মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরে চাঁদাবাজির মামলায় `মাগুরা সংবাদ ডটকম' নামের অনলাইনের এক সম্পাদককে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সঙ্গীয় অপর আসামী উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক পলাতক রয়েছেন।
সোমবার (১৬ অগাস্ট) প্রধানমন্ত্রীর আশ্রায়ন প্রকল্প -২ এর উপকারভোগীদের কাছে চাঁদা দাবি ও মারধোরের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় স্থানীয় ফেসবুকভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল মাগুরা সংবাদের সম্পাদক আশরাফুল আলম সাগর ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহকে আসামী করে ওবাদুর রহমান নামের এক ব্যক্তি থানায় মামলা করেন। মামলার বাদী আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা।
সাগরের বাড়ি উপজেলার পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের মৌফুলকান্দি গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আকরাম হোসেনের ছেলে। আরেক অভিযুক্ত উপজেলা সদরের বাঐজানি জেলখানা পাড়ার গদা শেখের ছেলে।
সোমবার বিকেল ৩ টায় মাগুরার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. হাসিবুল হাসানের আদালতে গ্রেফতাকৃত সাগরকে হাজির করিলে আসামি পক্ষের আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, মহম্মদপুর উপজেলা সদরে মধুমতি নদীর পূর্বপাড়ে জাঙ্গালিয়া গ্রামে আশ্রায়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় সম্প্রতি ১৩টি ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে ঘর হস্তান্তর করা হয়। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে সাগর ও আবদুল্লাহ আশ্রয়ন প্রকল্পের বসতিদের বাড়িতে যান।
তাঁরা দুইজন পরিবার প্রতি দশ হাজার টাকা দাবি করেন। একটি ফরমে স্বাক্ষর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে আরও ভালো ঘর পাইয়ে দেবে বলে প্রলোভোন দেয়।
টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁরা আশ্রয়নের বসতি লোকজনের সাথে বাক বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে ওবায়দুর নামের এক ব্যক্তিকে মারধোর করেন। এসময় লোকজন জড়ো হয়ে ধাওয়া করে সাগরকে আটকে রাখে ও আবদুল্লাহ পালিয়ে যান।
পরে তাঁরা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রামানন্দ পালকে মোবাইল ফোনে জানান। পরে পুলিশ গিয়ে সাগরকে গ্রেফতার করে।
সাগর নিজেকে ফেসবুকভিত্তিক 'মাগুরা সংবাদ ডটকম' নামের স্থানীয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক ও একটি মানবাধিকার সংগঠনের চেয়ারম্যান বলে দাবি করেন। সাগরের বাবা আকরাম হোসেন গণপূর্ত বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী। তাঁর স্ত্রী ও চার বছরের একটি পুত্রসন্তান রয়েছে।
কারাগারে নেওয়ার আগে সাগর বলেন, মিথ্যা অভিযোগে তাঁদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করা হয়েছে।
মহম্মদপুর উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি হানিফ শেখ বলেন, আবদুল্লাহ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক। তিন বছরের কমিটির মেয়াদ শেষে এক বছর পার হয়ে গেছে। কেউ অপরাধ করলে দায় তাঁর নিজের, সংগঠনের নয় বলে তিনি জানান।
মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসির উদ্দীন জানান, গত রাতে আশ্রায়ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের হাতে আটক সাগরকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। আজ মামলার পর তাঁকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। আরেক আসামী আবদুল্লাহ ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন। পুলিশ অভিযুক্ত সাগরের কাছ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দফতরের ভুয়া ফরম ও আবেদনের কাগজপত্র জব্দ করেন এবং এ ঘটনায় তদন্ত চলছে।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) রামানন্দ পাল জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার আশ্রায়ন প্রকল্পের-২ এর সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে প্রতারনার মাধ্যমে চাঁদা দাবি ও মারধোরের ঘটনায় মামলা হয়েছে।