কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মালিয়াট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশ্য প্রহরী হারুন অর রশিদ হারুন যৌন নিপীড়ন মামলার আসামি। সাম্প্রতিক ওই মামলার বাদীর সঙ্গে আতাঁত করে আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন তিনি। জামিন পেয়ে আজ ১১জুন শনিবার কর্মস্থলে ফিরতে চেয়েছিলেন।
এদিকে হারুন কর্মস্থলে ফেরার খবর পেয়ে অভিভাবকরা বিদ্যালয় ঘেরাও করে। আজ শনিবার সকালে প্রায় শতাধিক অভিভাবক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। পরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একটি শ্রেণিকক্ষে অভিভাবকদের বসান এবং হারুনের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনা সভায় অভিভাবকরা বলেন, হারুন একজন লম্পট, দুশ্চরিত্র, যৌন নিপীড়ন মামলার আসামি। হারুন স্কুলে থাকলে আমরা এই স্কুলে সন্তানদের পড়াব না। স্কুলটি এলাকার। আপনারা স্কুলের স্যার। আপনাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু হারুন স্কুলে আসতে পারবে না। এটায় শেষ কথা।
জানা গেছে, গত শুক্রবার সকালে মালিয়াট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রকে স্কুলে ডেকে এনে যৌন নিপীড়ন করে দফতরি হারুন অর রশিদ। এ ঘটনায় পরেরদিন শনিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ছাত্রের বাবা। পরে ওই দিন রাতেই থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
জানা গেছে, গত ৩০ মে সোমবার যৌন নিপীড়নকারী হারুনকে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন এলাকাবাসী। কিন্তু মামলার বাদী গোপনে আসামির সঙ্গে আতাঁত করে। অর্থের চুক্তিতে আদালতে মিথ্যা স্বীকারোক্তি প্রদান করে এবং আসামি জামিন লাভ করে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একাধিক অভিভাবক বলেন, অর্থের বিনিময়ে নৈশ্য প্রহরী হারুন মামলার মীমাংসা করেছে। কিন্তু আমরা হারুনকে মানি না। সন্তানের নিরাপত্তার জন্য হারুনের চাকরিচ্যুত চাই। না হলে সন্তানদের স্কুলে পড়াবোনা।
আরও পড়ুনঃ আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি সেকেন্দার ও সাধারণ সম্পাদক আলমগীর
এবিষয়ে জানতে নৈশ্য প্রহরী হারুন অর রশিদ হারুনকে মুঠোফোনে কল দেওয়া হয়। কিন্তু ফোনটি বন্ধ থাকায় মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। মামলার বাদীর নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে মালিয়াট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিরোজ হোসেন বলেন, আজ অভিভাবকরা এসেছিল। তাদের সাথে কথা বলেছি। তাদের চাওয়া পাওয়া নিয়ে পরে কথা বলব। এবিষয়ে আপাতত কিছু বলতে চাচ্ছি না।
বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. মানিক হোসেন বলেন, খবর পেয়েছি অভিভাবকরা বিদ্যালয়ের এসেছিল। তারা দাবি করেন হারুন থাকলে স্কুলে বাচ্চা পড়াব না। মামলার বাদী আসামির সঙ্গে মিটমাট করে নিয়েছে। একটা লিখিত মীমাংসার কাগজ স্কুলে দিয়েছে।
এ বিষয়ে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই লিটন চন্দ্র দাস বলেন, বাদী আদালতে মীমাংসার কথা বলায় আদালত আসামিকে জামিন দিয়েছে। এধরনের অপরাধ মীমাংসার যোগ্য নয়। খুব দ্রæতই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রদান করা হবে।
কুমারখালী উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, স্কুলের শান্তি রক্ষায় ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে এ ধরনের ঘটনায় দৃৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার।
সম্পাদক ও প্রকাশক: এ. এস.এম
মুরসিদ, মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।