ঢাকা , শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ভেড়ামারায় আবারও পান বরজে অগ্নি,২ কোটি টাকা ক্ষতি Logo পদ্মায় ডুঙ্গা নৌকা ডুবে যুবক নিখোজ Logo বাগাতিপাড়ায় প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে প্রথমবারের মতো পালিত হয়ে গেলো হিন্দু ধর্মলম্বীদের বাসন্তী পূজা Logo রাজাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯৮ ব্যাচের আয়োজনে ঈদ পূর্ণমিলনী Logo ফরিদপুরে হত্যা মামলায় পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ Logo বাগাতিপাড়ায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে দোয়া প্রার্থী মোঃ সেলিম রেজা Logo শরীয়তপুর সদর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের শীর্ষে উজ্জ্বল আকন্দ Logo বোয়ালমারীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে প্রাণ নাশের হুমকি, থানায় অভিযোগ Logo ঈশ্বরদীতে ৪১ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড Logo দৌলতপুরে সরকারী জলমহালের দখলদারদের হামলা ও গুলি, আহত ৬
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

চরভদ্রাসনে নি:সন্তান দম্পতি পেলো পাগলির নবজাতক শিশুটি

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে নাম পরিচয়হীন মানষিক ভারসাম্যহীন এক পাগলীর নবজাতক শিশুটি দত্তক নিয়েছেন নি:সন্তান ফারজানা আক্তার রিপা(২২) ও তার স্বামী রফিকুল ইসলাম মুন্সি(৩৬) নামের এক দম্পতি। ২৫জানুয়ারী মঙ্গলবার সন্ধার দিকে উপজেলা শিশু কল্যান বোর্ডের যাচাই বাছাই শেষে ১১ দিন বয়সী আহাম্মদ ইসলাম নামের ঐ শিশুটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই দম্পতিকে লালন পালনের দায়ীত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা।ওই দম্পতি সদর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল ওয়াহেদ মুন্সির ছেলে ও পুত্রবধু ।

স্থানীয়রা জানায়,গত দুই মাস পূর্বে ঐ গ্রামের শেষ মাথায় পদ্মা নদীর পাড়ে পাগলিকে ঘোরাফেরা করতে দেখে তারা।তখন সে অসুস্থ ও অন্ত:সত্তা ছিল।কয়েকদিন নদীর পারে খড়ের গাদার ভিতরে ঘুমিয়ে ছিল সে।শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয়দের সহায়তায় অন্ত:সত্তা পাগলিকে ওই গ্রামের বাসিন্দা মৃত মনিরুজ্জামান মাষ্টারের ছেলে শহীদ খানের ভাঙ্গা চোড়া পরিত্যক্ত একটি ঘরে থাকার ব্যাবস্থা করা হয়।গত ১৪জানুয়ারী শুক্রবার নাম পরিচয়হীন ওই নারী বয়স আনুমানিক(২৮)এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নবজাতক ও তার মায়ের দায়ীত্ব নেওয়ার পাশাপাশি তাদের সুস্থতার কথা চিন্তা করে শিশু সন্তানটিকে ইউপি সদস্য বাবুল মোল্যা ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আছিয়া খাতুন এর তত্তাবধানে রেখে আসেন। পরে পাগলীর সন্তান দত্তক নেয়ার জন্য অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন।এদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম মুন্সি পাগলির সন্তান জন্ম হওয়ার আগে থেকেই তাদের দেখভাল করায় সবার আবেদন যাচাই বাছাই করে রফিকের স্ত্রী ফারজানা আক্তার (রিপার) কোলে শিশুটিকে তুলে দেন ইউএনও।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আজাদ খান,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হক টিটু,সমাজ সেবা কর্মকর্তা জাহীদ তালুকদার,উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান,স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল মোল্যা ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আছিয়া খাতুন।

শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার বিষয়ে ইউএনও তানজিলা কবির ত্রপা বলেন “সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই” তিনি তার নৈতিক দায়ীত্ববোধ থেকে এই মানষিক ভারসাম্যহীন অসহায় মহিলার পাশে দাড়িয়েছেন।শিশুটি জন্ম নেওয়ার পরে অনেকেই নবজাতক দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদন করেছিল।রফিকের কোন সন্তান নেই।সে ও তার স্ত্রী আগে থেকেই পাগলির দেখাশুনা করে আসছিল।এই মূহুর্তে নবজাতকের সুস্থতা ও বেচেঁ থাকার জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল খুবই প্রয়োজন।উপজেলা শিশু কল্যান বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রফিক ও তার স্ত্রীকে শিশুটিকে নিজের সন্তানের মতন লালন পালন করবে এমন অঙ্গীকারের প্রেক্ষিতে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

ইউএনও আরও বলেন গত চার সপ্তাহ আগে রাতে ওই এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরনের সময় স্থানীয়রা ঐ পাগলীর বিষয়ে আমাকে তথ্য দেয়।আমি তাৎক্ষনিক ওকে দেখতে যাই ও চিকিৎসার ব্যাবস্থা নেই। শুক্রবার মেয়েটি ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান জন্ম দেয়।নবজাতক সহ তার মায়ের চিকিৎসার ব্যাবস্থা গ্রহন করি।শিশুটির মাকে হাসপাতালে আনা সম্ভব না হওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীরা ঐ বাড়িতে গিয়ে তার চিকিত্সা করেছেন।এছাড়া শিশুখাদ্য দুধ ও প্রয়োজনীয় পোশাক সরবরাহ করা হয়।

দত্তক নেওয়া রফিক মুন্সি জানান তাদের বিবাহীত জীবনের ৪ বছরেও তারা কোন সন্তানের মুখ দেখেন নাই।এই নবজাতকে তাদের ঘরে তুলতে পেরে তারা খুবই আনন্দিত।তারা শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে তাদের আবেদন যাচাই বাছাই করে সংশ্লিষ্টরা শিশুটিকে তাদের হাতে তুলে দেন। তারা ঐ পাগলির দেখাশুনা করার পাশাপাশি নিজের সন্তানের মতন করে আহাম্মদ ইসলাম নামের ঐ শিুশুকে লালন পালন করবেন।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ভেড়ামারায় আবারও পান বরজে অগ্নি,২ কোটি টাকা ক্ষতি

error: Content is protected !!

চরভদ্রাসনে নি:সন্তান দম্পতি পেলো পাগলির নবজাতক শিশুটি

আপডেট টাইম : ১২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২২

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে নাম পরিচয়হীন মানষিক ভারসাম্যহীন এক পাগলীর নবজাতক শিশুটি দত্তক নিয়েছেন নি:সন্তান ফারজানা আক্তার রিপা(২২) ও তার স্বামী রফিকুল ইসলাম মুন্সি(৩৬) নামের এক দম্পতি। ২৫জানুয়ারী মঙ্গলবার সন্ধার দিকে উপজেলা শিশু কল্যান বোর্ডের যাচাই বাছাই শেষে ১১ দিন বয়সী আহাম্মদ ইসলাম নামের ঐ শিশুটিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে ওই দম্পতিকে লালন পালনের দায়ীত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা।ওই দম্পতি সদর ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল ওয়াহেদ মুন্সির ছেলে ও পুত্রবধু ।

