ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে নাম পরিচয়হীন এক পাগলী বয়স আনুমানিক(২৮)এক পুত্র সন্তানের ‘মা’ হলেও ‘বাবা’ হয়নি কেউ।এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চচল্লের সৃষ্টি হয়েছে।১৪ জানুয়ারী শুক্রবার সকালের দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালিয়া ডাঙ্গী গ্রামে স্থানীয় মহিলাদের সহযোগীতায় মানষিক ভারসাম্যহীন (পাগলী) এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেয়।
খবর পেয়ে শনিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবীর ত্রপা ঐ পাগলী ও তার শিশু সন্তানকে দেখতে যান।এ সময় তিনি ঐ নবজাতক ও তার মায়ের সু-চিকিৎসার ব্যাবস্থা করার পাশাপাশি স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য আছিয়া খাতুন ও বাবুল মোল্লার তত্তাবধানে রেখে আসেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সংরক্ষিত মহিলা সদস্য আছিয়া খাতুন জানায় গত দুই মাস পূর্বে ঐ গ্রামের শেষ মাথায় পদ্মা নদীর পাড়ে পাগলীকে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।তখন সে অসুস্থ ও অন্ত:সত্তা ছিল।কয়েকদিন নদীর পারে খড়ের গাদার ভিতরে ঘুমিয়ে ছিল সে।শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয়দের সহায়তায় অন্ত:সত্তা পাগলীকে ঐ গ্রামের বাসিন্দা মৃত মনিরুজ্জামান মাষ্টারের ছেলে শহীদ খানের ভাঙ্গা চোড়া পরিত্যক্ত একটি ঘরে থাকার ব্যাবস্থা করা হয়।
শুক্রবার পাগলী এক সন্তান জন্মদিলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নবজাতক ও তার মায়ের সুস্থতার কথা চিন্তা করে শিশু সন্তানটিকে তাদের তত্তাবধানে রেখে আসেন ও তাদের চিকিত্সার ব্যাবস্থা নেন।এ সময় এসিল্যান্ড মোঃজিল্লুর রহমান,ওসি মোঃজিয়ারুল ইসলাম ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আজাদ খান উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে শহীদ খান বলেন প্রায় এক মাস যাবৎ এই পাগলী তাদের বাড়িতে আছে। তার স্ত্রী সার্বক্ষনিক পাগলীর খোজ খবর রাখেন।পাগলী ও তার সন্তানের সু চিকিৎসা ও নিরাপত্তার কথা ভেবে ইউএনও দফায় দফায় মেডিক্যাল টিম পাঠানোর পাশাপাশি ভাঙ্গা ঘরটি মেরামতের ব্যাবস্থা নিয়েছেন।
পাগলী ও তার সন্তানের পাশে দাড়ানোর বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানজিলা কবির ত্রপা রবিবার প্রতিবেদককে বলেন “সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই”তিনি তার নৈতিক দায়ীত্ববোধ থেকে এই মানষিক ভারসাম্যহীন অসহায় মহিলার পাশে দাড়িয়েছেন।
ইউএনও বলেন গত দুই সপ্তাহ আগে রাতের বেলায় ঐ এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরনের সময় স্থানীয়রা ঐ পাগলীর বিষয়ে আমাকে তথ্য দেয়।আমি তাৎক্ষনিক ওকে দেখতে যাই ও চিকিত্সার ব্যাবস্থা নেই। শুক্রবার মেয়েটি ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান জন্ম দিয়েছে।নবজাতক সহ তার মায়ের চিকিত্সার জন্য ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে।শিশুটির মাকে হাসপাতালে আনা সম্ভব না হওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীরা ঐ বাড়িতে গিয়ে তার চিকিত্সা দিচ্ছে।
এছাড়া শিশুখাদ্য দুধ ও প্রয়োজনীয় পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে। নবজাতকে দত্তক নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন আগ্রহ প্রকাশ করেছে।উপজেলা শিশু কল্যান বোর্ডের সদস্যদের নিয়ে আলোচনা করে শিশুটি দত্তক দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত স্থানীয় এক মা তার সন্তানের মতন ঐ পাগলীর নবজাতককে মাতৃস্নেহে নিজের স্তন্য পান করাচ্ছেন।পাগলী সন্তান রেখে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ালেও উভয়েই সুস্থ রয়েছে বলে জানায় স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার মোঃ বাবুল মোল্লা।