ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

ব্যানার-সাইনবোর্ডে ঢেকে যাচ্ছে হিলির সবুজ গাছঃ -নীরব প্রশাসন

মোঃ ফখরুজ্জামান চৌধুরী কৌশিকঃ

 

দিনাজপুরের হিলি শহরের বিভিন্ন সড়কপথে গাছের গায়ে ঝুলছে অসংখ্য সাইনবোর্ড, ব্যানার ও বিলবোর্ড। উপজেলা চত্বর, সরকারি কলেজ এলাকা, হিলি বাজার, রেলস্টেশনসহ শহরের বিভিন্ন মোড় ও সড়কে চোখে পড়ে এই চিত্র।
জীবন্ত গাছে নির্বিচারে পেরেক ঠুকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, প্রাইভেট হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও চিকিৎসকের সাইনবোর্ড ঝুলানো হচ্ছে। এতে গাছের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশও। স্থানীয়দের ভাষায়—গাছগুলো যেন ‘পেরেক সন্ত্রাসের’ শিকার।

 

পথচারী রুহুল আমিন বলেন,প্রতিদিন এই পথে চলাচল করি, দেখি সব গাছে ব্যানার-পোস্টার ঝুলছে। দেখতে খুব খারাপ লাগে। এত সুন্দর গাছগুলো এখন যেন বিজ্ঞাপন ঝুলানোর বোর্ডে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি এগুলো সরিয়ে দেয়, শহরটা অনেক সুন্দর লাগবে।

 

স্থানীয় ব্যবসায়ী আরমান আলী প্রধান বলেন,এভাবে গাছের গায়ে পোস্টার বা সাইনবোর্ড ঝুলানো শুধু পরিবেশের ক্ষতি করছে না, শহরের সৌন্দর্যও নষ্ট করছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এসব অপসারণ করা। গণমাধ্যমকর্মী মো. সোহেল রানা বলেন, গাছে পেরেক ঠোকা হলে গাছের অভ্যন্তরীণ কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এতে গাছ দুর্বল হয়ে ধীরে ধীরে মারা যায়। প্রকৃতির ক্ষতি হলেও কেউ তা নিয়ে ভাবছে না।

 

হাকিমপুর হিলি মহিলা কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন,গাছ কোনো প্রচারণার মাধ্যম নয়। নির্দিষ্ট স্থানে সাইনবোর্ড ব্যবহার করা উচিত। পেরেকের কারণে গাছ রোগে আক্রান্ত হয় এবং স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এখনই প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন ।

বিষয়টি নিয়ে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন,গাছে সাইনবোর্ড ঝোলানো আইনবিরোধী। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। খুব শিগগিরই অভিযান চালিয়ে বেআইনি সাইনবোর্ডগুলো অপসারণ করা হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সুশীল সমাজের অভিযোগ, নিয়মিত তদারকির অভাবে শহরের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গাছে ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার টাঙানো হচ্ছে। তারা বলছেন, গাছ শুধু শহরের সৌন্দর্যের অংশ নয়, এটি জীবনেরও অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই প্রশাসন ও নাগরিকদের একসাথে সচেতন হয়ে প্রকৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসা এখন সময়ের দাবি।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শার্শায় সমাবেশে মফিকুল হাসান তৃপ্তিঃ -ক্ষমতায় এলে শিক্ষিত যুবকদের চাকরি ও বেকারভাতা দেবে বিএনপি

error: Content is protected !!

ব্যানার-সাইনবোর্ডে ঢেকে যাচ্ছে হিলির সবুজ গাছঃ -নীরব প্রশাসন

আপডেট টাইম : ১০:১০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫
মোঃ ফখরুজ্জামান চৌধুরী কৌশিক, হাকিমপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি :

মোঃ ফখরুজ্জামান চৌধুরী কৌশিকঃ

 

দিনাজপুরের হিলি শহরের বিভিন্ন সড়কপথে গাছের গায়ে ঝুলছে অসংখ্য সাইনবোর্ড, ব্যানার ও বিলবোর্ড। উপজেলা চত্বর, সরকারি কলেজ এলাকা, হিলি বাজার, রেলস্টেশনসহ শহরের বিভিন্ন মোড় ও সড়কে চোখে পড়ে এই চিত্র।
জীবন্ত গাছে নির্বিচারে পেরেক ঠুকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, প্রাইভেট হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও চিকিৎসকের সাইনবোর্ড ঝুলানো হচ্ছে। এতে গাছের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশও। স্থানীয়দের ভাষায়—গাছগুলো যেন ‘পেরেক সন্ত্রাসের’ শিকার।

 

পথচারী রুহুল আমিন বলেন,প্রতিদিন এই পথে চলাচল করি, দেখি সব গাছে ব্যানার-পোস্টার ঝুলছে। দেখতে খুব খারাপ লাগে। এত সুন্দর গাছগুলো এখন যেন বিজ্ঞাপন ঝুলানোর বোর্ডে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ যদি এগুলো সরিয়ে দেয়, শহরটা অনেক সুন্দর লাগবে।

 

স্থানীয় ব্যবসায়ী আরমান আলী প্রধান বলেন,এভাবে গাছের গায়ে পোস্টার বা সাইনবোর্ড ঝুলানো শুধু পরিবেশের ক্ষতি করছে না, শহরের সৌন্দর্যও নষ্ট করছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এসব অপসারণ করা। গণমাধ্যমকর্মী মো. সোহেল রানা বলেন, গাছে পেরেক ঠোকা হলে গাছের অভ্যন্তরীণ কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এতে গাছ দুর্বল হয়ে ধীরে ধীরে মারা যায়। প্রকৃতির ক্ষতি হলেও কেউ তা নিয়ে ভাবছে না।

 

হাকিমপুর হিলি মহিলা কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন,গাছ কোনো প্রচারণার মাধ্যম নয়। নির্দিষ্ট স্থানে সাইনবোর্ড ব্যবহার করা উচিত। পেরেকের কারণে গাছ রোগে আক্রান্ত হয় এবং স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। এখনই প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন ।

বিষয়টি নিয়ে হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন,গাছে সাইনবোর্ড ঝোলানো আইনবিরোধী। বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। খুব শিগগিরই অভিযান চালিয়ে বেআইনি সাইনবোর্ডগুলো অপসারণ করা হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

সুশীল সমাজের অভিযোগ, নিয়মিত তদারকির অভাবে শহরের বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গাছে ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার টাঙানো হচ্ছে। তারা বলছেন, গাছ শুধু শহরের সৌন্দর্যের অংশ নয়, এটি জীবনেরও অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাই প্রশাসন ও নাগরিকদের একসাথে সচেতন হয়ে প্রকৃতি রক্ষায় এগিয়ে আসা এখন সময়ের দাবি।


প্রিন্ট