন জাতের আম ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠাচ্ছে। তাদের ক্রয় করা আম নিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ থেকে ২০০ 'শ ছোট-বড় ট্রাক আম নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটছে। এছাড়া মৌসুমী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত এলাকার ছাত্র, যুবক, তরুনেরা অনলাইনে আম কেনা-বেচা করছে। অনলাইন ব্যবসায়ীদের কারণে এখানকার কুরিয়ার সংস্থাগুলো ব্যস্ত সময় পার করছে। দেরীতে হলেও গত ১৩ জুন রহনপুর-ঢাকা চালু হয়েছে 'ম্যাংগো স্পেশাল' ট্রেন। প্রতিদিন বিকেল ৪ টায় ছেড়ে ট্রেনটি আম নিয়ে ঢাকায় পৌঁছায় রাত পৌনে ২ টায়।
আম আড়ৎদার শহীদুল ইসলাম ও ফারুক মহাজন জানান, 'বর্তমানে চাহিদা মোতাবেক আম বাজারে রয়েছে। গতবারের চেয়ে দাম কিছুটা বেশী হলেও সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে আম ব্যবসায়ীরা এসে এখানে স্বাচ্ছন্দে কেমিক্যাল মুক্ত আম ক্রয় করছে। আমরা আশাবাদী ফলন কম হলেও ব্যবসা ভালো হচ্ছে।
গোমস্তাপুর উপজেলা আম চাষী ও আম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন জানান, সমগ্র গোমস্তাপুর উপজেলায় সম্প্রতি কয়েকদিনের ঝড়-বৃষ্টিতে আমের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিলো। এতে করে ফলন প্রায় ৩৫% কমে যাবে বলে মনে করি। গতবারের চেয়ে আমের দাম কিছুটা বেশি হলেও ক্ষতির কারণে অনেক আম ব্যবসায়ী এবার লোকসানের সম্মুখীন হবেন ধারণা করা হচ্ছে। তবে আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি এ উপজেলায় আম ব্যবসায়ীরা সারাদেশে কেমিক্যাল মুক্ত আম সরবরাহ করছে।
আরও পড়ুনঃ মাগুরাতে মাদক উদ্ধার করতে গিয়ে মিলল স্বর্ণের বার!
রহনপুর স্টেশন মাস্টার মির্জা কামরুল হক জানান, প্রতিদিন তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার কেজি করে আম ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেনে রহনপুর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে যাচ্ছে। আমের ফলন কম হওয়ার কারণে ট্রেনের বুকিং কম হচ্ছে ।
গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানভির আহমেদ সরকার জানান, এবার ৪ হাজার ২'শ ২০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৯ হাজার মেট্রিক টন। আমের গাছগুলোতে শুরুর দিকে মুকুল ভালো পরিমাণে আসলেও পরবর্তীতে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে আমের ফলন কিছুটা কম হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha