ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

তানোরের ভিডাব্লিউবি কার্ড নিয়ে বাণিজ্যে হতদরিদ্ররা বিক্ষুব্ধ

আলিফ হোসেনঃ

রাজশাহীর তানোরের বাধাইড় ইউনিয়নে (ইউপি) ভিডাব্লিউবি (দুঃস্থ মাতা) তালিকা প্রণয়ন ও কার্ড বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।স্থানীয়রা জানান,সংশ্লিষ্ট বিভাগের একশ্রেণীর কর্মকর্তার যোগসাজশে অসাধু জনপ্রতিনিধিরা আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে অবস্থা সম্পন্ন বিত্তবানদের কার্ড দিয়েছেন।

 

এতে বাদ পড়েছে সমাজের প্রকৃত সুবিধা বঞ্চিত দুঃস্থ মা (নারী)।এনিয়ে সুবিধা বঞ্চিত হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ-অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।অন্যদিকে সরকারের নেয়া মহতী উদ্যোগ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে। ভিডাব্লিউবি কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নাই,তবে তানোরে কর্মসুচির বাস্তবায়ন নিয়ে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।সুবিধা বঞ্চিত নারীরা একমুঠো চালের জন্য হা-হুতাশ করছে,অথচ অধিকার কেড়ে নিয়ে বিত্তবান ঘরের নারীরা এসব চাল তুলে নিয়ে সেখানেই বিক্রি করছে।
সচেতন মহলের ভাষ্য,যারা সমাজের পিছিয়ে পড়া সুবিধা বঞ্চিতদের অধিকার নিয়ে ছিনি করছে তারা অপরাধী। তাই যারা উপকারভোগী নির্বাচন ও কার্ড বিতরণ করেছেন। এবং যারা কার্ড নিযেছেন তারা সমান অপরাধী।তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

 

জানা গেছে, ভিজিডি (VGD) হলো “ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট” (Vulnerable Women Benefit) বা “ঝুঁকিপূর্ণ মহিলা উন্নয়ন” কর্মসূচির একটি পুরানো নাম। এই কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র ও দুস্থ নারীদের খাদ্য সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উন্নয়নমূলক সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে এটি এখন ভিডব্লিউবি (VWB) নামে পরিচিতি লাভ করেছে। ২০১৫ সাল থেকে ভিজিডি (Vulnerable Group Development) নামটি পরিবর্তন করে “ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট” (Vulnerable Women Benefit) বা ভিডব্লিউবি (VWB) করা হয়েছে।

 

এদিকে উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নে (ইউপি) ভিডাব্লিউবি কর্মসূচির তালিকা প্রণয়ন ও
কার্ড বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এঘটনায় স্থানীয়বাসিন্দা হুমায়ন কবির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

 

অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকার অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এই বিশেষ চাউল বরাদ্দ দিলেও ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিতরণের সময় সম্পদশালী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এতে প্রকৃত দরিদ্ররা বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, মাষ্টার রোল নম্বর-১৬ মোসাঃ মাহমুদা খাতুন।

 

(জাতীয় পরিচয়পত্র নং- (১৯৮৯৮১১৯৪২৭৭৬৪৪৩০৩)। স্বামী মুকুল, যিনি কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) কেওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। অথচ বাধাইড় ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ভিডাব্লিউবি কার্ডের সুবিধাভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন।অভিযোগকারীর দাবি, মাহমুদা খাতুন বিত্তশালী পরিবারের সদস্য, কিন্ত্ত তিনি অসহায়দের প্রাপ্য বরাদ্দ থেকে অন্যায়ভাবে সুবিধা নিচ্ছেন। এদিকে শুধু বাধাইড় ইউপির মাহমুদা খাতুন নয় অন্যন্য ইউপিতেও একই চিত্র ফুটে উঠেছে।

 

এ বিষয়ে মাহমুদা খাতুনের স্বামী ও মুকুল বলেন, তার স্ত্রীর বাপের বাড়ি বাধাইড় ইউনিয়নে। তাই ওখান থেকে চাউল কার্ড করা হয়েছে। এতে কোনো অনিয়ম নেই। আর ছোট এই ঘটনা নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি কিসের, তিনি বলেন, এসব ভুল ধরলে তো উপজেলার বেশিরভাগ কার্ড বাদ হয়ে যাবে।

 

অভিযোগকারী হুমায়ন কবীর দাবি করেন, প্রশাসন তদন্ত করলে আরও অনেক বিত্তশালী পরিবারের নাম সামনে আসবে, যারা অবৈধভাবে এই সুবিধা পাচ্ছেন।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার(ইউএনও)দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শার্শায় সমাবেশে মফিকুল হাসান তৃপ্তিঃ -ক্ষমতায় এলে শিক্ষিত যুবকদের চাকরি ও বেকারভাতা দেবে বিএনপি

error: Content is protected !!

