ঢাকা , রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo মধুখালীতে দোয়া মাহফিল ও গণমাধ্যম কর্মিদের সাথে মতবিনিময় Logo বাঘায় মুক্তিযোদ্ধার সাথে সংসদ সদস্য প্রার্থী চাঁদের মতবিনিময় Logo শিবগঞ্জে চোখ উপড়ে পাহারাদারকে হত্যা Logo মধুখালীতে সাংবাদিক সাগর চক্রবর্তীর মোটরসাইকেল চুরি Logo বালিয়াকান্দিতে মোবাইলকোট পরিচালনায় দুই ট্রলি চালককে জরিমানা  Logo বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য পালশা ডে নাইট শর্ট পিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত Logo তানোর বিএনপির রাজনীতিতে জাহাঙ্গীরকে দায়িত্বশীল পদে দেখতে চায় তৃণমুল Logo কালুখালীতে জাতীয় সমবায় দিবস পালিত Logo তানোরে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু Logo হিলিতে বিদুৎ স্পৃষ্টে নিহত-১আহত হয়েছে ৬ জন
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

দুই যুগ ধরে ধুঁকছে কুষ্টিয়ার জিয়া শিশু পার্ক

ইসমাইল হােসেন বাবুঃ

কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিশু পার্ক’। একসময় এই পার্ক ছিল শিশুদের হাসি-আনন্দ আর পারিবারিক বিনোদনের প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু আজ প্রায় দুই দশক ধরে পার্কটি পড়ে আছে অবহেলা, অযত্ন ও রাজনৈতিক বিতর্কের ছায়ায়। কুষ্টিয়াবাসীর দাবি শুধু ‘জিয়া’ নামের কারণেই এই পার্কটি ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছে এক পরিত্যক্ত স্থানে।

 

১৯৮০-৯০ দশকে প্রতিষ্ঠিত এই পার্কে ছিল পুকুর, সুইমিং পুল, হাঁটার পথ, শিশুদের খেলাধুলার সরঞ্জাম এবং হরিণসহ বিভিন্ন প্রাণী। একসময় এখানে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী আসতেন। কিন্তু এখন দিনে ৫০ জন দর্শনার্থীও পাওয়া যায় না। শিশুদের হাসির জায়গাটি আজ প্রেমিক যুগল ও বখাটে তরুণদের নিরিবিলি আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে।

প্রধান ফটকে মোজাইকের ওপর লেখা ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিশু পার্ক’ কথাটি এখন মলিন ও ক্ষয়ে যাওয়া। ভেতরে কাউন্টারে দেখা যায় ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম অলস সময় কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন,“আগে যেখানে শত শত মানুষ আসতো, এখন সারাদিনে ২০-৩০ জন দর্শনার্থী আসে। মানুষের আগ্রহই কমে গেছে।

 

কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিশু পার্ক। একসময় মানুষের ভিড় লেগে থাকা পার্কে এখন দিনেও মেলে না ৫০ জন দর্শনার্থী। একটু বিনোদনের আশায় শিশু-সন্তানদের নিয়ে শহরের বাসিন্দারা দূর গ্রামে ছুটলেও ঘরের কোণে থাকা পার্কটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে পার্কটি প্রেমিক যুগল আর বখাটে ছেলেদের নিরিবিলি আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। এইপার্কে শিশুদের পদচারণা নেই। শুধু ‘জিয়া’ নামের কারণে প্রায় দুই দশক ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে পার্কটি। দেখার কেউ নেই।

 

নব্বই দশকের কোনো একসময়ে প্রতিষ্ঠিত পার্কটিতে রয়েছে পুকুর, সুইমিং পুল, হাঁটার রাস্তা ও শিশুদের বিনোদনের জন্য হরিণসহ কয়েক প্রজাতির পশুপাখি। তবে সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় পার্কটি দিন দিন তার জৌলুস হারিয়েছে। বিশাল আয়তনের পুকুরটিতে একসময় মাছ চাষ হলেও বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে।

 

