ইসমাইল হােসেন বাবুঃ
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মেলা বসানো নিয়ে বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া মেলার দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২০ মে) সন্ধ্যায় উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হোগলা চাপাইগাছি বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
.
বিএনপির আহতরা হলেন খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান, বাঁখই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক টিপু সুলতান, গফুর শেখের ছেলে সুকুর শেখ, আজিজুলের ছেলে শরীফ, আসাকুর রহমান। তারা বিএনপির কর্মী-সমর্থক। তারা কুষ্টিয়া সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
.
জামায়াতের আহতরা হলেন জগন্নাথপুর ইউনিয়ন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, জামায়াত কর্মী কুদ্দুস প্রামাণিক (৭০), শহিদুলের ছেলে তুহিন হোসেন, আক্কাস আলীর ছেলে জিহাদ হোসেন, সুকচাঁদের ছেলে জামাত আলী, জালালের ছেলে ইউনুস আলী। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
.
মঙ্গলবার বিকেল থেকে এলাকায় উভয়দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ দফায় দফায় টহল দেয়। তবুও একপর্যায়ে সন্ধ্যায় উভয়পক্ষের মধ্যে পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
.
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দেড়শ বছর ধরে হোগলা চাপাইগাছি বাজারে গাজীকালু - চম্পাবতী মেলার আয়োজন করে আসছেন স্থানীয়রা। তবে মেলায় অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়া খেলার অভিযোগ তুলে বন্ধের দাবি তোলেন জামায়াত ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। আর প্রশাসনের অনুমতি না মিললেও বিএনপির সমর্থকরা মেলা বসানোর চেষ্টা করেন।
.
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সংঘর্ষের সময় অস্ত্র, হাঁসুয়া, রামদা, লাঠিসোটা নিয়ে অন্তত ৩০টি দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
.
প্রত্যক্ষদর্শী ও বাজারের কলা ব্যবসায়ী মফি শেখের ছেলে নাদের শেখ (৬৫) বলেন, শত বছর ধরে মেলা হয়ে আসছে। আজ দেখলাম দুই পক্ষের মারামারি। জামায়াতের লোক বেশি ছিল। তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র ছিল।
.
মেলায় হরেক মালের দোকান বসিয়েছেন পাবনার চাটমোহরের দিলবার হোসেনের ছেলে আরজ আলী। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আসরের পর থেকে জামায়াত-শিবিরের লোকজন বার বার উঠে যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছিলেন। পরে সন্ধ্যার একটু আগে কয়েকশ টুপিপরা লোক রামদা, হাঁসুয়া ও লাঠিসোঁটা নিয়ে দোকানে হামলা চালায়। ভয়ে পালিয়ে যাই। পরে এসে দেখি মালামাল কিছুই নেই। প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
.
রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, জামায়াতের নেতাকর্মীরা ভিড় করেছেন। আহতদের চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাদের দেখতে ছুটে এসেছেন উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আফজাল হোসাইন।
.
এসময় হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে জগন্নাথপুর ইউনিয়ন উলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, মেলায় অশ্লীল কর্মকাণ্ড ও জুয়ার আসর বসানো হয়। সেজন্য প্রশাসন অনুমতি দেয়নি। তবুও বিএনপি ও মেলা কমিটি মেলার আয়োজন করে। আমরা মেলার বিষয় জানতে গেলে প্রতিপক্ষরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে।
.
এদিকে বিএনপির সমর্থক ও খোকসা সরকারি কলেজের প্রভাষক সরাফাত সুলতান বলেন, জামায়াতের শত শত লোক আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। বিচারের আশায় থানায় মামলা করবো।
.
মেলায় এবার অনুমতি মেলেনি বলে জানিয়েছেন কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোলায়মান শেখ। তিনি বলেন, মেলা বসানো নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন এলাকার পরিবেশ শান্ত। লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম
মুরসিদ (লিটু সিকদার)। মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর। মোবাইলঃ ০১৭১১ ৯৩৯৪৪৫