তানোরের ভিডাব্লিউবি কার্ড নিয়ে বাণিজ্যে হতদরিদ্ররা বিক্ষুব্ধ

আপডেট টাইম : ১২:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
আলিফ হোসেন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি :

আলিফ হোসেনঃ

রাজশাহীর তানোরের বাধাইড় ইউনিয়নে (ইউপি) ভিডাব্লিউবি (দুঃস্থ মাতা) তালিকা প্রণয়ন ও কার্ড বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।স্থানীয়রা জানান,সংশ্লিষ্ট বিভাগের একশ্রেণীর কর্মকর্তার যোগসাজশে অসাধু জনপ্রতিনিধিরা আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে অবস্থা সম্পন্ন বিত্তবানদের কার্ড দিয়েছেন।

 

এতে বাদ পড়েছে সমাজের প্রকৃত সুবিধা বঞ্চিত দুঃস্থ মা (নারী)।এনিয়ে সুবিধা বঞ্চিত হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ-অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।অন্যদিকে সরকারের নেয়া মহতী উদ্যোগ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে। ভিডাব্লিউবি কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নাই,তবে তানোরে কর্মসুচির বাস্তবায়ন নিয়ে গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।সুবিধা বঞ্চিত নারীরা একমুঠো চালের জন্য হা-হুতাশ করছে,অথচ অধিকার কেড়ে নিয়ে বিত্তবান ঘরের নারীরা এসব চাল তুলে নিয়ে সেখানেই বিক্রি করছে।
সচেতন মহলের ভাষ্য,যারা সমাজের পিছিয়ে পড়া সুবিধা বঞ্চিতদের অধিকার নিয়ে ছিনি করছে তারা অপরাধী। তাই যারা উপকারভোগী নির্বাচন ও কার্ড বিতরণ করেছেন। এবং যারা কার্ড নিযেছেন তারা সমান অপরাধী।তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি সময়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে।

 

জানা গেছে, ভিজিডি (VGD) হলো “ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট” (Vulnerable Women Benefit) বা “ঝুঁকিপূর্ণ মহিলা উন্নয়ন” কর্মসূচির একটি পুরানো নাম। এই কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র ও দুস্থ নারীদের খাদ্য সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উন্নয়নমূলক সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে এটি এখন ভিডব্লিউবি (VWB) নামে পরিচিতি লাভ করেছে। ২০১৫ সাল থেকে ভিজিডি (Vulnerable Group Development) নামটি পরিবর্তন করে “ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট” (Vulnerable Women Benefit) বা ভিডব্লিউবি (VWB) করা হয়েছে।

 

এদিকে উপজেলার বাধাইড় ইউনিয়নে (ইউপি) ভিডাব্লিউবি কর্মসূচির তালিকা প্রণয়ন ও
কার্ড বিতরণে অনিয়ম-দুর্নীতির গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এঘটনায় স্থানীয়বাসিন্দা হুমায়ন কবির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

 

অভিযোগে বলা হয়েছে, সরকার অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এই বিশেষ চাউল বরাদ্দ দিলেও ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিতরণের সময় সম্পদশালী ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এতে প্রকৃত দরিদ্ররা বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, মাষ্টার রোল নম্বর-১৬ মোসাঃ মাহমুদা খাতুন।

 

(জাতীয় পরিচয়পত্র নং- (১৯৮৯৮১১৯৪২৭৭৬৪৪৩০৩)। স্বামী মুকুল, যিনি কলমা ইউনিয়নের (ইউপি) কেওয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। অথচ বাধাইড় ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ভিডাব্লিউবি কার্ডের সুবিধাভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন।অভিযোগকারীর দাবি, মাহমুদা খাতুন বিত্তশালী পরিবারের সদস্য, কিন্ত্ত তিনি অসহায়দের প্রাপ্য বরাদ্দ থেকে অন্যায়ভাবে সুবিধা নিচ্ছেন। এদিকে শুধু বাধাইড় ইউপির মাহমুদা খাতুন নয় অন্যন্য ইউপিতেও একই চিত্র ফুটে উঠেছে।

 

এ বিষয়ে মাহমুদা খাতুনের স্বামী ও মুকুল বলেন, তার স্ত্রীর বাপের বাড়ি বাধাইড় ইউনিয়নে। তাই ওখান থেকে চাউল কার্ড করা হয়েছে। এতে কোনো অনিয়ম নেই। আর ছোট এই ঘটনা নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি কিসের, তিনি বলেন, এসব ভুল ধরলে তো উপজেলার বেশিরভাগ কার্ড বাদ হয়ে যাবে।

 

অভিযোগকারী হুমায়ন কবীর দাবি করেন, প্রশাসন তদন্ত করলে আরও অনেক বিত্তশালী পরিবারের নাম সামনে আসবে, যারা অবৈধভাবে এই সুবিধা পাচ্ছেন।

 

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার(ইউএনও)দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


প্রিন্ট