ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে লিমন নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে হাতুড়ি পেটা করে মারাত্মক জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদীতে অবস্থিত কাদিরদী কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ২য় বর্ষের ছাত্র। শনিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার চতুল ইউনিয়নের ধুলপুকুরিয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পৌরসভার আধারকোঠা গ্রামের সাজ্জাদ বিশ্বাসের ছেলে রাশেদ বিশ্বাস (২২) নামে একজনকে আটক করেছে বোয়ালমারী থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। লিমন দুর্গাপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে।
জানা গেছে, উপজেলা ছাত্রলীগকর্মী লিমন (১৮) বোয়ালমারীতে ছাত্রলীগের একটি প্রোগ্রাম শেষে তিন বন্ধুর সাথে মোটরসাইকেলযোগে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে অবস্থিত নিজ বাড়ি ফিরছিলেন। দুপুর দেড়টার দিকে চতুল ইউনিয়নের ধুলপুকুরিয়া গ্রামের ডা. দিলীপ রায় হোমিওপ্যাথি কলেজের সামনে পৌঁছলে বোয়ালমারী পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের আধারকোঠা গ্রামের জনৈক শাকিল মোবাইলে কল দিয়ে লিমনকে জরুরি কথা আছে বলে ধুলপুকুরিয়ার ওই স্থানেই থামতে বলে। শাকিল স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র এবং সে লিমনের পূর্ব পরিচিত।
কয়েক মিনিট পর শাকিলসহ ৫ জন ভ্যানযোগে এসে লিমনকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে পালিয়ে যায়। হামলায় লিমনের মাথা থেতলে গেছে এবং একটি চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে লিমনের দুই বন্ধু স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসে। সেখানে তাকে চিকিৎসা শেষে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বোয়ালমারী থানা পুলিশ রাশেদ নামে একজনকে আটক করেছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিক বলেন, করোনায় স্বাস্থবিধি বজায় রেখে শনিবার সকালে পৌরসদরের ডাকবাংলো মোড়ে উপজেলা ও পৌর শাখার আয়োজনে পথচারীদের মাঝে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও শুকনা খাবার বিতরণের প্রোগ্রাম ছিলো। সেখানে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান ও সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদসহ আমরা প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলাম।
এ উপজেলার প্রতি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে করোনায় মাস্ক ও শুকনা খাবার বিতরণ করার জন্য সকলকে ডাকবাংলো মোড়ে ডাকা হয়। সেখান থেকে লিমন মোল্যা এসব মালামাল নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিল। পরে জানতে পারি চতুলের ধুলপুকুরিয়া এলাকায় লিমনের ওপর হামলা হয়েছে। আমরা হামলাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার জন্য দাবী জানাচ্ছি।
বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নাউম হোসাইন জানান, লিমন মোল্যা নামে একটি ছেলের শরীরে হাতুড়ির পিছন দিয়ে পিটিয়ে জখম অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তার মাথায় ও মুখে ছয়টি স্থানে জখম হয়েছে। সব মিলে জখমস্থানে ২৫টির বেশি সেলাই দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, ছাত্রলীগ এক কর্মীর ওপর হামলার ঘটনার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। পরে হাসপাতালে ওই ছেলেটির সাথে পুলিশের কথা হয়েছে। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত দৃষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।