রাজশাহীর সারদায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থলবন্দর স্থাপিত হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিশ্রুতি দেয়া স্বপ্নের বাস্তবায়ন হবে। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে ৯ মে সারদা পুলিশ টেনিং সেন্টর (পিটিসি), যা বর্তমান বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে (বিপিএ) প্রথম বিসিএস পুলিশ পাসিং আউট অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি।
ওই সময় স্থানীয় জনগনের উন্নয়নের কথা চিন্ত করে অর্থনৈতিক সোর্স তৈরী করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। স্থানীয়দের দাবি প্রস্তাবিত স্থল বন্দরটি সরাদায় নির্মান হোক। প্রধান মন্ত্রীর কাছে আবেদন।
সম্প্রতী স্থলবন্দর নির্মাণে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাইকমিশনার শ্রী সঞ্জিব কুমার ভাট্টি রাজশাহী জেলার সারদা ও চারঘাট পদ্মা নদীর তীরবর্তী কয়েকটি স্থান পরিদর্শণ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে চারঘাট পৌরসভার মুক্তারপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সংলগ্ন এলাকা ও কাকরামারি। এই দুটি স্থান চারঘাট উপজেলার মধ্যে। তবে ভারত ও বাংলাদেশ মধ্যে বড় বাধাঁ পদ্মা নদী। এই নদীর বুকের উপর দিয়ে নির্মিত হবে স্থল বন্দর। ভৌগলিক দিক থেকে, ভারতের মুর্শিদাবাদ থেকে রাজশাহী জেলা অত্যন্ত নিকটবর্তী স্থান।
১৯৪৭ সালে দেশের বিভাগের পূর্ব পদ্মা নদীর এপার ওপার উল্লেখিত স্থানে যাতায়াতের জন্য খেয়া পারাপারে নৌকা ও স্টিমার ব্যবহার করা হত। এতদাঞ্চলে রাজশাহী ও মুর্শিদাবাদে সংযোগের কোন স্থল বন্দর না থাকার কারনে প্রায় ৩শত কিঃমিঃ পথ অতিক্রম করতে হচ্ছে। স্থলবন্দরটি বাস্তবায়ন হলে উভয় দেশের ব্যবসায়িক অবস্থার উন্নতি হবে। বন্ধ হবে ভয়াবহ মাদকসহ নানা রকমের চোরাকারবার। ইতিহাস, ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতী এবং আত্মিয়তার অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ ভারত ও বাংলাদেশ। এই সর্ম্পক আরো সুদৃঢ করবে রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলায় স্থলবন্ধর নির্মিত হলে।
প্রস্তাবিত স্থলবন্দর বিষয়ে স্থানীয়দের বিভিন্ন মতামতে জানাযায়, জেলার চারঘাট পৌরসভার ২,৩ এবং ৪ নং ওর্য়াডের মধ্যে স্থাল বন্দরটি বাস্তবায়ন হলে দুই দেশের সরকারের অর্থ সাশ্রয়ী হবে। চলমান ঈশ্বরদী মহাসড়ক নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এই সড়কের মুক্তারপুর ট্রাফিক মোড় থেকে মাত্র ২শত মিটার দূরত্বে অবস্থিত পদ্মা নদী। তদুপরি পদ্মার ভাঙ্গন প্রতিহত করতে দেশের সরকার কর্তৃক বাধঁ নির্মাণ কাজ চলামান রয়েছে।
ইতোমধ্যে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ পর্যন্ত নদী বাধেঁর কাজ সমাপ্ত হয়েছে। কিন্ত চারঘাট সদর থেকে গোপলপুর, কাকরামারি, পিরোজপুর থেকে র্দীঘ বাঘা উপজেলা সহ নাটোর জেলার বিভিন্ন স্থান বন্যা ও উজানের পানিত প্রায় প্লাবিত হয়। নদী ভাঙ্গন এলাকায় যে কোন স্থাপনা ঝুঁকিপূর্ণ। একইভাবে উভয় দেশের অর্থনৈতিকের ও বির্পযয় হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সারদায় স্থল বন্দর নির্মান হলে খুব সহজেই মহাসড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা হবে।
সরাদা থেকে ভারতের দিয়ারসিবনগর, চরন্সগার, সিবনগর, রাজানগর, ধনিরামপুর, সাগরপারাসহ মুর্শিদাবাদ এলাকর দূরত্ব খুবই কম। সরাদায় রয়েছে এশিয়ার মধ্যে সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি। এছাড়া রাজশাহী ক্যোডেট কলেজ, সারদা সরাকারী কলেজ। এক কথায় শিক্ষা অধ্যৎষিত এলাকা। অপরদিকে নৌ পুলিশ ষ্টেশন, বিওপি ক্যাম্প, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, ডাকঘর, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, থানপাড়া সোয়ালোজ ডেভেলাপমেন্ট সোসাইটি এবং শত বছরের পুরাতন সারদা বাজার।
এবিষয়ে উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌরসভা চেয়ারম্যান অনোয়ার হোসেন, পৌর আ’লীগ সভাপতি সাজ্জাত হোসেন, থানাপাড়া ডেভেলাপমেন্ট সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক রায়হান আলী সহ বিভিন্ন ওর্য়াডের কাউন্সিলর এই পত্রিকার প্রতিবেদককে বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনতার যুদ্ধে থানাপাড়া ও কুঠিপাড়ায় পুরুষ শূণ্য করেছিল পাকহানাদার বাহিনী। জিবন্ত মানুষ আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে পদ্মার চরে চাপা মাটি দিয়েছিল পাকিস্তান সৈন্যরা। দেশ স্বাধীনের পরে বঙ্গবন্ধু সরকারী সফরে সারদা পুলিশ টেনিং সেন্টারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন।
ওই সময় সারদার নিঃস্ব মানুষ গুলো বঙ্গবন্দুর কাছে আর্তনাদ করেছিল। স্থানীয়দের ডাকে সাড়াদিয়ে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন, সারদায় অর্থ উর্পাজনের জন্য প্রতিষ্ঠান করা হবে। কিন্ত অভিভাবকের অনুপস্থিতিতে আজও সারদার মানুষ অবহেলিত। যারকারনে সরাদায় স্থলবন্দর নির্মান করার লক্ষে এলাকর পক্ষ থেকে পররাষ্ট মন্ত্রীর কাছে একটি আবেদন দেয়া হয়েছে। অপরদিকে প্রধান মত্রীর সাথে আলোচানার জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক (বেসপা) এর নিকট আবেদন ও করেছেন উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও সাবেক পৌরসভা চেয়ারম্যান অনোয়ার হোসেন।