স্থানীয়রা জানায়,গত দুই মাস পূর্বে ঐ গ্রামের শেষ মাথায় পদ্মা নদীর পাড়ে পাগলিকে ঘোরাফেরা করতে দেখে তারা।তখন সে অসুস্থ ও অন্ত:সত্তা ছিল।কয়েকদিন নদীর পারে খড়ের গাদার ভিতরে ঘুমিয়ে ছিল সে।শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয়দের সহায়তায় অন্ত:সত্তা পাগলিকে ওই গ্রামের বাসিন্দা মৃত মনিরুজ্জামান মাষ্টারের ছেলে শহীদ খানের ভাঙ্গা চোড়া পরিত্যক্ত একটি ঘরে থাকার ব্যাবস্থা করা হয়।গত ১৪জানুয়ারী শুক্রবার নাম পরিচয়হীন ওই নারী বয়স আনুমানিক(২৮)এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নবজাতক ও তার মায়ের দায়ীত্ব নেওয়ার পাশাপাশি তাদের সুস্থতার কথা চিন্তা করে শিশু সন্তানটিকে ইউপি সদস্য বাবুল মোল্যা ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আছিয়া খাতুন এর তত্তাবধানে রেখে আসেন। পরে পাগলীর সন্তান দত্তক নেয়ার জন্য অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেন।এদের মধ্যে রফিকুল ইসলাম মুন্সি পাগলির সন্তান জন্ম হওয়ার আগে থেকেই তাদের দেখভাল করায় সবার আবেদন যাচাই বাছাই করে রফিকের স্ত্রী ফারজানা আক্তার (রিপার) কোলে শিশুটিকে তুলে দেন ইউএনও।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আজাদ খান,উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুল হক টিটু,সমাজ সেবা কর্মকর্তা জাহীদ তালুকদার,উপজেলা সমবায় অফিসার মোঃ মিজানুর রহমান,স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবুল মোল্যা ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আছিয়া খাতুন।

শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার বিষয়ে ইউএনও তানজিলা কবির ত্রপা বলেন “সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই” তিনি তার নৈতিক দায়ীত্ববোধ থেকে এই মানষিক ভারসাম্যহীন অসহায় মহিলার পাশে দাড়িয়েছেন।শিশুটি জন্ম নেওয়ার পরে অনেকেই নবজাতক দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে আবেদন করেছিল।রফিকের কোন সন্তান নেই।সে ও তার স্ত্রী আগে থেকেই পাগলির দেখাশুনা করে আসছিল।এই মূহুর্তে নবজাতকের সুস্থতা ও বেচেঁ থাকার জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল খুবই প্রয়োজন।উপজেলা শিশু কল্যান বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রফিক ও তার স্ত্রীকে শিশুটিকে নিজের সন্তানের মতন লালন পালন করবে এমন অঙ্গীকারের প্রেক্ষিতে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

ইউএনও আরও বলেন গত চার সপ্তাহ আগে রাতে ওই এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরনের সময় স্থানীয়রা ঐ পাগলীর বিষয়ে আমাকে তথ্য দেয়।আমি তাৎক্ষনিক ওকে দেখতে যাই ও চিকিৎসার ব্যাবস্থা নেই। শুক্রবার মেয়েটি ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান জন্ম দেয়।নবজাতক সহ তার মায়ের চিকিৎসার ব্যাবস্থা গ্রহন করি।শিশুটির মাকে হাসপাতালে আনা সম্ভব না হওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীরা ঐ বাড়িতে গিয়ে তার চিকিত্সা করেছেন।এছাড়া শিশুখাদ্য দুধ ও প্রয়োজনীয় পোশাক সরবরাহ করা হয়।

দত্তক নেওয়া রফিক মুন্সি জানান তাদের বিবাহীত জীবনের ৪ বছরেও তারা কোন সন্তানের মুখ দেখেন নাই।এই নবজাতকে তাদের ঘরে তুলতে পেরে তারা খুবই আনন্দিত।তারা শিশুটিকে দত্তক নিতে চাইলে তাদের আবেদন যাচাই বাছাই করে সংশ্লিষ্টরা শিশুটিকে তাদের হাতে তুলে দেন। তারা ঐ পাগলির দেখাশুনা করার পাশাপাশি নিজের সন্তানের মতন করে আহাম্মদ ইসলাম নামের ঐ শিুশুকে লালন পালন করবেন।