মোঃ নূর -ই- আলম (কাজী নূর)
"ঘুমাইয়া কাযা করেছি ফজর/তখনো জাগিনি যখন জোহর/হেলায় খেলায় কেটেছে আসর/মাগরিবের ঐ শুনি আযান/জামাত শামিল হও রে এশাতে/এখনো জামাতে আছে স্থান"। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা এ গানের কয়েক লাইন উদ্ধৃত করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেছেন, এখনো সময় আছে ফারাক্কা নিয়ে রুখে দাঁড়াবার। এজন্য আমাদের জাতীয় ঐক্যমত গড়ে তুলতে হবে। জাতিকে ঐকবদ্ধ করতে হবে। জনগণের সমর্থনের ভিত্তিতে আমাদের এমন একটি সরকার প্রয়োজন, যে নতজানু হবে না এবং পাশ্ববর্তী দেশের সাথে চোখে চোখ রেখে নিজের স্বার্থের কথা বলবে। যে সরকার কাউকে বন্ধু নয়, নিজের স্বার্থটি দেখবে। কারন রাষ্ট্রের কখনো বন্ধু হয় না। রাষ্ট্রের হয় স্বার্থ।
.
শুক্রবার (১৬ মে) বিকাল ৪টায় জিয়া পরিষদ যশোরের আয়োজনে 'প্রেসক্লাব যশোর' অডিটোরিয়ামে 'ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস ও আজকের ভাবনা' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
.
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অধ্যাপক নার্গিস বেগম আরো বলেন, ফারাক্কা কোন রাজনৈতিক দলের ইস্যু নয়। ফারাক্কা আজ সমস্ত জাতির অস্তিত্বের প্রশ্ন। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে ফারাক্কা ইস্যুতে আমাদের সকলকে ঐকবদ্ধ হতে হবে। ভারতের কাছ থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা বুঝে নিতে হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে। এ সময় তিনি পরিবেশ আন্দোলনকারীদের ফারাক্কা ইস্যু সোচ্চার হবার আহবান জানান। তাদের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, এখন থেকে আন্দোলন গড়ে তুলে বিশ্ব দরবারে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।
.
আবদুল হামিদ খান ভাসানীর প্রসঙ্গ টেনে প্রধান অতিথি আরো বলেন, ১৯৭৬ সালের ১৬ মে তিনি বলেছিলেন বাংলাদেশের মানুষ একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায় না। ভারত পানির ন্যায্য হিস্যা না দিলে তিনি ভারতীয় পণ্য বর্জনের হুশিয়ারি দিয়েছিলেন। তার মতো প্রাজ্ঞ রাজনীতিবীদের ডাকে সেদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ৬৪ কিলোমিটার পথ হেঁটে কানসাট পর্যন্ত গিয়েছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সেদিন মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে ভীত হয় সীমান্তে সৈন্য জড়ো করেছিলেন।
.
অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের বোঝানো হয় ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। কিন্ত তাদের কাছে আমরা বন্ধুত্বপূর্ণ কোন আচরণ দেখিনি। ১৯৭৬ সালের ১৬ মে ভাসানীর নেতৃত্বে যে লংমার্চ হয় সেদিন ট্রেনে যাতায়াত ফ্রি করা হয়েছিল। তখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিলেন জিয়াউর রহমান। ট্রেন ভাড়া ফ্রি করায় প্রমানিত হয়, জিয়াউর রহমান মাওলানা ভাসানীর লংমার্চের পক্ষে ছিলেন। আজকের দিনে ভাবতে হবে ফারাক্কার বিপরীতে আমরা বিকল্প কি করতে পারি। আমাদের ভয়ের কিছু নেই। ফারাক্কা সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে হবে। ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
.
জিয়া পরিষদ যশোরের সভাপতি অধ্যাপক (অব.) ফিরোজা খাতুনের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আজিজুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, যশোর জেলা বিএনপি'র সভাপতি অ্যাড. সাবেরুল হক সাবু, সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. মোহাম্মদ ইসহক।
.
আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধ্যক্ষ পাভেল চৌধুরী, লেখক গবেষক মফিজুর রহমান রুননু। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জিয়া পরিষদ যশোরের সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন বিএনপি নেতা বাদশা জামান, কৃষক দল নেতা মকবুল হোসেন, জিয়া পরিষদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাসউদ জামান প্রমুখ।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এ. এস.এম
মুরসিদ (লিটু সিকদার)। মোবাইল: 01728 311111
ঢাকা অফিসঃ হোল্ডিং-১৩, লাইন-৬, রোড- ১২, ব্লক-বি, মিরপুর-১১, ঢাকা-১২১৬।
ফরিদপুর অফিসঃ মুজিব সড়ক, ফরিদপুর। মোবাইলঃ ০১৭১১ ৯৩৯৪৪৫