সরেজমিনে পার্কে গিয়ে দেখা যায়, পার্কে ঢুকতেই ভেতরে কাউন্টার। সেখানে দেখা গেলো, ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম বসে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, সারাদিনে ১৫/২০ জন দর্শনার্থী আসে। অথচ একটা সময় অনেক মানুষ আসতো। এখন আর তেমন আগ্রহ নেই মানুষের। পার্কে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে একটি সুইমিং পুল। সেখানে শিশু-কিশোরদের সাঁতার শেখানোর উদ্যোগে সাড়া মিললেও পর্যাপ্ত ট্রেনার ও সুযোগ-সুবিধা না থাকায় আগ্রহ হারাচ্ছেন অভিভাবকরা।

 

প্রধান গেটে মোজাইকের ওপর ছবিসহ কালো কালি দিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কথাটি বড় অক্ষরে আর লাল কালি দিয়ে ছোট অক্ষরে শিশু পার্ক লেখা। জায়গায় জায়গায় মোজাইক উঠে গিয়ে ইট দেখা যাচ্ছে। এক নজর তাকালেই বোঝা যাবে দীর্ঘদিন এখানে সংস্কার বা যত্নের কোন ছোয়া লাগেনি।

 

পার্কের মাঝামাঝি খাঁচায় কবুতর ও শেষ প্রান্তে একটি বড় খাঁচায় ১৫টি হরিণ রয়েছে। হরিণগুলোর জন্য খাঁচার ভেতর কোনো খাবার দেখা না গেলেও দায়িত্বশীলরা জানান, প্রতিদিনই ঘাস ও অন্যান্য খাবার দেওয়া হয় হরিণগুলোকে।

 

পার্কের ডানপাশে পুকুরের চারদিকে বন-জঙ্গল। সাপ-পোকার ভয়ে পুকুরপাড়ে হাঁটা দায়। ঘুরতে আসা দর্শনার্থী সবাই উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণী।

 

শহরের সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নোংরা রাজনীতির বলি হয়ে রয়েছে এক সময়ের কোলাহল পূর্ণ এই শিশু পার্কটি। শুধু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম থাকায় পার্কটি গত প্রায় দুই দশক ধরে অযত্ন-অবহেলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

 

সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের দাবি, নোংরা রাজনীতির অংশ হিসেবে শুধু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে হওয়ার কারণে পাঁচ মেয়াদে দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর কুষ্টিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করাকালে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার আলী পার্কটির উন্নয়নতো দূরের কথা, দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না করে পার্কটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রেখে দিয়েছেন।

 

এ বিষয়ে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি গুলশানের একটি পার্ক আমরা পরিদর্শন করে দেখেছি। সেটা সবসময় জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকে। সেখানে শহরের বাসিন্দারা বিশ্রাম নিতে পারেন। আমরা সেই আদলেই জিয়াউর রহমান শিশু পার্কটি সাজানোর পরিকল্পনা করছি। খুব শিগগির এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

শিশুদের বিনোদন কেন্দ্র নিয়ে কোনো রাজনীতি হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন পরিবেশকর্মী খলিলুর রহমান মজু। তিনি বলেন, শিশুপার্ক মানে শিশুদের নির্মল বিনোদনের জায়গা। সেখানে রাজনীতি কাম্য না। আমাদের দাবি থাকবে, দ্রুত পার্কটির সংস্কার কাজ করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করা হোক।

 

পার্কটি শুধুমাত্র নামের কারণে প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে অবহেলিত বলে দাবি করেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার। তিনি বলেন, এ কথা সত্য যে;  শুধু নামের কারণেই পার্কটি অযত্ন-অবহেলায় পড়ে ছিল। ৫ আগস্টের পর দলীয়ভাবে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম পরিচালনা করি। তিনি বলেন, সরকারিভাবে দ্রুত পার্কটি সংস্কার করে দর্শনার্থীদের জন্য ব্যবহার উপযোগী হিসেবে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানাই।

 

পরিবেশকর্মী খলিলুর রহমান মজু বলেন, শিশু পার্ক মানে শিশুদের আনন্দ ও নির্মল বিনোদনের স্থান। সেখানে রাজনীতির কোনো স্থান নেই। এই পার্কটি দ্রুত সংস্কার করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করা উচিত।

 

দীর্ঘ দুই দশক অবহেলার পর এবার কুষ্টিয়াবাসীর প্রত্যাশা, রাজনীতির দেয়াল ভেঙে পার্কটি আবার শিশুদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। নাগরিকদের বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে পার্কটি যেন আবার প্রাণ ফিরে পায়, সেই আহ্বান জানাচ্ছেন সবাই।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নে জনগণের আস্থার প্রতীক ধানের শীষের সৈনিক এনামুল হক উকিল

error: Content is protected !!

