ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

ঘুষ ও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন!

মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

- নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম.এ মুহাইমিন আল জিহান।

মোঃ আলম মৃধাঃ

 

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম.এ. মুহাইমিন আল জিহানের বিরুদ্ধে নানাবিধ অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এই সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ গত ১৯ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারের নিকট দাখিল করেছেন মনোহরদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বাংলাদেশ পেশাদার সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল।

 

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ইউএনও এম.এ. মুহাইমিন আল জিহান ২১ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে মনোহরদীতে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন। ওএমএস (খোলা বাজারে বিক্রি) ডিলার নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিটি আবেদনকারীর কাছ থেকে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

 

এছাড়া তিনি খিদিরপুর ইউনিয়নের রামপুর শ্মশানঘাট সংলগ্ন নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ঐ স্থানে প্রায় ১০ কোটি টাকার বালু উত্তোলন ও বিক্রির মাধ্যমে তিনি বিপুল অর্থ আদায় করেছেন বলে জানা যায়। উপজেলার অন্যান্য অবৈধ বালু উত্তোলন পয়েন্ট থেকেও ইউএনও নিয়মিত মাসোহারা গ্রহণ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

 

অভিযোগে আরও বলা হয়, চলতি বছর তিনি সরকারি নিয়মনীতি ও নিলাম প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে বীরগাঁও বাজারের ইজারা বিএনপির একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠীকে দিয়েছেন, যার ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদে বিতর্কিত, ভুয়া সনদধারী ও নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 

মনোহরদী পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ইউএনও পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যেকোনো কাজ সম্পাদনের আগে মোট ব্যয়ের ৩ শতাংশ হারে টাকা প্রদানের নির্দেশ দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, যার ভিডিও প্রমাণ রয়েছে বলে দাবিও করেন অভিযোগকারী।

 

এছাড়া তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদের প্রশাসক এবং পৌরসভার প্রশাসক—এই তিন পদে থেকে আলাদা আলাদা তিনটি সরকারি গাড়ির জন্য জ্বালানি তেলের বিল উত্তোলন করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তাছাড়া তার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছন্দা’র মাধ্যমে উপজেলার সব ইটভাটা থেকে নিয়মিত মাসোহারা তোলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

 

অভিযোগকারী কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল বলেন, “একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হয়েও এম.এ. মুহাইমিন আল জিহান প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে দুর্নীতি ও অনিয়মে লিপ্ত হয়েছেন। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং জনগণের আস্থা নষ্ট হচ্ছে।”

 

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারি ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ এ ভিডিও পাঠালে তিনি কোন উত্তর করেননি। তার এই নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে তিনি দোষী।

 

অভিযোগকারী বিভাগীয় কমিশনারের কাছে এসব অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত ও অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শার্শায় সমাবেশে মফিকুল হাসান তৃপ্তিঃ -ক্ষমতায় এলে শিক্ষিত যুবকদের চাকরি ও বেকারভাতা দেবে বিএনপি

error: Content is protected !!

ঘুষ ও দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন!

মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

আপডেট টাইম : ০৮:৫৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
মোঃ আলম মৃধা, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি :

মোঃ আলম মৃধাঃ

 

নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম.এ. মুহাইমিন আল জিহানের বিরুদ্ধে নানাবিধ অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এই সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ গত ১৯ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনারের নিকট দাখিল করেছেন মনোহরদী উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বাংলাদেশ পেশাদার সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল।

 

অভিযোগপত্রে বলা হয়, ইউএনও এম.এ. মুহাইমিন আল জিহান ২১ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে মনোহরদীতে যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত রয়েছেন। ওএমএস (খোলা বাজারে বিক্রি) ডিলার নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিটি আবেদনকারীর কাছ থেকে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।

 

এছাড়া তিনি খিদিরপুর ইউনিয়নের রামপুর শ্মশানঘাট সংলগ্ন নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ঐ স্থানে প্রায় ১০ কোটি টাকার বালু উত্তোলন ও বিক্রির মাধ্যমে তিনি বিপুল অর্থ আদায় করেছেন বলে জানা যায়। উপজেলার অন্যান্য অবৈধ বালু উত্তোলন পয়েন্ট থেকেও ইউএনও নিয়মিত মাসোহারা গ্রহণ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

 

অভিযোগে আরও বলা হয়, চলতি বছর তিনি সরকারি নিয়মনীতি ও নিলাম প্রক্রিয়া উপেক্ষা করে বীরগাঁও বাজারের ইজারা বিএনপির একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠীকে দিয়েছেন, যার ফলে সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পরিষদে বিতর্কিত, ভুয়া সনদধারী ও নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করে প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

 

মনোহরদী পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ইউএনও পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যেকোনো কাজ সম্পাদনের আগে মোট ব্যয়ের ৩ শতাংশ হারে টাকা প্রদানের নির্দেশ দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, যার ভিডিও প্রমাণ রয়েছে বলে দাবিও করেন অভিযোগকারী।

 

এছাড়া তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদের প্রশাসক এবং পৌরসভার প্রশাসক—এই তিন পদে থেকে আলাদা আলাদা তিনটি সরকারি গাড়ির জন্য জ্বালানি তেলের বিল উত্তোলন করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তাছাড়া তার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছন্দা’র মাধ্যমে উপজেলার সব ইটভাটা থেকে নিয়মিত মাসোহারা তোলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

 

অভিযোগকারী কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল বলেন, “একজন দায়িত্বশীল সরকারি কর্মকর্তা হয়েও এম.এ. মুহাইমিন আল জিহান প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করে দুর্নীতি ও অনিয়মে লিপ্ত হয়েছেন। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে এবং জনগণের আস্থা নষ্ট হচ্ছে।”

 

এ বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সরকারি ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ এ ভিডিও পাঠালে তিনি কোন উত্তর করেননি। তার এই নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে তিনি দোষী।

 

অভিযোগকারী বিভাগীয় কমিশনারের কাছে এসব অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত ও অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।


প্রিন্ট