ঢাকা , সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মধুখালীতে দোয়া মাহফিল ও গণমাধ্যম কর্মিদের সাথে মতবিনিময় Logo বাঘায় মুক্তিযোদ্ধার সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী চাঁদের মতবিনিময় Logo শিবগঞ্জে চোখ উপড়ে পাহারাদারকে হত্যা Logo মধুখালীতে সাংবাদিক সাগর চক্রবর্তীর মোটরসাইকেল চুরি Logo বালিয়াকান্দিতে মোবাইলকোট পরিচালনায় দুই ট্রলি চালককে জরিমানা  Logo বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য পালশা ডে নাইট শর্ট পিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত Logo তানোর বিএনপির রাজনীতিতে জাহাঙ্গীরকে দায়িত্বশীল পদে দেখতে চায় তৃণমুল Logo কালুখালীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত Logo তানোরে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু Logo হিলিতে বিদুৎ স্পৃষ্টে নিহত-১আহত হয়েছে ৬ জন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

“হাল না ছাড়া নারীর নামই ফাতেমা খাতুন।”

তাসলিমা আক্তার বিথীঃ

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার বাসিন্দা ফাতেমা খাতুন, একজন সংগ্রামী নারী উদ্যোক্তা। সমাজে নারীর উন্নয়ন ও স্বাবলম্বিতার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে। নিজ উদ্যোগে পরিবার, সমাজ ও কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে প্রতিদিন লড়ে যাচ্ছেন দৃঢ়তা ও নিষ্ঠা দিয়ে।

ছোটবেলা থেকেই ফাতেমার স্বপ্ন ছিল নিজে কিছু করার। কিন্তু সেই পথে চলা সহজ ছিল না। অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়ে বুঝে গিয়েছিলেন জীবনের কঠিন বাস্তবতা—নিজেকে গড়ে তুলতে হবে নিজের চেষ্টায়।
পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি যুক্ত ছিলেন গার্লস গাইড, চক্ষু শিবির, রেড ক্রিসেন্ট, জাবারাং কল্যাণ সমিতি সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে। পেয়েছেন ঢাকায় ক্ষুদে সাংবাদিকতার ট্রেনিং, গ্লোবাল ভিলেজ ও নানা প্রশিক্ষণের সুযোগ।

২০১৫ সালে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরি পেলেও সংসার ও সন্তানের কারণে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। জীবনের এই সময়টি ছিল মানসিক ও শারীরিকভাবে কঠিন এক অধ্যায়। ডেঙ্গু ও রক্তের জটিলতা পেরিয়েও মানুষের ভালোবাসা ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আবার উঠে দাঁড়ান তিনি।

এরপর ২০২০ সালের করোনাকালীন সময় তার জীবনে নতুন মোড় আনে। এক মাসের সিজারিয়ান বাচ্চা নিয়ে তিনি শুরু করেন নিজ হাতে তৈরি ফ্রোজেন রুটি বিক্রির ব্যবসা—অনলাইন ও অফলাইনে। একা হাতে শুরু করা এই যাত্রা ভালো সাড়া পায়, এবং পরে তিনি একজন মহিলা কর্মীও নিয়োগ দেন।
রুটির পর এবার হাতে তৈরি ঘি, মধু, সরিষার তেল, নারিকেল তেল, দই ও মাশরুম পণ্যে ব্যবসার পরিধি বাড়ান ফাতেমা। অদম্য পরিশ্রম, ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাসই তার সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। আজ তার পণ্য ছড়িয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ির গণ্ডি পেরিয়ে দেশ ও দেশের বাইরে।

এখন তিনি স্থানীয় কয়েকজন নারীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন, যা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। ফাতেমা খাতুনের বিশ্বাস- “নারী চাইলে পারে। নারী শুধু নিজের নয়, সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও বড় ভূমিকা রাখতে পারে।”

আজ তিনি একজন সফল ও স্বাবলম্বী নারী উদ্যোক্তা। তার লক্ষ্য, অন্য নারীদের অনুপ্রাণিত করা—যেন তারাও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, নিজের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসে।

জয়িতা অ্যাওয়ার্ড তাকে আরও অনুপ্রাণিত করবে সমাজের অন্য নারীদের পাশে দাঁড়াতে এবং পরিবর্তনের আলো ছড়িয়ে দিতে এই বিশ্বাস নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন ফাতেমা খাতুন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

কুষ্টিয়ায় পাশাপাশি খোঁড়া হয় তিনটি কবর, দাফনসম্পন্ন

error: Content is protected !!