দুই যুগ ধরে ধুঁকছে কুষ্টিয়ার জিয়া শিশু পার্ক

আপডেট টাইম : ১০:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
ইসমাইল হােসেন বাবু, সিনিয়র ষ্টাফ রিপাের্টার :

ইসমাইল হােসেন বাবুঃ

কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিশু পার্ক’। একসময় এই পার্ক ছিল শিশুদের হাসি-আনন্দ আর পারিবারিক বিনোদনের প্রাণকেন্দ্র। কিন্তু আজ প্রায় দুই দশক ধরে পার্কটি পড়ে আছে অবহেলা, অযত্ন ও রাজনৈতিক বিতর্কের ছায়ায়। কুষ্টিয়াবাসীর দাবি শুধু ‘জিয়া’ নামের কারণেই এই পার্কটি ধীরে ধীরে পরিণত হয়েছে এক পরিত্যক্ত স্থানে।

 

১৯৮০-৯০ দশকে প্রতিষ্ঠিত এই পার্কে ছিল পুকুর, সুইমিং পুল, হাঁটার পথ, শিশুদের খেলাধুলার সরঞ্জাম এবং হরিণসহ বিভিন্ন প্রাণী। একসময় এখানে প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী আসতেন। কিন্তু এখন দিনে ৫০ জন দর্শনার্থীও পাওয়া যায় না। শিশুদের হাসির জায়গাটি আজ প্রেমিক যুগল ও বখাটে তরুণদের নিরিবিলি আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে।

প্রধান ফটকে মোজাইকের ওপর লেখা ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিশু পার্ক’ কথাটি এখন মলিন ও ক্ষয়ে যাওয়া। ভেতরে কাউন্টারে দেখা যায় ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম অলস সময় কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন,“আগে যেখানে শত শত মানুষ আসতো, এখন সারাদিনে ২০-৩০ জন দর্শনার্থী আসে। মানুষের আগ্রহই কমে গেছে।

 

কুষ্টিয়া শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শিশু পার্ক। একসময় মানুষের ভিড় লেগে থাকা পার্কে এখন দিনেও মেলে না ৫০ জন দর্শনার্থী। একটু বিনোদনের আশায় শিশু-সন্তানদের নিয়ে শহরের বাসিন্দারা দূর গ্রামে ছুটলেও ঘরের কোণে থাকা পার্কটি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে পার্কটি প্রেমিক যুগল আর বখাটে ছেলেদের নিরিবিলি আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। এইপার্কে শিশুদের পদচারণা নেই। শুধু ‘জিয়া’ নামের কারণে প্রায় দুই দশক ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে পার্কটি। দেখার কেউ নেই।

 

নব্বই দশকের কোনো একসময়ে প্রতিষ্ঠিত পার্কটিতে রয়েছে পুকুর, সুইমিং পুল, হাঁটার রাস্তা ও শিশুদের বিনোদনের জন্য হরিণসহ কয়েক প্রজাতির পশুপাখি। তবে সুষ্ঠু পরিবেশ না থাকায় পার্কটি দিন দিন তার জৌলুস হারিয়েছে। বিশাল আয়তনের পুকুরটিতে একসময় মাছ চাষ হলেও বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে।

 

সরেজমিনে পার্কে গিয়ে দেখা যায়, পার্কে ঢুকতেই ভেতরে কাউন্টার। সেখানে দেখা গেলো, ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম বসে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। তিনি বলেন, সারাদিনে ১৫/২০ জন দর্শনার্থী আসে। অথচ একটা সময় অনেক মানুষ আসতো। এখন আর তেমন আগ্রহ নেই মানুষের। পার্কে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে একটি সুইমিং পুল। সেখানে শিশু-কিশোরদের সাঁতার শেখানোর উদ্যোগে সাড়া মিললেও পর্যাপ্ত ট্রেনার ও সুযোগ-সুবিধা না থাকায় আগ্রহ হারাচ্ছেন অভিভাবকরা।

