চাঁদার টাকা না দেওয়ায় জিহাদ নামের এক ব্যাক্তিকে ঘুম থেকে উঠিয়ে এনে বেধড়ক মারপিটের অভিযোগ পাওয়া গেছে ফরিদপুরের সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুজ্জামান এর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে সঠিক বিচার চেয়ে গত ১৫ই মার্চ ভুক্তভোগীর বড় ভাই ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ৩ নং গট্টি ইউনিয়নের ভাবুকদিয়া গ্রামের মো: মুরাদ মোল্যা বাদী হয়ে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে বুধবার বিকেলে জিহাদ জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর ফরিদপুর জেলা কারাগারের সামনে সালথা থানার ওসির বিচার দাবি করে মানববন্ধন করেন।
এ সময় বক্তব্য রাখেন মো: জালাল ফকির, মজনু হোসেন, জিহাদ মোল্লা, শরীফ প্রমূখ। এ বিষয়ে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ ও মুরাদ মোল্লার ভাষ্যমতে জানা যায়, গত ১৪ মার্চ আনুমানিক রাত ১ ঘটিকার সময় সালথা থানার ওসি আশিকুজ্জামান এর অধিনস্থ কিছু অফিসার ঘুমন্ত অবস্থায় জিহাদকে বিনা ওয়ারেন্টে তুলে নিয়ে যায়। পরের দিন সকালে জিহাদকে দেখতে গেলে ওসি আশিকুজ্জামান মুরাদের নিকট ২৫ হাজার টাকা চাঁদা হিসেবে দাবি করে। তবে এই টাকা দিতে অস্বীকার করায় থানার ওসি ও অন্যান্য অফিসারগণ মিলে জিহাদকে অন্য রুমে নিয়ে জানালার সাথে হাত বেধে বেধরক মারধোর করে নিলা ফুলা জখম করে।
মুরাদ মোল্লা অভিযোগ করে জানান, আমি এই ৩ নং গট্রি ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের ৩ বার বিপুল ভোটে নির্বাচিত সদস্য। তবে রাজনীতির সুত্র ধরে এলাকাভিত্তিক পক্ষ বিপক্ষ থাকায় কেউ কেউ আমাকে হয়রানী করার জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিপক্ষের যোগসাজসে সালথা থানার ওসি আশিকুজ্জামান প্রায়ই বিভিন্ন অংকের টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিল। এই টাকা না দেওয়াতেই তিনি আমার উপর ক্ষিপ্ত হতে থাকেন। এমনকি আমার বিরুদ্ধে ২ টি পুলিশ বাদি ও ১ টি চাঁদাবাজিসহ পর পর ৩ টি মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে আসামী করে হয়রানী করা হয়।
মুরাদ জানান আনুমানিক দীর্ঘ ৯ বছর আগে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার পরে পায়ে রিং লাগিয়ে ক্রেষ্ট নিয়ে হাটা চলা করে আসছি। এ অবস্থায় কারো সাথে মারামারি করা কিভাবে সম্ভব? তবে উক্ত মামলাগুলির আসামী হয়ে বিজ্ঞ আদালতে হাজির হওয়ার পর মাননীয় বিচারক মহোদয় পুরো বিষয়গুলো বুঝতে পেরে সবগুলো মামলা থেকে আমাকে একে একে জামিনে মুক্তি দেয়।
মুরাদ অভিযোগে জানান থানার ওসি আমার নিকট থেকে চাঁদা না পাওয়াই প্রতিপক্ষের যোগসাজশে আমার ভাইকে ঘুমন্ত অবস্থায় পুলিশ দিয়ে তুলে এনেছে। তবে ফরিদপুরের সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয় তার সততা ও যোগ্য নেতৃত্বেই জেলা শহরসহ প্রত্যেকটি থানাকেই আধুনিকায়ন ও দূর্নীতি মুক্ত করার প্রয়াসে নানা ধরনের মহতী উদ্যোগ নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে চলছেন। তবে এই সালথা থানার ওসির কারনের সুযোগ্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের এই মহতী উদ্যোগগুলোর নিমিষেই বিলীন হয়ে যেতে পারে। তাই উক্ত বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্ত পুর্বক আমার ভাইয়ের নি:শর্ত মুক্তিসহ থানার ওসি আশিকুজ্জামান এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে সালাথা বাসীকে রক্ষার জন্য ফরিদপুরের সুযোগ্য পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মুরাদ মোল্লা।
এ ছাড়াও উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের আফরোজা আক্তার জানান একটি জমি সংক্রান্তের বিষয় নিয়ে থানার ওসির সরনাপন্ন হওয়ায় উক্ত বিষয় আমলে নেওয়ার নাম করে তার নিকট ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে বলে ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে সালথা থানার ওসি আশিকুজ্জামান জানান, সালথা উপজেলার ভাবুকদিয়া গ্রামে একটি গন্ডগোল সংঘঠিত হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছায়। উক্ত সংঘর্ষের সাথে জিহাদ জড়িত থাকা সন্দেহে পুলিশ তাকে আটক করে মামলা দিয়ে জেল হাজতে প্রেরন করে।
অন্যদিকে মেম্বার মুরাদ এর শারীরিক অসুস্থতার কথা স্বীকার করে ওসি বলেন তিনি গন্ডগোলের পরিকল্পনাকারী হিসেবে তার বিরুদ্ধে ৩ টি মামলা হয়।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha