নওগাঁর সাপাহার উপজেলার শিরন্টী ইউনিয়নের শিতল ডাঙ্গা, ত্রিশূল ডাঙ্গাসহ অনেক রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।রাস্তা নয়, এ যেন ড্রেন-নালার উপর দিয়ে মানুষের চলাচল।
গতকাল শনিবার সকাল ১১ টার দিকে ত্রিশূল ডাঙ্গা গ্রামের প্রবেশ পথে একটি ট্রাক্টরকে মাটির সাথে যুদ্ধ করতে দেখা যায়। ত্রিশূল ডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ইয়াসিন আলী (৬৫) দৈনিক সময়ের প্রত্যাশাকে জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই রাস্তাটির এই অবস্থা। এটা দেখার কেউ নেই। রাস্তাটি দিয়ে প্রায় ১০ হাজার লোকের চলাচল। নির্বাচনের সময় এলে ভোটের জন্য সব ধরনের প্রতিশ্রুতি দেন প্রার্থীরা। ভোট শেষ হলে কারো দেখা মিলে না। এটি যেন অভিভাবকহীন গ্রাম।
একই গ্রামের বাসিন্দা মোক্তারুল ইসলাম (৩০) দৈনিক সময়ের প্রত্যাশাকে জানান, এখানে কেউ অসুস্থ হলে কাঁধে করে প্রাচীন উপায়ে কোচকুড়ালীয় গ্রামের রায়পুর স্কুলের পাকা রাস্তা পর্যন্ত নিয়ে যেতে হয়। এরপর হাসপাতালে নেয়ার জন্য যানবাহন মিলে। রাতে যানবাহনও মিলে না। কয়েকদিন আগে গ্রামের সাইয়িদ আলী (পাইকার) (৬০) বুকে ব্যথা অনুভব করলে খাট (মানুষের শুয়ে থাকার জন্য বিশেষ চার পায়ের খাট) কাঁধে করে হাসপাতালে নেয়া হয়।
চিকিৎসক জানান রোগীকে নিয়ে আসতে আরেকটু দেরি হলেও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো। শিতল ডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা এনামুল হক (৫৫) দৈনিক ভোরের কাগজকে জানান, খঞ্জনপুর মোড় থেকে দুইটি রাস্তা শিতল ডাঙ্গায় প্রবেশ করেছে। গ্রামের প্রবেশ দুটিকে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন মনে হয়!
এখানে কেউ অসুস্থ হলে কাঁধে করেই ৪-৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হাসপাতাল নিয়ে যেতে হয়। গ্রামটিতে একটি আলিম মাদ্রাসা, একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তিনটি জামে মসজিদ রয়েছে। এছাড়া গ্রামের চারদিকে কয়েক হাজার বিঘা আম ও ধানের চাষ হয়। যে সব ফসল বাজারে নিয়ে যেতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় কৃষকদের।
পাতাড়ী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বলদিয়াঘাট সেতুর পশ্চিম প্রান্ত হতে সীমান্ত সংলগ্ন চকচকির মাঠে যাওয়ার একমাত্র গ্রামীণ রাস্তাটির উপর বড় বড় গর্ত ও কালাপানিতে ভরে গেছে। রাস্তাটি দিয়ে এলাকার কৃষক গরু-মহিষের গাড়ী,ভ্যান, পাওয়ার টিলার ও ট্রাক্টর দিয়ে চকচকির মাঠ ও আশেপাশের মাঠ থেকে তাদের জমির ফসল ঘরে তোলেন। ভুক্তভোগীরা ওই রাস্তাটি পাকাকরণের জন্য সরকারের নিকট অনুরোধ করেছেন।
সাপাহার উপজেলার চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান হোসেন দৈনিক সময়ের প্রত্যাশাকে জানান, খঞ্জনপুর পুরের রাস্তার বরাদ্দ রয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু হবে। আর বলদিয়াঘাট ও ত্রিশূল ডাঙ্গা গ্রামের রাস্তার নাম্বারিং করা হয়েছে। তবে কোন বরাদ্দ নেই। পাকাকরণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। বরাদ্দ আসলে কাজ হবে।