 

প্রধান গেটে মোজাইকের ওপর ছবিসহ কালো কালি দিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কথাটি বড় অক্ষরে আর লাল কালি দিয়ে ছোট অক্ষরে শিশু পার্ক লেখা। জায়গায় জায়গায় মোজাইক উঠে গিয়ে ইট দেখা যাচ্ছে। এক নজর তাকালেই বোঝা যাবে দীর্ঘদিন এখানে সংস্কার বা যত্নের কোন ছোয়া লাগেনি।

 

পার্কের মাঝামাঝি খাঁচায় কবুতর ও শেষ প্রান্তে একটি বড় খাঁচায় ১৫টি হরিণ রয়েছে। হরিণগুলোর জন্য খাঁচার ভেতর কোনো খাবার দেখা না গেলেও দায়িত্বশীলরা জানান, প্রতিদিনই ঘাস ও অন্যান্য খাবার দেওয়া হয় হরিণগুলোকে।

 

পার্কের ডানপাশে পুকুরের চারদিকে বন-জঙ্গল। সাপ-পোকার ভয়ে পুকুরপাড়ে হাঁটা দায়। ঘুরতে আসা দর্শনার্থী সবাই উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণী।

 

শহরের সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নোংরা রাজনীতির বলি হয়ে রয়েছে এক সময়ের কোলাহল পূর্ণ এই শিশু পার্কটি। শুধু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম থাকায় পার্কটি গত প্রায় দুই দশক ধরে অযত্ন-অবহেলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

 

সচেতন নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের নেতাদের দাবি, নোংরা রাজনীতির অংশ হিসেবে শুধু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে হওয়ার কারণে পাঁচ মেয়াদে দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর কুষ্টিয়া পৌরসভার চেয়ারম্যান ও মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করাকালে আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার আলী পার্কটির উন্নয়নতো দূরের কথা, দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না করে পার্কটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রেখে দিয়েছেন।

 

এ বিষয়ে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওয়াহিদুর রহমান বলেন, সম্প্রতি গুলশানের একটি পার্ক আমরা পরিদর্শন করে দেখেছি। সেটা সবসময় জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকে। সেখানে শহরের বাসিন্দারা বিশ্রাম নিতে পারেন। আমরা সেই আদলেই জিয়াউর রহমান শিশু পার্কটি সাজানোর পরিকল্পনা করছি। খুব শিগগির এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

 

শিশুদের বিনোদন কেন্দ্র নিয়ে কোনো রাজনীতি হওয়া উচিত নয় বলে মনে করেন পরিবেশকর্মী খলিলুর রহমান মজু। তিনি বলেন, শিশুপার্ক মানে শিশুদের নির্মল বিনোদনের জায়গা। সেখানে রাজনীতি কাম্য না। আমাদের দাবি থাকবে, দ্রুত পার্কটির সংস্কার কাজ করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করা হোক।

 

পার্কটি শুধুমাত্র নামের কারণে প্রায় দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে অবহেলিত বলে দাবি করেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার। তিনি বলেন, এ কথা সত্য যে;  শুধু নামের কারণেই পার্কটি অযত্ন-অবহেলায় পড়ে ছিল। ৫ আগস্টের পর দলীয়ভাবে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম পরিচালনা করি। তিনি বলেন, সরকারিভাবে দ্রুত পার্কটি সংস্কার করে দর্শনার্থীদের জন্য ব্যবহার উপযোগী হিসেবে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানাই।

 

পরিবেশকর্মী খলিলুর রহমান মজু বলেন, শিশু পার্ক মানে শিশুদের আনন্দ ও নির্মল বিনোদনের স্থান। সেখানে রাজনীতির কোনো স্থান নেই। এই পার্কটি দ্রুত সংস্কার করে শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করা উচিত।

 

দীর্ঘ দুই দশক অবহেলার পর এবার কুষ্টিয়াবাসীর প্রত্যাশা, রাজনীতির দেয়াল ভেঙে পার্কটি আবার শিশুদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হোক। নাগরিকদের বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে পার্কটি যেন আবার প্রাণ ফিরে পায়, সেই আহ্বান জানাচ্ছেন সবাই।


প্রিন্ট