ঢাকা , রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন। Hotline- +880 9617 179084

ঝিনাইদহের এসআই মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. লিয়াকত শেখ গ্রেফতার

মানিক কুমার দাসঃ

 

ঝিনাইদহের এসআই মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. লিয়াকত শেখ কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এ উপলক্ষে তাদের‌ গোয়ালচামট কার্যালয়ে ‌ আজ মঙ্গলবার বিকেলে ‌ এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সাংবাদিকদের ‌ বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেন সংস্থাটির ‌ ‌ এএসপি ‌ মিজানুর রহমান ‌।

এ সময় সংস্থার ‌ ‌ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ‌র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১০ ও র‍্যাব-৪ এর একটি বিশেষ যৌথ অভিযানে ঝিনাইদহ জেলার বহুল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় আদালত কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও দীর্ঘদিন পলাতক থাকা আসামি মো. লিয়াকত শেখ লিয়া (২৮), পিতা- মো. রহমত শেখ, সাং- নিমতলা, থানা- রাজবাড়ী সদর, জেলা- রাজবাড়ী’কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট রাতে ঝিনাইদহ জেলা শহরের বাস মালিক সমিতি অফিসের সামনে একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে একটি পরিত্যক্ত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তদন্তে জানা যায়, উক্ত মোটরসাইকেলটি ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিরাজুল ইসলাম এর মালিকানাধীন। তবে ঘটনাস্থলে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন এবং তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়, যা বিষয়টিকে আরও রহস্যজনক করে তোলে।

 

পরবর্তী অনুসন্ধানে জানা যায়, ওইদিন সন্ধ্যায় ইফতারের পর এসআই মিরাজুল ইসলাম প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কাগজপত্র, সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত পিস্তল, গুলি ও ম্যাগাজিনসহ নিজ মোটরসাইকেলে করে কর্মস্থল ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু কর্মস্থলে তিনি আর পৌঁছাননি এবং এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন।

 

পরদিন, ২৪ আগস্ট সকালে ঝিনাইদহ ভেটেরিনারি কলেজের পূর্ব পাশের একটি পানি ভর্তি ডোবা থেকে পুলিশ তাঁর পোশাক পরিহিত হাত-পা বাঁধা মৃতদেহ উদ্ধার করে। সন্ত্রাসীরা তার কাছে থাকা অস্ত্র, গুলি, মোটরসাইকেল ও অন্যান্য সরকারি মালামাল ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

 

দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২৫ সালের ৭ জুলাই ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, প্রথম আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত মামলার আসামি মো. লিয়াকত শেখ লিয়া-কে দন্ডবিধির ৩৯৬ ধারা অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। র‍্যাবের গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রমের মাধ্যমে পলাতক এই সাজাপ্রাপ্ত আসামি লিয়াকত হোসেন শেখ লিয়া (২৮)’কে চিহ্নিত ও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।

 

অদ্য মঙ্গলবার ‌ দিবাগত রাত অনুমান ০২.৩০ মিনিটে ‌র‍্যাব-১০ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এবং র‍্যাব-৪ এর সহযোগীতায় ঢাকা জেলার ধামরাই থানাধীন চরডাউটিয়া এলাকা হতে উক্ত মৃত্যুদন্ড সাজা পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি লিয়াকত শেখ লিয়া (২৮)’কে গ্রেফতার করে।

 

গ্রেফতারকৃত আসামি লিয়াকত শেখ লিয়া (২৮) এর বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতি মামলা সহ ০৬ টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে ‌ পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ‌ ফরিদপুরের প্রেসক্লাবের সদস্য বৃন্দ ‌ এবং ‌ বিভিন্ন প্রিন্ট ‌ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ‌ সাংবাদিকবৃন্দ ‌ উপস্থিত ছিলেন।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম কে মনোনয়ন দিলে বিপুল ভোটে বিএনপি’র বিজয় হবে

error: Content is protected !!

