পটুয়াখালীর বাউফলে দিব্যি সুস্থ মানুষ প্রতিবন্ধী সেজে নিয়মিত ভাতা তুলছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের কাদের মাস্টারের ছেলে মিজানুর রহমান একজন সুস্থ-সবল মানুষ। পেশায় তিনি একজন কৃষক। তার রয়েছে একাধিক মাছের ঘের ও কৃষি খামার। তিনি পাচ্ছেন অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা। একই গ্রামের চান্দু হাওলাদারের মেয়ে নুরজাহান বেগম ও চাঁন মিয়া ফরাজীর ছেলে আব্দুল হক ফরাজীর নাম রয়েছে প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায়। তাদের কেউ প্রতিবন্ধী না।
আব্দুল হক ফরাজী কীটনাশক ব্যবসায়ী আর নুরজাহান গৃহিণী। শুধু তারাই নয়, জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা ভোগ করছেন ওই গ্রামের আফসের মল্লিকের মেয়ে নিলুফা বেগম ও জোনাব আলী খানের মেয়ে সাদেজা বেগম।
স্থানীয়রা জানান, তারা কেউই প্রতিবন্ধী না। সবাই সুস্থ-সবল মানুষ। স্থানীয় খলিল মেম্বার টাকা খেয়ে তাদের প্রতিবন্ধীর তালিকায় নাম দিয়েছেন। এতে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত প্রতিবন্ধীরা। সুস্থ হয়েও কেন প্রতিবন্ধী ভাতা নেন? এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কেশবপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান বাউফল হাসপাতালের বিশেষ একটা চক্রকে ম্যানেজ করে জালিয়াতির মাধ্যমে সুস্থ মানুষদের নামে প্রতিবন্ধী মেডিকেল সনদ সংগ্রহ করেন। পরে সমাজসেবা অফিস থেকে প্রতিবন্ধী পরিচয়পত্র নিয়ে তাদেরকে প্রতিবন্ধী ভাতার তালিকায় নিয়ে আসেন। এর বিনিময়ে খলিল মেম্বার প্রতি নামের বিনিময়ে হাতিয়ে নেন ৫ থেকে ৭ হাজার করে টাকা।
এ বিষয়ে খলিলুর রহমান বলেন, আমার কাছে প্রতিবন্ধী ভাতার জন্য আসলে আমি সুপারিশ করে হাসপাতালে পাঠাতাম। ডাক্তাররা তাদের প্রতিবন্ধী সনদ দেয়ার পর তারা সমাজসেবা অফিসের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়েছেন। সুস্থ ব্যক্তিদের কোন স্বার্থে প্রতিবন্ধী হিসেবে সুপারিশ করলেন? এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি।
৪নং ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার আসাদুল হক জুয়েল বলেন, নামধারী প্রতিবন্ধীদের তালিকা তৈরি করে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হবে।
কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সালেহ উদ্দিন পিকু বলেন, আমি নতুন চেয়ারম্যান, সাবেক চেয়ারম্যানের সময় এমন ঘটনা ঘটেছে।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা সাংবাদিকদের বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাউফল উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবন্ধী মেডিকেল সনদ ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রতিবন্ধী যাচাই-বাছাই কমিটির মাধ্যমে তালিকা আমাদের কাছে জমা দেয়া হয়। আমরা শুধু এটা বাস্তবায়ন করি। যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মোঃ মুরসিদ আহমেদ সিকদার, মোবাইল : 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর, ই-মেইলঃ [email protected]
Copyright © August, 2020-2025 @ Daily Somoyer Protyasha