“হাল না ছাড়া নারীর নামই ফাতেমা খাতুন।”

আপডেট টাইম : ১০:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর ২০২৫
তাসলিমা আক্তার বিথী, খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি :

তাসলিমা আক্তার বিথীঃ

খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার বাসিন্দা ফাতেমা খাতুন, একজন সংগ্রামী নারী উদ্যোক্তা। সমাজে নারীর উন্নয়ন ও স্বাবলম্বিতার জন্য তিনি কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে। নিজ উদ্যোগে পরিবার, সমাজ ও কর্মক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে প্রতিদিন লড়ে যাচ্ছেন দৃঢ়তা ও নিষ্ঠা দিয়ে।

ছোটবেলা থেকেই ফাতেমার স্বপ্ন ছিল নিজে কিছু করার। কিন্তু সেই পথে চলা সহজ ছিল না। অল্প বয়সে বাবাকে হারিয়ে বুঝে গিয়েছিলেন জীবনের কঠিন বাস্তবতা—নিজেকে গড়ে তুলতে হবে নিজের চেষ্টায়।
পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি যুক্ত ছিলেন গার্লস গাইড, চক্ষু শিবির, রেড ক্রিসেন্ট, জাবারাং কল্যাণ সমিতি সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে। পেয়েছেন ঢাকায় ক্ষুদে সাংবাদিকতার ট্রেনিং, গ্লোবাল ভিলেজ ও নানা প্রশিক্ষণের সুযোগ।

২০১৫ সালে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরি পেলেও সংসার ও সন্তানের কারণে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। জীবনের এই সময়টি ছিল মানসিক ও শারীরিকভাবে কঠিন এক অধ্যায়। ডেঙ্গু ও রক্তের জটিলতা পেরিয়েও মানুষের ভালোবাসা ও সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আবার উঠে দাঁড়ান তিনি।

এরপর ২০২০ সালের করোনাকালীন সময় তার জীবনে নতুন মোড় আনে। এক মাসের সিজারিয়ান বাচ্চা নিয়ে তিনি শুরু করেন নিজ হাতে তৈরি ফ্রোজেন রুটি বিক্রির ব্যবসা—অনলাইন ও অফলাইনে। একা হাতে শুরু করা এই যাত্রা ভালো সাড়া পায়, এবং পরে তিনি একজন মহিলা কর্মীও নিয়োগ দেন।
রুটির পর এবার হাতে তৈরি ঘি, মধু, সরিষার তেল, নারিকেল তেল, দই ও মাশরুম পণ্যে ব্যবসার পরিধি বাড়ান ফাতেমা। অদম্য পরিশ্রম, ধৈর্য ও আত্মবিশ্বাসই তার সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। আজ তার পণ্য ছড়িয়ে পড়েছে খাগড়াছড়ির গণ্ডি পেরিয়ে দেশ ও দেশের বাইরে।

এখন তিনি স্থানীয় কয়েকজন নারীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছেন, যা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে। ফাতেমা খাতুনের বিশ্বাস- “নারী চাইলে পারে। নারী শুধু নিজের নয়, সমাজের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও বড় ভূমিকা রাখতে পারে।”

আজ তিনি একজন সফল ও স্বাবলম্বী নারী উদ্যোক্তা। তার লক্ষ্য, অন্য নারীদের অনুপ্রাণিত করা—যেন তারাও নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, নিজের স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে আসে।

জয়িতা অ্যাওয়ার্ড তাকে আরও অনুপ্রাণিত করবে সমাজের অন্য নারীদের পাশে দাঁড়াতে এবং পরিবর্তনের আলো ছড়িয়ে দিতে এই বিশ্বাস নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন ফাতেমা খাতুন।


প্রিন্ট