ঝিনাইদহের এসআই মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. লিয়াকত শেখ গ্রেফতার

আপডেট টাইম : ০৬:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ অক্টোবর ২০২৫
মানিক কুমার দাস, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি :

মানিক কুমার দাসঃ

 

ঝিনাইদহের এসআই মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি মো. লিয়াকত শেখ কে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এ উপলক্ষে তাদের‌ গোয়ালচামট কার্যালয়ে ‌ আজ মঙ্গলবার বিকেলে ‌ এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সাংবাদিকদের ‌ বিভিন্ন তথ্য প্রদান করেন সংস্থাটির ‌ ‌ এএসপি ‌ মিজানুর রহমান ‌।

এ সময় সংস্থার ‌ ‌ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় ‌র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-১০ ও র‍্যাব-৪ এর একটি বিশেষ যৌথ অভিযানে ঝিনাইদহ জেলার বহুল আলোচিত পুলিশ কর্মকর্তা এসআই মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় আদালত কর্তৃক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও দীর্ঘদিন পলাতক থাকা আসামি মো. লিয়াকত শেখ লিয়া (২৮), পিতা- মো. রহমত শেখ, সাং- নিমতলা, থানা- রাজবাড়ী সদর, জেলা- রাজবাড়ী’কে গ্রেফতার করা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট রাতে ঝিনাইদহ জেলা শহরের বাস মালিক সমিতি অফিসের সামনে একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে একটি পরিত্যক্ত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তদন্তে জানা যায়, উক্ত মোটরসাইকেলটি ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিরাজুল ইসলাম এর মালিকানাধীন। তবে ঘটনাস্থলে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন এবং তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়, যা বিষয়টিকে আরও রহস্যজনক করে তোলে।

 

পরবর্তী অনুসন্ধানে জানা যায়, ওইদিন সন্ধ্যায় ইফতারের পর এসআই মিরাজুল ইসলাম প্রয়োজনীয় দাপ্তরিক কাগজপত্র, সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত পিস্তল, গুলি ও ম্যাগাজিনসহ নিজ মোটরসাইকেলে করে কর্মস্থল ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু কর্মস্থলে তিনি আর পৌঁছাননি এবং এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন।

 

পরদিন, ২৪ আগস্ট সকালে ঝিনাইদহ ভেটেরিনারি কলেজের পূর্ব পাশের একটি পানি ভর্তি ডোবা থেকে পুলিশ তাঁর পোশাক পরিহিত হাত-পা বাঁধা মৃতদেহ উদ্ধার করে। সন্ত্রাসীরা তার কাছে থাকা অস্ত্র, গুলি, মোটরসাইকেল ও অন্যান্য সরকারি মালামাল ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

 

দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০২৫ সালের ৭ জুলাই ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ, প্রথম আদালত মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত মামলার আসামি মো. লিয়াকত শেখ লিয়া-কে দন্ডবিধির ৩৯৬ ধারা অনুযায়ী দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। র‍্যাবের গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রমের মাধ্যমে পলাতক এই সাজাপ্রাপ্ত আসামি লিয়াকত হোসেন শেখ লিয়া (২৮)’কে চিহ্নিত ও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।

 

অদ্য মঙ্গলবার ‌ দিবাগত রাত অনুমান ০২.৩০ মিনিটে ‌র‍্যাব-১০ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় এবং র‍্যাব-৪ এর সহযোগীতায় ঢাকা জেলার ধামরাই থানাধীন চরডাউটিয়া এলাকা হতে উক্ত মৃত্যুদন্ড সাজা পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি লিয়াকত শেখ লিয়া (২৮)’কে গ্রেফতার করে।

 

গ্রেফতারকৃত আসামি লিয়াকত শেখ লিয়া (২৮) এর বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতি মামলা সহ ০৬ টি মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামিকে ‌ পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ‌ ফরিদপুরের প্রেসক্লাবের সদস্য বৃন্দ ‌ এবং ‌ বিভিন্ন প্রিন্ট ‌ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ‌ সাংবাদিকবৃন্দ ‌ উপস্থিত ছিলেন।


প্রিন্ট