ঢাকা , রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

পদ্মাচরে ঘটনা ভিন্নখাতে নিয়ে সাধারণ মানুষকে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

মোঃ জিয়াউর রহমানঃ 

 

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীর দুর্গম চরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে জড়িত না এমন সাধারণ মানুষকে মামলার আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে নিহত মণ্ডল গ্রুপের পক্ষ থেকে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলাটি করা হয়।

 

এর আগে সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মণ্ডল গ্রুপের সঙ্গে দৌলতপুরের প্রকৌশলী কাকন বাহিনীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অপরাধীদের ধরতে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে পদ্মার চরে অভিযান শুরু করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শতাধিক সদস্য। গোলাগুলিতে দুই পক্ষের তিনজন নিহত হন। নিহতরা হলেন মণ্ডল গ্রুপের আমান মণ্ডল (৩৬), নাজমুল মণ্ডল (২৬) ও কাকন বাহিনীর লিটন (৩০)।

 

স্থানীয়রা বলছেন, ঘটনায় জড়িত নয় এমন কয়েকজন ব্যক্তির নাম-পরিচয় মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি।

 

মরিচা ইউনিয়নের ভুরকা হাটখুলা পাড়া এলাকার মৃত আলিম সরদারের ছেলে উজ্জ্বল সরদার (৪৫) ও তার ভাই রফিকুল সরদারকে মামলার দুই ও তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে। কাকন বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই এমন একটি পরিবারের সদস্যদের এই মামলায় আসামি করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।

 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উজ্জ্বল সরদার দৌলতপুরে নদীভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলার ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি মরিচা এলাকায় ভাঙনরোধে কাজ করছেন। ওই কাজ বন্ধ বা অন্যের হাতে না দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে ও তার ভাইকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

 

মামলার দুই নম্বর আসামি উজ্জ্বল সরদার বলেন সংঘর্ষের সময় আমি আমার বাড়িতে ছিলাম। তার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। অথচ আমাদের দুই ভাইকে মামলার আসামি করা হয়েছে। কাকন বাহিনীর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

 

তিনি আরও বলেন‘আমি একজন ঠিকাদার। দৌলতপুরে নদীভাঙন এলাকায় আমার জিওব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। স্থানীয় সাবেক এক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সেই কাজ বন্ধ করতে বাদীপক্ষকে দিয়ে আমাদের আসামি করিয়েছেন।

 

এ বিষয়ে মামলার বাদী নিহত আমান মণ্ডলের বাবা মিনহাজ মণ্ডল বলেন, নিহত দুজনের মধ্যে একজন আমার ছেলে, অন্যজন ভাগনে। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত না এমন কয়েকজন ব্যক্তিকে মামলার আসামি করার অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।

 

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফয়সাল মাহমুদ দৈনিক সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, মামলার তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হবে, তাদের গ্রেফতার করা হবে। আর যারা নির্দোষ, তারা অবশ্যই অব্যাহতি পাবেন। অপরাধীদের ধরতে সকাল থেকে পদ্মা নদীতে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম কে মনোনয়ন দিলে বিপুল ভোটে বিএনপি’র বিজয় হবে

error: Content is protected !!

পদ্মাচরে ঘটনা ভিন্নখাতে নিয়ে সাধারণ মানুষকে মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ

আপডেট টাইম : ০৮:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
মোঃ জিয়াউর রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি :

মোঃ জিয়াউর রহমানঃ 

 

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীর দুর্গম চরে জমি দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিহতের ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে জড়িত না এমন সাধারণ মানুষকে মামলার আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে নিহত মণ্ডল গ্রুপের পক্ষ থেকে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলাটি করা হয়।

 

এর আগে সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকালে রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মণ্ডল গ্রুপের সঙ্গে দৌলতপুরের প্রকৌশলী কাকন বাহিনীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। অপরাধীদের ধরতে বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে পদ্মার চরে অভিযান শুরু করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শতাধিক সদস্য। গোলাগুলিতে দুই পক্ষের তিনজন নিহত হন। নিহতরা হলেন মণ্ডল গ্রুপের আমান মণ্ডল (৩৬), নাজমুল মণ্ডল (২৬) ও কাকন বাহিনীর লিটন (৩০)।

 

স্থানীয়রা বলছেন, ঘটনায় জড়িত নয় এমন কয়েকজন ব্যক্তির নাম-পরিচয় মামলায় অন্তর্ভুক্ত করে ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছেন দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি।

 

মরিচা ইউনিয়নের ভুরকা হাটখুলা পাড়া এলাকার মৃত আলিম সরদারের ছেলে উজ্জ্বল সরদার (৪৫) ও তার ভাই রফিকুল সরদারকে মামলার দুই ও তিন নম্বর আসামি করা হয়েছে। কাকন বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই এমন একটি পরিবারের সদস্যদের এই মামলায় আসামি করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী।

 

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উজ্জ্বল সরদার দৌলতপুরে নদীভাঙন রোধে জিওব্যাগ ফেলার ঠিকাদারি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি মরিচা এলাকায় ভাঙনরোধে কাজ করছেন। ওই কাজ বন্ধ বা অন্যের হাতে না দেওয়ায় পরিকল্পিতভাবে তাকে ও তার ভাইকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

 

মামলার দুই নম্বর আসামি উজ্জ্বল সরদার বলেন সংঘর্ষের সময় আমি আমার বাড়িতে ছিলাম। তার সিসিটিভি ফুটেজ রয়েছে। অথচ আমাদের দুই ভাইকে মামলার আসামি করা হয়েছে। কাকন বাহিনীর সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।

 

তিনি আরও বলেন‘আমি একজন ঠিকাদার। দৌলতপুরে নদীভাঙন এলাকায় আমার জিওব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। স্থানীয় সাবেক এক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা সেই কাজ বন্ধ করতে বাদীপক্ষকে দিয়ে আমাদের আসামি করিয়েছেন।

 

এ বিষয়ে মামলার বাদী নিহত আমান মণ্ডলের বাবা মিনহাজ মণ্ডল বলেন, নিহত দুজনের মধ্যে একজন আমার ছেলে, অন্যজন ভাগনে। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত না এমন কয়েকজন ব্যক্তিকে মামলার আসামি করার অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।

 

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ফয়সাল মাহমুদ দৈনিক সময়ের প্রত্যাশাকে বলেন, মামলার তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হবে, তাদের গ্রেফতার করা হবে। আর যারা নির্দোষ, তারা অবশ্যই অব্যাহতি পাবেন। অপরাধীদের ধরতে সকাল থেকে পদ্মা নদীতে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।


প্রিন্ট