ইসমাইল হােসেন বাবুঃ
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় জামা কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্কুল থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। অপহরণের ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয় ক্যাম্প পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাশ্ববর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা শহর থেকে ওই স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করেছে।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নারীসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার(১৪ আগষ্ট) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের পাটিকাবাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আটক হওয়া ব্যক্তিরা হলেন পাটিকাবাড়ী গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী পায়রা খাতুন(২৮) ও একই ইউনিয়নের মাজিলা গ্রামের বাসিন্দা নিশান(৩০)। পুলিশ জানায় এর আগেও পায়রা খাতুনের বিরুদ্ধে এক স্কুল ছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে গিয়ে কান থেকে স্বর্ণের রিং খুলে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে আটক হওয়া ব্যক্তিরা অপহরণের ঘটনায় একে অপরকে দায়ী করছেন।
পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, স্কুলে দ্বিতীয় ক্লাস শুরুর আগে পায়রা খাতুন নামে এক প্রতিবেশী নারী ওই ছাত্রীকে জামা কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে স্কুল থেকে নিয়ে যায়। এরপর বেলা ১২টার দিকে স্কুল ছুটি হওয়ার পর বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের লোকজন খোঁজ করে। এ সময় তারা স্কুল থেকে জানতে পারে খালা পরিচয় দিয়ে এক নারী স্কুল ছাত্রীকে নিয়ে গেছে। তাৎক্ষনিক প্রধান শিক্ষক বিষয়টি স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পকে জানালে তারা অভিযানে নামে। পুলিশ ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করে স্কুল ছাত্রীকে আলমডাঙ্গা শহর থেকে উদ্ধার করে।
স্কুল ছাত্রীর সাথে কথা হলে জানায় পায়রা খালা স্কুলে এসে বলে আমার খালা আমার জন্য নতুন জামা কিনে রেখেছে। আনার জন্য তার সাথে যেতে বলেছে। সেই কথা শুনে আমি তার সাথে গেছিলাম। তারপর পায়রা খালা আমাকে ভ্যানে করে আলমডাঙ্গা নিয়ে গেছিল। পাটিকাবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জহুরুল ইসলাম বলেন স্কুলে এসে ওই নারী পরিচয় দেয় সে ওই ছাত্রীর খালা। তাকে নিয়ে যেতে এসেছে। এরপর স্কুল ছুটি হওয়ার পরও বাড়িতে না ফিরলে পরিবারের সদস্যরা খোঁজ করলে বিষয়টি তাৎক্ষনিক পুলিশকে জানানো হয়।
স্কুল ছাত্রীর মা বলেন এটা একটা পরিকল্পনা ঘটনা। মেয়েকে ওরা অপহরণ করেছিল। আমার মেয়ের কানেও সোনার দুল ছিল। তাছাড়া স্কুল থেকে ও কেন আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। মেয়ের ক্ষতি করার জন্য নিয়ে গিয়েছিল। আমি এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
অভিযুক্ত পায়রা খাতুন বলেন নিশান নামে একজন আমাকে স্কুল থেকে বাচ্চাটিকে নিয়ে যেতে বলেছিল। নিশানের সাথে আমার মোবাইলে পরিচয় হয়েছিল। তবে কেন নিয়ে যেতে বলেছিল তা আমি জানি না। তার আগেই পুলিশ আমাদের ধরে ফেলেছে। এর আগেও এক ছাত্রীকে ফুঁসলিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে পায়রা বলেন আমি কোন ক্ষতি করিনি। বাচ্চাটিকে ফেরত দিয়েছিলাম। নিশানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমি বাচ্চাটিকে চিনি না। পায়রা যে ভ্যানে আলমডাঙ্গা গিয়েছিল আমিও সেই ভ্যানে গিয়েছিলাম।
এ বিষয়ে পাটিকাবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই নুর-নবী বলেন, মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এরা কোন চক্র কিনা তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে যতটুকু জানা গেছে এটা একটা পরিকল্পিত ঘটনা। এর আগেও আটক হওয়া নারীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম
মুরসিদ (লিটু সিকদার)। মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর। মোবাইলঃ ০১৭১১ ৯৩৯৪৪৫